আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম পদোন্নতি পেলেন না- হাকিকুল ইসলাম খোকন .সিনিয়র সংবাদদাতা:- প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে পদোন্নতি পেয়ে উপ-সচিব হয়েছেন ৩৫৮ জন কর্মকর্তা। দুটি প্রজ্ঞাপনে ৩৩৭ জনকে পদোন্নতি পেয়েছেন। বাকি ২১ জন কর্মকর্তা শিক্ষা ছুটিতে থাকায় তাদের নামে প্রজ্ঞাপন জারি না হলেও নিয়মানুযায়ী প্রত্যেকে চিঠি দিয়ে জানানো হবে। সারোয়ার আলম বিসিএস ২৭তম ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারে ২০০৮ সালের নভেম্বরে যোগ দেন। ২০১৪ সালের ১ জুন সিনিয়র সহকারী সচিব পদে পদোন্নতি পান। এ পদে ১২ বছরের বেশি সময় ধরে কর্মরত। যা পদোন্নতির শর্ত পূরণ করে। তার বিরুদ্ধে কোনো বিভাগীয় অভিযোগ নেই। এরপরও সারোয়ার আলমের পদোন্নতি না হওয়ায় অনেকে হতাশ প্রকাশ করেছেন। বিসিএস ২৭তম ব্যাচের সারোয়ার আলমসহ প্রায় ৩০ কর্মকর্তা পদোন্নতি পাননি। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ (এপিডি) অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আনিছুর রহমান মিঞা বলেন, যারা যোগ্য সকলেই পদোন্নতি পেয়েছেন। সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড সবকিছু বিশ্লেষণ করে যোগ্যদের পদোন্নতি দিয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আলিয়া মেহের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ২০২০ সালের ৯ অক্টোবর র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে বদলি করা হয়। সারোয়ার আলম ২০১৫ সাল থেকে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি খাদ্যপণ্যে ভেজাল বিরোধী আন্দোলন ও দুর্নীতি বিরোধী বিশেষ অভিযানের সময় ব্যাপক সাহসী ভূমিকা রেখে আলোচিত হয়েছেন। যুবলীগ নেতা ক্যাসিনো ইসমাঈল হোসেন সম্রাটসহ ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন বড় নেতাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে সারা দেশে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার এ কৃতি সন্তান। সর্বশেষ হাজী সেলিমপুত্র ইরফান সেলিমকে মদ্যপ অবস্থায় গ্রেফতার ছিল সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা। ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন জারির পর অনেকেই আমাকে ফোন দিয়ে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। আমার পদোন্নতি হয়নি অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না বলে আমাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তারা অবাক হয়েছেন। তবে এটাই বাস্তবতা। ত্র কথাটা মনে করিয়ে দেয় অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ বলেছেন, ” আজকাল আমাদের দেশে দেখবেন, ভালো মানুষেরা বিচ্ছিন্ন। ভালো মানুষদের মধ্যে যোগাযোগ নেই। তাঁরা একা, পরস্পরকে খুঁজে পান না। কিন্তু যারা খারাপ, তারা খুবই সঙ্ঘবদ্ধ। এক শয়তান হুক্কা হুয়া দিলে মুহূর্তেই হাজার শয়তান কেয়া হুয়া! কেয়া হুয়া! করতে করতে এগিয়ে আসবে। আলোচিত অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর সিন্ডিকেট ভাঙতে এবং দুর্নীতি দূর করতে চেয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। আর তাতেই সরকার অস্বস্তিতে পড়েছেন। তাই তাঁকে তিরস্কার নামের লঘুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সরকারি কর্মচারী চুরি করলে, ঘুষ খেলে, অর্থ পাচার করলে কোন দন্ড হয় না। দন্ড হয় ভাল কাজ করতে গেলে।ত্রই সারোয়ার আলমকে আমি বিদেশে বসে বিভিন্ন পত্রিকায় দেখিছি ত্রবং ত্রকজন বলেছেন এই সারোয়ার আলমকে আমি খুব কাছে থেকে দেখেছি। ২০০৮ সালের নভেম্বরে প্রশাসন ক্যাডারে যোগদানের আগে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিসিএসআইআর- এ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে প্রায় দুই বছর কর্মরত ছিলেন। তিনি ছিলেন আমার দেখা অত্যন্ত মেধাবী একজন কর্মকর্তা। তিনি যেমন ছিলেন সৎ, তেমনি সাহসী এবং দেশপ্রেমিক কর্মকর্তা।সারোয়ার আলম আক্ষেপ করে বলেছেন, “চাকুরীজীবনে যে সব কর্মকর্তা-কর্মচারী অন্যায়, অনিয়মের বিরুদ্ধে লড়ছেন তাদের বেশিরভাগই চাকরিজীবনে পদে পদে বঞ্চিত ও নিগৃহীত হয়েছেন। এদেশে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াটাই অন্যায়।” মাহবুব কবীর ও সারোয়ার আলম এর মত অভিজ্ঞ, সৎ, নিষ্ঠাবান ও দেশপ্রেমিক কর্মকর্তারা ভুলেই গেছেন যে, বর্তমানে পদলেহন পদোন্নতির অন্যতম প্রধান শর্ত। যে যত বেশি পদলেহন করবে, সে ততো বেশি উন্নতির শিখরে আরোহন করবে। এই হচ্ছে বর্তমান বাস্তবতা।
Leave a Reply