হাকিকুল ইসলাম খোকন ,যুক্তরাষ্ট্র সিনিয়র প্রতিনিধিঃ
“রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আঞ্চলিক দেশসমূহকে তাদের প্রচেষ্টাসমূহ অব্যাহত রাখতে হবে। মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি এবং রোহিঙ্গাদের উপর সৃষ্ট নৃশংসতম অপরাধের দায়বদ্ধতা নিরুপন করা এক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি”
সোমবার (৪ অক্টোবর) জাতিসংঘ সদরদপ্তরে সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটির সাধারণ বিতর্কে বক্তব্যে একথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হওয়ার কারণে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পসমূহে হতাশার সৃষ্টি হচ্ছে এবং তা ক্রমশ: বেড়েই চলছে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
“রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে এমনকি ভ্যাকসিনের উপযোগী সকল রোহিঙ্গাদের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী এ সমস্যার সমাধান নিহিত রয়েছে নিজভূমি মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের উপর,” বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত স্থায়ী প্রতিনিধি।
এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আঞ্চলিক দেশসমূহকে মিয়ানমার সঙ্কটের সমাধানে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, “মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমান ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি শীর্ষক বার্ষিক রেজুলেশন নিয়ে এই কমিটিতে আমরা ওআইসি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে কাজ করে যাবো”।
সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার বিষয়সমূহ তুলে ধরেন রাবাব ফাতিমা।
রোহিঙ্গা সঙ্কট ছাড়াও তৃতীয় কমিটিতে বাংলাদেশ যে সকল বিষয়গুলোকে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করবে তা হলো:
– ভ্যাকসিন সমতা নিশ্চিতকরণ,
– নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা রোধ,
– শিক্ষাসহ শিশুদের সকল অধিকারের সুরক্ষা,
– অভিবাসী কর্মীগণের কল্যাণ ও অধিকারের সুরক্ষা এবং
– জাতীয় ও বৈশ্বিক পর্যায়ে মানবাধিকার সমুন্নত ও সুরক্ষিত রাখা।
নাজুক পরিস্থিতিতে নিপতিত মানুষের উপর কোভিড-১৯ যে অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে তা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তিনি এ সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে সামগ্রিক ও টেকসই পূনরুদ্ধারের উপর জোর দেন এবং এক্ষত্রে বৃহত্তর একতা, সহযোগিতা ও সমন্বয়ের আহ্বান জানান।
“আমাদের সমাজ ব্যবস্থার ভিতরে ও বাইরে ইতোপূর্বে বিদ্যমান অসমতা ও ব্যবধানকে এই কোভিড আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, কোভিড অতিমারি থেকে পূনরুদ্ধারের লক্ষ্যে গৃহীত কর্মসূচিতে যাতে কেউ বাদ না পড়ে তা নিশ্চিত করতে এই কমিটি ভূমিকা রাখবে।”
এর আগে তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রথম কমিটি ও পঞ্চম কমিটির সাধারণ বিতর্কে বক্তব্য দেন।
Leave a Reply