1. [email protected] : দৈনিক বিজয়ের বানী : দৈনিক বিজয়ের বানী
  2. [email protected] : Hasan :
  3. [email protected] : dev : dev
লক্ষ্মীপুরে বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তা লাঞ্ছিত। - dainikbijoyerbani.com
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৯ পূর্বাহ্ন
ad

লক্ষ্মীপুরে বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তা লাঞ্ছিত।

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১ জুলাই, ২০২১
  • ৯৯ Time View

জিহাদ হোসেন রাহাত।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :

লক্ষ্মীপুর-ভোলা-বরিশাল নৌ-রুটের লক্ষ্মীপুর অংশে মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চ ও ফেরীঘাটের মালিকানা ও ইজারা নিয়ে চরম বিরোধ দেখা দিয়েছে। চলতি অর্থ বছরের জন্য লক্ষ্মীপুরের দুইটি প্রভাবশালী গ্রুপ পৃথক পৃথক দু’টি কার্যালয় থেকে ঘাটতি ইজারা নেয়। ফলে ঘাট দখল নিয়ে এখন উত্তেজনা বিরাজ করছে। উভয় পক্ষ প্রকাশ্যে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। এতে যে কোন সময় ঘাট এলাকায় রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘাটে এসে লাঞ্চনার শিকার হন বিআইডব্লিউটিএ এর কর্মকর্তা একেএম কাউসারুল ইসলাম।

জানা গেছে, ঘাটের মালিকানা জেলা পরিষদ দাবি করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে ইসমাইল হোসেন পাঠান নামে সাবেক এক আওয়ামীলীগ নেতাকে ইজারা দিয়েছে। ২০২১-২২ অর্থ বছরের জন্য ইজারার মূল্য ধরা হয়েছে ৯০ লাখ টাকা।

অন্যদিকে গত ২৮ জুন চলতি অর্থবছরের জন্য মোট ৫৪ লাখ টাকা ইাজারা মূল্য নির্ধারণ করে বিআইডব্লিউটিএ এর বন্দর ও পরিবহন বিভাগের চাঁদপুর কার্যালয় থেকে ইজারা নেন শিমুল চক্রবর্তী নামে আরেক ব্যক্তি, যিনি স্থানীয় এক সংসদ সদস্যের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত।

ইসমাইল হোসেন ও শিমুল চক্রবর্তী নামমাত্র পৃথক ইজারা আনলেও এদের পেছনে রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতারা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘাট দখল নিতে ইসমাইল হোসেনের সাথে আছে জেলা পরিষদের সদস্য আলমগীর হোসেন- যিনি মজুচৌধুরীরহাটের প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুর জব্বার লাবলু এবং জেলা ছাত্রলীগের আরেক সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাকিব হোসেন লোটাসসহ প্রভাবশালী অনেকে রয়েছে এ গ্রুপের সাথে।

অন্যদিকে শিমুল চক্রবর্তীর সাথে রয়েছে ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক নেতা নজরুল ইসলাম ভুলু ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ নুরুল আজিম বাবর, যুবলীগ নেতা রুপম হাওলাদার, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদুন নবী সোহেলসহ প্রভাবশালী।

পৃথক এ দুই ইজারা গ্রহীতার সাথে প্রভাবশালী এসব ছাত্রনেতাদের সম্পৃক্ততা থাকার কারণে ঘাট দখল নিয়ে দু’ পক্ষই মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।

বুধবার (৩০ জুন) সকালে ওই ঘাটের ইজারাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষ লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদ কার্যালয় প্রাঙ্গণে হট্টগোল করতে দেখা গেছে এবং মজুচৌধুরীরহাটেও তারা প্রকাশ্যে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ঘাট এলাকায়। বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) বিকেলের দিকে চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক এ.কে.এম কায়সারুল ইসলাম তাদের ইজারাদার শিমুল চক্রবর্তীকে ঘাট বুঝিয়ে দিতে গেলে জেলা পরিষদের সদস্য ও আওয়ামীলীগ নেতা আলমগীর হোসেনের লোকজনের হাতে লাঞ্চনার শিকার হয়েছেন। সর্বশেষ সন্ধ্যা সোড়া ৬টার দিকে প্রাপ্ত তথ্যমতে- ঘাটের দখল নিয়ে দু’পক্ষের বিপুল পরিমাণ লোকজন অবস্থান নিচ্ছে।

এদিকে, মজু চৌধুরীরহাট ঘাটের পূর্ববর্তী ইজারাদারের মেয়াদ শেষ হয়েছে ৩০ জুন। শেষদিন দুপুরে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সরেজমিনে ঘাটটি বুঝিয়ে দেওয়া হয় ইসমাইল হোসেনের কাছে। এ সময় তার সাথে ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য আলমগীর হোসেন- যিনি নিজেই পরোক্ষভাবে ঘাটের ইজারা আনছেন বলে সেখানে ঘোষণা দেন। কোনভাবেই ঘাটের দখল ছাড়বেন বলে প্রতিপক্ষকে ইঙ্গিত করে হুঙ্কার দেন তিনি। বিগত কয়েক বছরেও নামমাত্র ঘাট ইজারা নিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন জেলা পরিষদের এ সদস্য। ফলে ঘাট হাতছাড়া না করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি।

জানা গেছে, ২০১৭ সালে মজুচৌধুরীরহাট ঘাটটি নৌ-বন্দর হিসেবে গেজেটভূক্ত হওয়ায় নিয়মানুযায়ী ঘাটের দায়িত্ব চলে যাওয়ার কথা বিআইডব্লিউটিএর কর্তৃপক্ষের হাতে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে বিগত বছরগুলোতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে ঘাটের ইজারা দিয়ে আসছিলো লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদ। কিন্তু বর্তমানে নদী বন্দরের আওতাধীন মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চঘাট, ফেরীঘাট, পার্কিং ইয়াড ও শুল্ক আদায়ের দায়িত্ব বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ বুঝে নিয়ে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে জন্য ইজারা মূল্য ও আয়কর ও ভ্যাট বাবদ ৫৪ লাখ টাকায় ঘাটটির ইজারা দেয় বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ।

বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক নির্ধারিত ইজারাদার পক্ষে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নজরুল ইসলাম ভুলু বলেন, ফেরীঘাটসহ মজু চৌধুরীর হাটটি নৌ-বন্দরের সীমানা হিসেবে ২০১৭ সালে গ্রেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে যায়। আমরা আগামী ১ বছরের জন্য বিআইডব্লিউটিএ থেকে মজু চৌধুরীরহাট ঘাটটি ইজারা নিয়েছি। পূর্বের ইজারাদারের মেয়াদ বুধবার (৩০জুন) শেষ হচ্ছে। আমরা ১লা জুলাই ঘাটের দায়িত্ব বুঝে নেবো। তবে জেলা পরিষদ নতুন করে অন্য কাউকে ইজারা দেওয়া আইন সম্মত হয়নি।

এদিকে জেলা পরিষদ থেকে ইজারাপ্রাপ্ত ইসমাইল হোসেন পাঠান জানান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের মাধ্যমে মজু চৌধুরীর হাট ঘাটটি ৯০ লাখ টাকার বিনিময়ে আমাকে ইজারা দেওয়া হয়েছে। বিকেলে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ঘাটটি আমাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান জানান, লক্ষ্মীপুর ও ভোলা জেলা পরিষদের মালিকানাধীন মজু চৌধুরীরহাট হতে ইলিশা জংশন আন্ত:বিভাগীয় ফেরীঘাটের অন্তর্ভূক্ত হওয়ায় পূর্ব থেকে এ ঘাটের ইজারা চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারে মাধ্যমে হয়ে আসছে। সেই আলোকে বর্তমান ইজারাধারের মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন করে ইজারাদার ইসমাইল হোসেন পাঠানকে ঘাটটির দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে বিভাগীয় কমিশনার ও আন্ত:মন্ত্রণালয়ের নতুন কোন নির্দেশনা পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

জেলা পরিষদের কোন সদস্য ঘাটের দায়িত্ব থাকতে পারেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরিষদের কোন সদস্য ঘাট ইজারা নিতে পারেননা।

এদিকে চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক এ.কে.এম কায়সারুল ইসলাম জানান, মজু চৌধুরীরহাট ঘাটটি নৌ-বন্দর হিসেবে গেজেটভূক্ত হওয়ার পর থেকে এ ঘাটের সকল দায়-দায়িত্ব বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের। সে অনুযায়ী ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের জন্য ঘাটি ইজারা দেওয়া হয়েছে।

ad

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
ad
ad
© All rights reserved 2022
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: সীমান্ত আইটি