এস এম মাসুদ রানা, বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
কৃষি ভিত্তিক দেশ বাংলাদেশ। এদেশের ৭০ পার্রসেন্ট মানুষ কৃষি কাজে নিয়োজিত। কৃষিতেই তাঁরা নির্ভর শীল, এই দেশের খাদ্য শষ্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলা। এই উপজেলায় সব ধরনের কৃষি জাতীয় ফসলেত চাষ হয়ে থাকে। তাই স্বল্প সময়ে বেশি লাভের আশায় কৃষকেরা আউশ ধান ওঠার পরপরই বিরামপুরে আগাম জাতের আলু চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা।
রবিবার (২৪ অক্টোবর) দিনাজপুর জেলার বিরামপুর পৌরসভার মামুদপুর (মুন্সিপাড়া) মাঠে গিয়ে দেখা যায় চাষিরা দল বেধে জমিতে আলু রোপণ করছেন।পৌর শহরের মামুদপুর (মুন্সিপাড়া) গ্রামের আলু চাষি সমীর হোসেন বলেন, আমাদের এলাকা নদী চর ও পলি এলাকা। এই এলাকায় আমাদের সহ আশ-পাশের অনেকের বসত ভিটা, মাঠের জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। নদীর চর এলাকায় বালু মাটি। তাই এসব জমিতে সব ধরনের ফসল চাষ হয় না। আর যে সব ফসল চাষ হয়, সেগুলো বেশি দাম পাওয়ার জন্য আগাম চাষ করে থাকি। আমি কার্তিক মাসেই ৩ বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু লাগাচ্ছি। বর্তমান সময়ে কমমূল্যে শ্রম পাওয়া যায়। এ সময় মানুষের হাতে কাজ থাকেনা। তাই যেখানে ৫’শত টাকা মজুরী বর্তমানে ৩’শত টাকা মজুরী হিসেবে কাজ করে নিচ্ছি। এটি অল্প দিনের মধ্যেই উঠবে এবং এক বিঘা জমির আলু ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা লাভে বিক্রি হয়।
উপজেলার ফকির পাড়া (দয়েরপাড়) গ্রামের কৃষক জাহিদুল বলেন, বর্তমানে মজুরী কম থাকায় এক বিঘা জমিতে আলুর বীজ, সার ও কিটনাশক বাবদ চাষে প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হবে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আশা করি আলুতে দু’টি পয়সা পাব। আর যদি জমিতেই ভালো দামে আলু বিক্রি করা যায়। তাহলে ৩৮ থেকে ৪২ হাজার টাকার মতো লাভ আসতে পারে। এবার আবহাওয়া অনুকূলে, তাই ভালো ফলনের আশা করছি।আলুর জাত বিষয়ে তাঁদের সাথে কথা বললে তাঁরা জানান, রোমানা, গেনোলা, স্টিক, সাটাল, কেরেজ জাতের এসব আলু ৩৩ শতাংশ মাপে এক বিঘা জমিতে ৪০ থেকে ৪৫ মন আলু চাষ হয়।আশ্বিন-কার্তিক মাসে কৃষি শ্রমিকের কাছে কাজ থাকে না। তাই তাঁরা এই অসময়ে কাজ পেয়ে অনেক কৃষি শ্রমিকের মুখে হাসি ফুটেছে। শ্রমের বিনিময়ে তাঁরা প্রতিদিন ৩’শত টাকা হাজিরায় কাজ করছেন। এই কাজে নারী শ্রমিকেরাও শ্রম দিচ্ছেন। কৃষি শ্রমিক আর্ন্তনী মার্ডি বলেন, ৫’শত টাকায় কাজ করি। কিন্তু, এ সময় কাজ না থাকায় ৩’শত টাকায় কাজ করে দিচ্ছি। বসে থেকে কি লাভ?এ বিষয়ে বিরামপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষি বিদ নিকছন চন্দ্র পাল জানান, গত বছর আমাদের এই উপজেলায় ১৫’শত ৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। এবার সবে মাত্র আলু চাষ শুরু হয়েছে। এখনো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয় নাই। তবে গত বছরের তুলনায় এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছি। আমরা তাঁদেরকে সর্বাত্তক সহযোগীতাও করবো। রোপণের ৫৫-৫৮ দিনের মধ্যে এই আলু ঘড়ে তোলা যায়, ফলনও ভালো। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে কৃষকেরা বেশ ভালো দামে আলু বিক্রিও করতে পারেন।
Leave a Reply