বায়জিদ হোসেন, মোংলাঃ
বঙ্গবন্ধু রেল সেতু নির্মাণ প্রকল্পের মালামাল নিয়ে একটি বিদেশী জাহাজ মোংলা বন্দরে ভিড়েছে। শনিবার (৬ আগষ্ট) বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে দক্ষিণ কোরিয়া পতাকাবাহী এম,ভি উহিয়ান হোপ জাহাজটি এসব পণ্য নিয়ে বন্দরের ৭ নম্বর ভিড়ে। এ সময় বন্দরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তসহ জাহাজটির সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাষ্টার কমান্ডার শেখ ফখরউদ্দিন জানান, সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর উপরে যমুনা সেতু সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর ফ্যাবরিকেটেড স্টিল ট্রাস মেম্বার উইত্থ লেটারাল ফোর্স সাপোর্টের (কাঠামো মেশিনারি পণ্য) নিয়ে জাহাজটি শনিবার বিকেলে মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছেছে। এসব আমদানী পণ্য নিয়ে বিদেশী জাহাজ এম,ভি উহিয়ান হোপ গত ২৫ জুলাই ভিয়েতনামের হাইফং বন্দর ছেড়ে আসে। তিনি বলেন, এ চালানে ২৬৭ প্যাকেজের ২৩৫০ মেট্টিক টন মেশিনারি পণ্য এসেছে। এসব পণ্য ভিয়েতনামের আইএইচআই ইনফেষ্টাকচার এশিয়া লিমিটেড কোম্পানী উৎপাদন করেছেন। এম,ভি উহিয়ান হোপ জাহাজের স্থানীয় শিপিং এজেন্টে হক এন্ড সন্স’র খুলনার ব্যবস্থাপক মোঃ শওকত আলী বলেন, ভিয়েতনাম থেকে আসা এসব পণ্য আগামী ৯ আগষ্টের মধ্যে খালাস করা হবে। এরপর সড়ক পথে পদ্মা সেতু হয়ে এ মালামাল সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর পাড়ে নির্মাণাধীণ বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুস্থলে পৌঁছাবে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, দেশের চলমান মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুও। যেটির বাস্তবায়ন এখন দৃশ্যমান। এই সেতুর মেশিনারী পণ্যের চালান মোংলা বন্দর দিয়ে আমদানী হওয়ায় এর বন্দরের ব্যাপক সক্ষমতার প্রমাণ দেয়। এছাড়া পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় মোংলা বন্দরের সক্ষমতাকে অধিকতর কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে উল্লেখ করে মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান মুসা আরও বলেন, দেশের সকল বন্দরের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে দূরত্ব অনেকাংশে কম হওয়ায় মোংলা বন্দর ব্যবহারে আমদানী ও রপ্তানীকারকদের আগ্রহ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এছাড়া দেশের সর্ববৃহৎ মেগা প্রকল্প রুপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র, রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ অন্যান্য মেগা প্রকল্পের মালামাল এ বন্দর দিয়ে আমদানী, খালাস ও পরিবহণ হচ্ছে। এতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে মোংলা বন্দরের সুনাম বৃদ্ধিসহ কর্মচাঞ্চল্যতা ও আয় বাড়ছে। এছাড়া বন্দর ব্যবহারকারীদের সুবিধার জন্য সব ধরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী দুই বছরের মধ্যে এই বন্দর আন্তর্জাতিকভাবে অনন্য পর্যায়ে পৌঁছাবে। সেই সাথে চট্রগ্রাম বন্দরের বিকল্প বন্দর হিসেবে সরাসরি অর্থনীতিতে আরও ব্যাপক আকারে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
এদিকে শনিবার আসা চালানকে বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর এই প্রথম চালান বলে বন্দর কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করলেও মুলত এর আগে ২০২১ সালের ১৪ জুন এ রেল সেতুর মালামাল নিয়ে এ বন্দরে এসেছিলো এম,ভি ফ্রানভো লোহাস নামক বিদেশী জাহাজ। সে জাহাজটিতে এসেছিলো ৩২৮৮ মেট্টিক টন ষ্টীল পাইপ ও পাইল। প্রসঙ্গত, যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু হচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ রেল সেতু। মোট ৫০টি পিলারের উপর গড়ে উঠবে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ ডাবল ট্রাকের এই সেতু।
Leave a Reply