কামরুল ইসলাম গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি
অভিমান করে আজ থেকে ৪০ বছর আগে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যাওয়া সেলিম মিয়ার বয়স ১৮-২০ বছর। তৎকালীন ম্যাট্টিক পাশ করা (বর্তমান এসএসসি) সেলিম মিয়া সবেমাত্র কৈশর পেড়িয়ে যৌবনে পা রেখেছিলেন। পারিবারিক কলহে নিজের চাপা কষ্ট, ক্ষোভ আর অভিমানে কাউকে কিছু না বলে চাঁদপুর ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন সিলেটে।
সেই সেলিম মিয়া এখন ষাটার্ধ্ব বয়সের বৃদ্ধ। বৈশ্বিক মহামারি করোনায় শত শত মৃত্যুর মিছিল দেখে আর বাঁচার আশা দেখছেন না তিনি। শারীরিক অসুস্থতায় বিছানায় পড়ে আছেন দীর্ঘদিন। নাওয়া নেই, খাওয়া নেই, সিলেটের জাফলংয়ের বাসায় মৃত্যুর প্রহর গুনছেন চাঁদপুরের এই অভিমানি মানুষটি। তবে মৃত্যুর আগে তার শেষ ইচ্ছা চাঁদপুরের নিজ পরিবারকে একটি বার দেখার। বাবা-মা বা ভাই-বোন যারাই বেঁচে আছেন তাদের সাথে একটু কথা বলা। নিজের জন্মস্থানের শৈশবের বাড়িটি একটু খানি দেখা।
মোঃ সেলিম মিয়া ১৯৮০ কিংবা ‘৮১ সালে চাঁদপুর ফরাক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক (এসএসসি) পাশ করেন। তার তৎকালীন সহকর্মীরা তাকে দেখেই চেনার কথা। সেলিম মিয়ার বাবা মৃত মোঃ আলকাছ আলী, দাদা মৃত শামছুল হক পাটওয়ারী, চাচা আব্দুর রাজ্জাক।
৫ ভাই বোনের মধ্যে সেলিমই সবার ছোট।
বড় তিন ভাইয়ের নাম আব্দুল করিম, আব্দুর রহিম ও বিল্লাল (হতে পারে)।
মায়ের নাম আর বড় বোনের নাম মনে করতে পারছেন না। তবে দু’জনের যে কোন একজনের নাম নাসিমা।
বিছানায় শয্যাশায়ী সেলিম মিয়া নিজের পোস্ট অফিস ফরাক্কাবাদ বলতে পারলেও ভুলে গেছেন নিজ গ্রামের নাম। জানালেন গ্রাম হয় গুরিশা নয় গুলিশা। তবে জানিয়েছেন নিজ থানা ও জেলা দুটোই চাঁদপুর।
পরিবারের আর কোন স্মৃতি মনে আছে কি-না জানতে চাইলে সেলিম মিয়া বলেন, বড় বোনের বাড়ি দাস পাড়ায় হতে পারে। কোন এক ভাই ইনকাম টেক্স অফিসে চাকরি করতেন। আর কিছু জানা নেই।
৪০ বছরের ব্যবধানে ও সম্প্রতি ষ্টোক করায় ভুলে গেছেন অনেক কিছুই।
এখন মৃত্যুর আগে সেলিম মিয়া সিলেট জাফলং থেকে তার পরিবারের কাছে ফিরতে চায়। প্রিয়জনদের এক নজড় দেখতে চায়। স্যোসাল মিডিয়ার কল্যানে কত জনইতো তার স্বজনের কাছে ফিরলো, আপন ঠিকানায় পৌঁছলো। সেলিম মিয়া কি পারবেন মৃত্যুর আগে তার পরিবারকে ফিরে পেতে?
সেলিম মিয়ার পরিবারের সন্ধান চেয়ে চাঁদপুর বাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সিলেটের গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ করিম মাহমুদ লিমন।
কেউ তার পরিবারের সন্ধান পেলে যোগাযোগ করুন (০১৭১২-৩১৭০৪৬)।
মানবিক এই কাজটিতে সকলে এগিয়ে আসলে মৃত্যুর পূর্বে সেলিম মিয়ার শেষ ইচ্ছে ও পরিবারের মুখে হাসি ফোটানো অসম্ভব কিছু নয়।
Leave a Reply