স্বামীর নির্যাতনে প্রাণ গেল পুলিশ কনস্টেবল বিউটির
মোঃ মোস্তফা কামাল আপন ব্যুরোপ্রধান রংপুর ডিভিশন
দিনাজপুর সদর উপজেলার ১০নং কমলপুর ইউনিয়নের দাইনুর
(কনজকুড়ি) এলাকার বাবুল হোসেনের পুলিশে কর্মরত একমাত্র কন্যা কং/১৭০
বিউটি আক্তারের সাথে পার্বতীপুর উপজেলার সুখদেবপুর সরকারপাড়া গ্রামের
মমতাজ আলীর পুত্র গাইবান্ধা পুশিল লাইনে কর্মরত কং/৭৪৪ মোঃ রাব্বী সরকার
(২৫) এর দেড় বছর পূর্বে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক কাবিননামা মূলে বিবাহ হয়।
নিহতের পিতা বাবুল হোসেন আমাদের প্রতিনিধিকে জানান, বিবাহের পর হতে
দাইনুর টংপাড়া এলাকার মিজানুর রহমান ও মিনারা বেগমের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ
মদদ ও উস্কানিতে আমার জামাতা পুলিশ কনস্টেবল রাব্বী ও তার বোন মনজিলা
(৩২), আছিয়া বেগম (৩০), বেলী বেগম (২৯), বেবী (২৮), মেহেদী আক্তার (২৫)
আমার কন্যার উপর যৌতুকের জন্য নানারকম অত্যাচার ও অমানবিক নির্যাতন করতে
থাকে। আমার জামাতা পুলিশ কনস্টেবল রাব্বী যৌতুক বাবদ ১০ লক্ষ টাকা দাবী
করলে আমার কন্যা তা দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং বলে বিবাহের সময় আমার বাবা
তোমাকে অনেক কিছু দিয়েছে আমার কিসের টাকা চাও? এ কথা বলার সাথে সাথে আমার
অন্তসত্বা কন্যার পেটে লাথি মেরে তার পেটের বাচ্চা নষ্ট করে গর্ভপাত
ঘটায়। এমনি অবস্থায় আমার কন্যা অনেক কষ্টে নির্যাতনে সংসার করতে
থাকাকালীন অবস্থায় পুনরায় আবার অন্তসত্বা হয়। এ ব্যাপারে আমার কন্যা
আমাকে ও আমার পুত্রদের প্রায়শই ব্যাপারগুলো জানাত। গত ১৭ ডিসেম্বর’২০
আমার জামাতা আমার কন্যাকে তালাকের নোটিশ পাঠিয়ে দিলে সে আরো ভীষণ অসুস্থ
হয়ে পড়ে এবং ১৯ ডিসেম্বর’২০ তারিখে কথাকাটির এক পর্যায়ে আমার কন্যাকে
সবাই মিলে মানসিক নির্যাতন করলে সে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তৎক্ষণাৎ
বাড়িতে থাকা বিষ খেয়ে ফেলে। এলাকাবাসী আমার কন্যাকে গাইবান্ধা সদর
হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে ভর্তি না করিয়ে সাথে সাথে রংপুর
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
আমার কন্যাকে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আমার নিহত কন্যা স্ব-হস্তে লিখিত একটি চিঠিতে উল্লেখ করেন, এই কয়েকটা
মানুষ আমাকে বাঁচতে দিল না। আম’াকে এত পরিমাণ নির্যাতন করেছে যে, আমি
নিজেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিলাম। আমি আমার নির্যাতনের বিচার চাই, না হলে
মরে গিয়েও শান্তি পাব না, যতদিন না এদের বিচার হয়। বিউটি আক্তারের অকাল
মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। বিউটি আক্তারের হত্যাকারীদের
বিচারের দাবীতে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আশু হস্তক্ষেপ
কামনা করছেন এলাকাবাসী। এ খবর লেখা পর্যন্ত তার পরিবারের পক্ষ থেকে
মামলার প্রস্তুতি চলছিল।
Leave a Reply