সমবায় আইন লঙ্ঘন করে মির্জাগঞ্জে এডহক কমিটি অনুমোদন।
মোঃ সুজন সিকদার
বিষেশ প্রতিনিধি,
সমবায় আইন ও বিধিমালা লঙ্ঘন করে ঋণ খেলাপি সদস্য দিয়ে এডহক কমিটি অনুমোদনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে “মির্জাগঞ্জ উপজেলা শিক্ষক ও কর্মচারী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউঃ লিঃ” এর এডহক কমিটিতে এ ঘটনা ঘটে।গত ১৯মে বুধবার জেলা সমবায় কর্মকর্তা, পটুয়াখালী মোঃ হারুন-অর-রশীদ স্বাক্ষরিত একটি আদেশে মোঃ আবদুল বারেক হাং ,সদস্য নং- ২১ কে সভাপতি, আবদুস ছালাম সিকদার, সদস্য নং-৪২২ এবং মোঃ ফরিদ আহম্মেদ,সদস্য নং- ১৬কে সদস্য করে ১২০ দিনের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট এডহক কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়। অভিযোগ আছে এডহক কমিটির ২ নং ক্রমিকে সদস্য আবদুস ছালাম সিকদার একজন ঋণ খেলাপি। তিনি মির্জাগঞ্জ উপজেলা শিক্ষক ও কর্মচারী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউঃ লিঃ থেকে ২০০০০০(দুই লক্ষ) টাকা ঋণ নিয়ে সেবা মূল্য সহ ৩,৩১০০০(তিন লক্ষ একত্রিশ হাজার) টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বারবার তারিখ দিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ঋণ পরিশোধ না করে খেলাপি হন। সর্বশেষ তিনি গত ১২/৪/২০২১ খ্রিঃ পুবালী ব্যাংক, সুবিদখালী শাখায় ৩,৩১০০০(তিন লক্ষ একত্রিশ হাজার) টাকার নিজ নামীয় একটি চেক দেন যাহার নং-SB 25-Q-9714390,হিসাব নং-৪৪৫৭১০১০১৭১৩৯ এবং ২৭/০৪/২০২১খ্রিঃ তারিখ চেকটি নগদায়নের জন্য ব্যাংক কে অনুরোধ করেন। নির্ধারিত ২৭/০৪/২০২১ তাং পুবালী ব্যাংক চেকটি ক্যাশ করতে না পেরে মির্জাগঞ্জ উপজেলা শিক্ষক ও কর্মচারী কো-অপারেটিভ ক্রেঃ ইউঃ লিঃ এর ম্যানেজার বাবুল চন্দ্র সিকদারের কাছে চেক ডিজঅনার স্লিপ সহ মূল চেকটি ফেরত দেন। অতঃপর ম্যানেজার বাবুল চন্দ্র সিকদারের পক্ষে অ্যাডঃ মোঃ আবুল কালাম আজাদ,জজ কোর্ট, পটুয়াখালী গত ৯/৫/২০২১ খ্রিঃ তারিখ প্রতিষ্ঠানের পাওনা ৩,৩১০০০(তিন লক্ষ একত্রিশ হাজার) টাকা পরিশোধের জন্য ত্রিশ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে অভিযুক্ত আবদুস ছালাম সিকদার কে একটি লিগ্যাল নোটিশ দেন। এছাড়াও সমিতির সদ্য বিদায়ী কমিটির সভাপতি মোঃ মনিরুজ্জামান হাওলাদার, সদস্য নং-২৮২ এডহক কমিটিতে কোন ঋণখেলাপি সদস্য কে অনুমোদন না দেয়ার জন্য জেলা সমবায় কর্মকর্তা বরাবর চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেন। কিন্তু জেলা সমবায় কর্মকর্তা সমবায় আইন ও বিধিমালা (ধারা ৩৭, উপধারা ৮৮/৩) লঙ্ঘন করে অবৈধ ভাবে এডহক কমিটি অনুমোদন দেন।জানতে চাইলে জেলা সমবায় কর্মকর্তা মোঃ হারুন অর রশীদ সমবায় আইন লঙ্ঘনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, সমবায় আইনের ১৮ ধারা মেনেই কমিটি করা হয়েছে।এ দিকে নতুন এডহক কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে সমিতির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে গালাগাল ও হুমকি ধামকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত ২০ মে বিকেলে সমিতির অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।জানা যায় এডহক কমিটির সভাপতি মোঃ আবদুল বারেক হাং এর ভাইপো মোঃ আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে এডহক কমিটির সদস্য আবদুস ছালাম সিকদার ও মোঃ ফরিদ আহম্মেদ সমিতির অফিসের মধ্যে ঢুকে সমিতির সিনিয়র ম্যানেজার বাবুল চন্দ্র সিকদার, মাঠকর্মী লিটন ও অফিস সহকারী চাঁন মিয়া কে বকাঝকা করে এবং তাদের অধীনে চাকরি করতে হবে বলে হুমকি ধামকি দেয়।এ সময় মোঃ আব্দুর রাজ্জাক কে ম্যানেজার স্যারের সাথে দুর্ব্যবহার সহ উদ্ধত্যপূর্ণ আচারণ করতে শোনা যায়। ঘটনাটি মুহুর্তের মধ্যে ভাইরাল হলে সমিতির গ্রাহকের মধ্যে নিন্দার ঝড় উঠে। উল্লেখ্য, ম্যানেজার বাবুল চন্দ্র সিকদার সমিতির একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাক এর স্কুল শিক্ষক। এ বিষয়ে মির্জাগঞ্জ উপজেলা শিক্ষক ও কর্মচারী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান লোটাস ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে দুঃখ করে বলেন এ ঘটনা আদৌ কাম্য নয়। এতে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়়।
Leave a Reply