1. [email protected] : দৈনিক বিজয়ের বানী : দৈনিক বিজয়ের বানী
  2. [email protected] : Hasan :
  3. [email protected] : dev : dev
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের জয়ের নেপথ্যে কারন কি? - dainikbijoyerbani.com
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৯ অপরাহ্ন
ad

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের জয়ের নেপথ্যে কারন কি?

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ২৩২ Time View

মোঃ মিজানুর রহমান

নির্বাহী সম্পাদক
ঢাকা

ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনে নৌকার প্রার্থী ছিলেন টানা দুইবারের সংসদ সদস্য এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ এনামুর রহমান। আরেক সাবেক সংসদ সদস্য তৌহিদ জং মুরাদ ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের দুজনকে পরাজিত করে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জয় পেয়েছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ সাইফুল ইসলাম। এ জয় অনেককে বিস্মিত করেছে। বিশেষ করে প্রতিমন্ত্রী ডাঃ এনামুর রহমানের ভোটে তৃতীয় হওয়া নিয়ে চলছে আলোচনা ও নানা বিশ্লেষণ।
গত ৭.১.২৪ ইং রোববার ভোট গণনা শেষে সাভার উপজেলা পরিষদের কনফারেন্স রুমে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফেরদৌস ওয়াহিদ ঢাকা-১৯ আসনের ২৯২ কেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন। ফলাফলে দেখা যায়, স্বতন্ত্র প্রার্থী (ট্রাক) মোঃ সাইফুল ইসলাম সর্বোচ্চ ৮৪ হাজার ৪১২ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল) তৌহিদ জং মুরাদ পেয়েছেন ৭৬ হাজার ২০২ ভোট। বিজয়ী মোঃ সাইফুল ইসলামের সঙ্গে তার ভোটের ব্যবধান ৮ হাজার ২১০। বর্তমান সংসদ সদস্য ডাঃ এনামুর রহমান ৫৬ হাজার ৩৬১ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন। মোঃ সাইফুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর ভোটের ব্যবধান ২৮ হাজার ৫১ এবং তৌহিদ জং মুরাদ এর সঙ্গে তাঁর ভোটের ব্যবধান ১৯ হাজার ৮৪১।
মোঃ সাইফুল ইসলাম স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করলেও তিনি আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন। তিনি সাভার উপজেলার স্বনির্ভর ধামসোনা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান। প্রতিমন্ত্রী ডাঃ এনামুর রহমান ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি। তৌহিদ জং মুরাদ আওয়ামী লীগে এখন কোনো পদে না থাকলেও এক দশক আগে তিনি ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মোঃ সাইফুল ইসলাম জয়ী হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এর মধ্যে রয়েছে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার শ্রমিকদের সঙ্গে মোঃ সাইফুল ইসলামের সুসম্পর্ক, করোনাকালে শ্রমিকদের পাশে থাকা, শ্রমিক ও নিজ দলের তৃণমূলের সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী ডাঃ এনামুরের যোগাযোগ কম থাকা, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি,এবং আওয়ামী লীগের একটি অংশে তৌহিদ জং মুরাদ ঠেকাও তৎপরতা। এর বাইরে চেয়ারম্যান হিসেবে স্বনির্ভর ধামসোনা ইউপির বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের কারণে ওই এলাকায় বেশ জনপ্রিয় ছিলেন মোঃ সাইফুল ইসলাম।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও শ্রমিক সংগঠনের একাধিক নেতা-কর্মী জানান, এবারের নির্বাচনে মোঃ সাইফুল ইসলামের পক্ষে কাজ করেছেন বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। ভোটের আগে শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা শ্রমিক ভোটারদের নিয়ে সভা-সমাবেশ করেছেন। করোনাকালে মোঃ সাইফুল ইসলাম শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। কোনো শ্রমিক মারা গেলে তার জন্য কবরস্থানের জায়গা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পেছনে তৎকালীন সংসদ সদস্য মুরাদ জং কে দায়ী করে মোঃ সাইফুল ইসলামের পক্ষের শ্রমিকনেতারা ব্যাপক প্রচারণা চালান। এ ছাড়া ভোটে সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীব মোঃ সাইফুল ইসলাম কে সমর্থন করেন। মঞ্জুরুলের সঙ্গে মুরাদ জংয়ের রাজনৈতিক বিরোধ ভোটের মাঠে ‘মুরাদ ঠেকাও’ স্লোগানে পরিণত করেন তার কর্মীরা।
যদিও ভোটের আগে মঞ্জুরুলকে প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানের সঙ্গে দেখা যায়। তবে অনেকেই মনে করছেন, শেষ মুহূর্তে তিনি মোঃ সাইফুল ইসলামের পক্ষে কাজ করেছেন। রাতে সাভার উপজেলা পরিষদে ভোটের ফলাফল ঘোষণার শেষ দিকে মোঃ সাইফুল ইসলামের সঙ্গে ওই কক্ষে প্রবেশ করেন মঞ্জুরুল। ফলাফল প্রকাশের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি মোঃ সাইফুল ইসলামের সঙ্গেই ছিলেন। এবার স্বনির্ভর ধামসোনা ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা ছাড়াও ভোটের হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ পাথালিয়া ইউনিয়ন ও ইয়ারপুর ইউপির চেয়ারম্যানরা সমর্থন দিয়েছেন মোঃ সাইফুল ইসলাম কে।
এসব নানা কারণে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঠে উত্তাপ ছড়িয়েও শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন মুরাদ জং। অপর দিকে সাভার ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানের একটা দূরত্ব তৈরি হওয়ায় তিনি ভোটের মাঠে অনেকটা কোণঠাসা অবস্থায় ছিলেন।
স্বাধীন বাংলা গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল কামরান বলেন, সবাইকে সমানভাবে মূল্যায়ন করেন মোঃ সাইফুল ইসলাম। করোনার সময় তিনি শ্রমিকদের পাশে ছিলেন। অন্য দুই প্রার্থীর বিষয়ে তিনি বলেন, রানা প্লাজার দুর্ঘটনায় দায়ী ভবনের মালিক রানা ছিলেন মুরাদ জং এর লোক। এ ছাড়া রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর শ্রমিকদের চিকিৎসা দিয়ে সংসদ সদস্য হন ডাঃ এনামুর রহমান। কিন্তু এরপর আর তিনি শ্রমিকদের খোঁজ নেননি। শ্রমিকদের জন্য কিছু করেননি। এসব কারণে ৩০-৪০টি শ্রমিক সংগঠন মোঃ সাইফুল ইসলামকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমর্থন দিয়েছেন।
বিজয়ী মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, সাভারে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, মাদক ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তাদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। শ্রমিকসহ সবার স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করলেও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং আওয়ামী লীগের হয়েই সংসদে যেতে চাই।
মুরাদ জং এর দলের নেতা-কর্মীদের দিকে ইঙ্গিত করে মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিকভাবে যারা আওয়ামী লীগ করেন, তারা নৌকার পক্ষে থাকবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ঈগলের প্রার্থী তো আওয়ামী লীগের সদস্য নন। যাঁরা নৌকা থেকে পল্টি মেরে ঈগলের পক্ষে গিয়েছেন, যারা ঈগলের পক্ষে গিয়ে বাজে মন্তব্য করেছেন, শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করেছেন, সাংগঠনিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা-১৯ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৭ লাখ ৫৬ হাজার ৪১ জন।

ad

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
ad
ad
© All rights reserved 2022
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: সীমান্ত আইটি