1. [email protected] : দৈনিক বিজয়ের বানী : দৈনিক বিজয়ের বানী
  2. [email protected] : Hasan :
  3. [email protected] : dev : dev
লক্ষ্মীপুরের খেজুর রস 'লক্ষ্মী' রুপের অলংকার - dainikbijoyerbani.com
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১০ অপরাহ্ন
ad

লক্ষ্মীপুরের খেজুর রস ‘লক্ষ্মী’ রুপের অলংকার

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৩
  • ১৬৬ Time View

জিহাদ হোসেন রাহাত

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি,

লক্ষ্মীপুরের প্রকৃতিতে হাঁকডাক আর ঢাকঢোল পিটিয়ে- আগমনী পয়গাম জানাচ্ছে পিঠাপুলির ঋতু শীত। দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের দ্বিতীয় দরজা সয়াল্যান্ড খ্যাত লক্ষ্মীপুর – শীত এলেই ধারণ করে মোহনীয় এক রুপ। আর এই রুপের শোভাবর্ধনে অলংকারের ভূমিকা পালন করে স্থানীয় খেজুর রস। খেজুর রস সংগ্রহ এবং নানান ধরনের পিঠা সৃষ্টি করে ভিন্ন এক পরিবেশ। প্রকৃতিতে অগ্রহায়ণ আসার আগেই কার্তিকের শেষ সময়ে লক্ষ্মীপুরে শুরু হয় খেজুর রস সংগ্রহের প্রস্তুতি। তবে খেজুর রস সংগ্রহ ও পুর্নাঙ্গ গাছ প্রস্তুতে গুনতে হয় অগ্রহায়ণের প্রথম সকাল পর্যন্ত সময়। জেলার রামগতি ও কমলনগরে তুলনামূলক অধিক খেজুর গাছের দেখা মেলে। রায়পুরের চরমোহনা, দেবীপুর, ডাকাতিয়ার দু’পাড়, হায়দরগঞ্জসহ বাকি এলাকাগুলোয়ও কমবেশি মেলে সারিসারি খেজুর গাছের দেখা। তবে তুলনামূলক বেশি খেজুর গাছের দেখা মেলে জেলা সদরের হাসনাবাদ,জাহানাবাদ, চররমনীমোহন, রসূলগঞ্জ ও মির্জাপুরে। জেলার রামগঞ্জের নোয়াগাঁ, ইছাপুর,ভাদুর ও চন্ডিপুরেও মেলে অসংখ্য খেজুর গাছের দেখা। তবে সংখ্যার তুলনা করতে গেলে পুরো জেলায় গত কয়েক দশকে ব্যাপক হারে কমেছে খেজুর গাছ ও রস প্রাপ্তির পরিমান।

হেমন্তের শেষ লগ্নে শীতের আগমনের প্রহর গুনতে গুনতে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন লক্ষ্মীপুরের গাছিরা। গ্রামের মেঠোপথের পাশে ডোবা ও পুকুর পাড়ে সারি সারি অপরিচ্ছিন্ন খেজুর গাছ গুলোর পুরানো ডাল পালা কেটে পরিষ্কারের কাজও চালাচ্ছেন অনেকে। আবার কেউবা কার্তিকের শেষ দশকে প্রাথমিক কাজ সেরে অগ্রহায়ণের প্রথম দশকে শুরু করেছেন রস সংগ্রহের কার্যক্রম। ফলে জেলার অনেক স্থানে প্রাথমিক কাজ শেষ করে কার্তিকের শেষভাগ ও অগ্রহায়ণের প্রথম ভাগে শুরু হয় খেজুর রস সংগ্রহের কাজ।

এখানকার গ্রামীণ মানুষের জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে শীতকাল যতটুকু গুরুত্বপূর্ণ ঠিক তেমন গুরুত্ব বহন করে এখানকার খেজুর রসও। শীত যেন গ্রাম অঞ্চলের গাছিদের জন্য নিয়ে আসে রুটিরুজির খোরাক। নানা স্বপ্ন আর প্রত্যাশায় তাদের অনেকটা সময় কেটে যায় এই খেজুর গাছের সাথে। এমনই একজন স্বপ্নবাজ গাছি রায়পুরের কেরোয়া গ্রামের কবির হোসেন। সাত সকালে মোরগ ডাকার আগেই ঘুম থেকে ওঠেন তিনি। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে বিক্রি করেন স্থানীয় তারা মসজিদ এলাকায়। দিব্যি হাসিখুশি কবির ঠকান না কাউকে, তবে অনেক সময় নিজেই যান ঠকে। বলতে গেলে সারাদিন এক গাছ থেকে অন্য গাছ এভাবেই কেটে যায় কবিরদের দিন। ওতপ্রোতভাবে জড়িত গাছির জীবন সংগ্রামের বহু কষ্টের মাঝে অনেক প্রাপ্তিই যেন মিটে যায় গ্রাম বাংলার এই জনপ্রিয় বৃক্ষ খেজুর গাছের সাথে। গাছিদের জন্য এই সময়টা যেমন কষ্টের ঠিক তেমনি আনন্দদায়ক।

এখানকার গাছিরা সপ্তাহে ৫-৬ দিন সংগ্রহ করেন খেজুর রস। সংগৃহীত রসের একটি বিরাট অংশ নিয়ে গাছিরা পাড়ি জমান স্থানীয় ছোট-বড় হাটগুলোয়। শীতকালীন এই খেজুর রস বেচা-কেনার জন্য বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় স্থায়ী-অস্থায়ী হাটও রয়েছে এ জেলায়। হাটগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, মির্জাপুর বাজার, শ্যামগঞ্জ, ভাটরা, আলেকজান্ডার বাজার, হায়দরগঞ্জ, দালাল বাজার, উত্তর তেমুহনীসহ আরো কয়েকটি স্থান।

উল্লেখ্য যে, এখানকার গাছিরা মূলত গাছ কাটতে ব্যবহার করেন বিশেষ এক ধরণের লোহা দিয়ে তৈরী দা, দড়ি, আবার দা রাখার জন্য বাঁশ বা প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি এক প্রকার থলি। সে থলি গাছিরা রশি দিয়ে বেধে খুব যত্নে দা রেখে এ গাছ থেকে সে গাছে উঠা নামা করেন খুব সহজে। গাছ কাটতে গাছি শরীরের ভারসাম্য রক্ষার জন্য কোমর বরাবর গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে নেন। দড়িটা বিশেষ ভাবে তৈরি করা হয়। এই দড়ির দুই মাথায় বিশেষ কায়দায় গিট-বাধন দেয়া থাকে। গাছে উঠতে গাছি অতি সহজে মহুর্তের মধ্যে গিট (বাধন) দুটি জুড়ে দিয়ে নিজের জন্য গাছে ওঠার নিরাপদ ব্যবস্থা নেয় করে।

ad

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
ad
ad
© All rights reserved 2022
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: সীমান্ত আইটি