1. [email protected] : দৈনিক বিজয়ের বানী : দৈনিক বিজয়ের বানী
  2. [email protected] : Hasan :
  3. [email protected] : dev : dev
কে পাবেন ‘জানাডু ২.০’ বাড়িটি -বিল না মেলিন্ডা - dainikbijoyerbani.com
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৫ অপরাহ্ন
ad

কে পাবেন ‘জানাডু ২.০’ বাড়িটি -বিল না মেলিন্ডা

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৮ মে, ২০২১
  • ১১৩ Time View

কে পাবেন ‘জানাডু ২.০’ বাড়িটি -বিল না মেলিন্ডা- হাকিকুল ইসলাম খোকন ,যুক্তরাষ্ট্র সিনিয়র প্রতিনিধিঃবিশ্ব মিডিয়ায় গত কয়েকদিন ধরে অন্যতম আলোচিত বিষয় বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের একজন বিল গেটস ও মেলিন্ডা গেটসের বিচ্ছেদ।

দীর্ঘ ২৭ বছরের দাম্পত্য জীবনের ভাঙ্গণের পর শুরু সম্পদ ভাগাভাগির হিসেব।১৯৯৪ সালে গাঁটছড়া বাঁধেন বিল গেটস ও মেলিন্ডা গেটস। সে যেন ছিল মেলিন্ডার জন্য এক অদ্ভুত অনুভূতি। সিয়াটলে বিল গেটসের বাড়িতে প্রবেশ করে মেলিন্ডার মনে হয়েছিল, স্বামীকে নিয়ে যেন ঢুকলেন এক ভিডিও গেমের জগতে। চমৎকার বিলাসবহুল বাড়িটি যতটা ব্যাচেলর এক প্রযুক্তির জাদুকরের জন্য মানানসই ছিল, ঠিক ততটাই বেমানান ছিল নব দম্পতির জন্য। ছয় মাস পর পছন্দসই ইন্টেরিয়র ডিজাইনার দিয়ে বাড়িটি মনের মতো করে গড়ে নিয়েছিলেন মেলিন্ডা। ২০০৮ সালে এক সাক্ষাৎকারে এমনভাবে গৃহ প্রবেশের বর্ণনা দিয়েছিলেন মেলিন্ডা।
তবে গত সপ্তাহে দুজনের এক হওয়া সবকিছুই যেন আলাদা হয়ে গেছে বিচ্ছেদের ঘোষণায়। ২৭ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টেনেছেন তাঁরা। বিল গেটস ও মেলিন্ডা গেটসের বিবাহবিচ্ছেদের এ ঘোষণা শুনে বিশ্লেষকেরা লেগে পড়েছেন বিভিন্ন বিষয়ের ওপর এর প্রভাব কতটা পড়বে, তা নির্ণয়ে। কেউ মাথা ঘামাচ্ছেন তাঁদের জনহিতকর কার্যক্রম নিয়ে, কেউবা প্রযুক্তি খাত নিয়ে। ব্যাপক টিকা কর্মসূচিতে জড়িত ছিলেন এই দম্পতি। তার ভবিষ্যৎ কী, এ নিয়েও ভাবছেন স্বাস্থ্য খাতের বিশ্লেষকেরা। তবে অনেকে কেবল ভাবছেন সিয়াটলে অবস্থিত তাঁদের লেক ফ্রন্টের ওটি বাড়িটি কে পাবেন, তা নিয়ে। যার বর্তমান মূল্য ১৩ কোটি ১০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১ হাজার ১০২ কোটি টাকা।
মার্কিন সাময়িকী ‘ফোর্বস’–এর হিসেবে সম্প্রতি সাবেক হয়ে যাওয়া এই দম্পতি প্রায় ১২৪ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক। বিচ্ছেদের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা অবশ্য তাঁদের দাতব্য ফাউন্ডেশনের বিষয়ে জানিয়ে দিয়েছেন। বর্তমানের মতো করেই চলবে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা ফাউন্ডেশন। দুজনেই বর্তমান দায়িত্ব কো–চেয়ারম্যান হিসেবে বহাল থাকবেন। তবে তাঁদের বিচ্ছেদ চুক্তি কত হচ্ছে, সে বিষয়ে কিছুই বলেননি তাঁরা।
এখন জনমনে প্রশ্ন, সিয়াটলে লেক ওয়াশিংটনের তীরে মেডিনা শহরে বিল গেটসের ৬৬ হাজার বর্গফুটের বিশাল বাড়িটি পাচ্ছেন কে?
বিল গেটসের এ বাড়ি যেন সাধারণের ধারণার একেবারে বাইরে। ১৯৮৮ সালে ২০ লাখ ডলারের বিনিময়ে ওয়াশিংটন এস্টেট কেনেন গেটস। এ ছাড়া আশপাশের এলাকা কিনে নিতে গেটস কে আরও ১ কোটি ৪০ লাখ ডলার খরচ করতে হয়েছে। দীর্ঘ সাত বছর ধরে একটু একটু করে গড়ে ওঠে তাঁর স্বপ্নের বাসভবন। এ বাড়ির জন্য সরকারকে বছরে মোটা অঙ্কের কর দেন বিল গেটস।
১৯৪১ সালে অরসন ওয়েলস পরিচালিত মার্কিন নাট্য চলচ্চিত্র ‘সিটিজেন কেইন’ মুক্তি পেয়েছিল। অসম্ভব জনপ্রিয় ওই চলচ্চিত্রের মূল চরিত্র চার্লস ফসটারের কাল্পনিক বাড়ির নাম ছিল ‘জানাডু’। বিল গেটস তাঁর জীবনী গ্রন্থে জানান ওই নামেই তিনি তাঁর বাড়ির নাম রেখেছেন ‘জানাডু ২.০ ’।
কী নেই এই জানাডু ২.০–তে। ৫০০ বছরের পুরোনো বহু মূল্যবান ডগলাস ফার গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি এ বাড়ির বেশির ভাগ অংশ। বাড়ির সামনে রয়েছে ৬০ ফুট লম্বা সুইমিংপুল, অত্যাধুনিক সুবিধাযুক্ত ২৪টি বাথরুম রয়েছে বাড়িটিতে। একসঙ্গে ২০০ অতিথি থাকতে পারেন অতিথিশালায়। মোট ছয়টি রান্নাঘর রয়েছে এখানে। ২ হাজার ১০০ বর্গফুটের লাইব্রেরিতে রয়েছে বেশ কিছু প্রাচীন পাণ্ডুলিপিসহ গেটসের ব্যক্তিগত লাইব্রেরি। রয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উত্তর-পশ্চিমের একটি পর্বতশৃঙ্গ থেকে আনা পাথরের প্যানেলযুক্ত একটি জিম, ট্রাম্পোলিন ঘর। বাড়িতে রয়েছে একটি জলাশয় অংশ, যা একেবারেই ব্যক্তিগত করে রাখা গেটস পরিবারের জন্য। সেখানে বসবাস করে স্যামন ও কাটথ্রোট ট্রাউট মাছের ঝাঁক। কোনো কোনো সময় মেনুতে জায়গা করে নেয় এসব টাটকা মাছ।
শুধু বিত্তবৈভবের ছোঁয়াই নয়, পুরো বাড়ি ছেয়ে রয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির চমক। বাড়ির দেয়ালে রয়েছে অত্যাধুনিক সেন্সর। যে কেউ নিজের পছন্দমতো ঘরের তাপমাত্রা বদলে ফেলতে পারেন। সুইমিংপুলের পানির তলায় রয়েছে বিশেষ মিউজিক সিস্টেম। ঘরের ওয়ালপেপারের পেছনে লুকোন রয়েছে স্পিকার। যা থেকে বাড়ির সব জায়গায় পছন্দ অনুযায়ী গান শোনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাড়ির আশপাশের প্রাকৃতিক সম্পদ কাজে লাগিয়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। স্বাভাবিক উপায়ে দূষণহীন পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকে । মোবাইলে থিম পরিবর্তন করার মতো বাড়ির দেওয়ালের ছবি ইচ্ছামতো পরিবর্তন করার ব্যবস্থা রয়েছে। শুধু একটি বোতামে চাপ দিলেই বদলে যায় না। এ জন্য বাড়ির আনাচকানাচে কম্পিউটার স্ক্রিন বসানো হয়েছে।
বিল গেটসের বাড়ির দর্শন পেতে হলে অংশ নিতে হয় মাইক্রোসফটের বার্ষিক নিলামে। একবার জানাডু ২.০ দেখতে ওই নিলামে এক মাইক্রোসফট কর্মী খরচ করেছিলেন ৩৫ হাজার ডলার। ওই অর্থ অবশ্য সংস্থার ত্রাণ তহবিলে জমা দেওয়া হয়েছিল। পরে বাড়ির বর্ণনা মাইক্রোসফটের ব্লগে দেওয়ার অনুমতি পান তিনি। সেখানে তিনি জানান, ডগলাস ফার গাছ দিয়ে তৈরি ওই বাড়ি। হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ থেকে আনা হয়েছে বালু, যা ঠিক কোথাকার জানা যায়নি। কেউ কেউ বলেন ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ থেকে বার্জে ভাসিয়ে আনা হয়েছিল ওই বালু।
১৯৯৪ সালে মেলিন্ডাকে বিয়ের আগেই এ স্বপ্নের বাড়ি তৈরি করা শুরু করেন গেটস। তবে তাঁদের বিয়ের পর নির্মাণকাজ কিছুদিন বন্ধ ছিল। বিয়ের ছয় মাস পর বাড়িটি নিজের মতো করে নেওয়ার সুযোগ পান মেলিন্ডা।
তবে মেলিন্ডা গেটস একবার বলেছিলেন, এ প্রাসাদ যেন তাঁকে ‘ছোটখাটো নানা ব্যক্তিগত সংকটে’ ফেলে। নিজের মতো করে গড়ে নিলেও এখানে বসবাস করা নিয়ে অনেকবারই অনিচ্ছা দেখিয়েছেন মেলিন্ডা। ২০১৯ সালে দ্য টাইমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মেলিন্ডা বলেছিলেন, ‘বাড়িটি আমাদের চিরকাল থাকবে না। আমি আসলেই এমন একটা দিনের অপেক্ষায় আছি, যেদিন আমি আর বিল একটি ১ হাজার ৫০০ বর্গফুটের বাড়িতে বসবাস শুরু করব।’
২০২১ সালে এসে দুজনের পথ আলাদা হয়েছে। হয়তো অল্প কিছুদিনের মধ্যেই জানা যাবে কীভাবে দুভাগ হবে এ বাড়ি।

ad

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
ad
ad
© All rights reserved 2022
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: সীমান্ত আইটি