1. [email protected] : দৈনিক বিজয়ের বানী : দৈনিক বিজয়ের বানী
  2. [email protected] : Hasan :
  3. [email protected] : dev : dev
অভিযোগের তীর ছুড়লেন চাকরিচ্যুত শরীফ 'নাটের গুরু' সিনিয়র সচিব - dainikbijoyerbani.com
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৭ পূর্বাহ্ন
ad

অভিযোগের তীর ছুড়লেন চাকরিচ্যুত শরীফ ‘নাটের গুরু’ সিনিয়র সচিব

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল, ২০২২
  • ৭০ Time View

অভিযোগের তীর ছুড়লেন চাকরিচ্যুত শরীফ
‘নাটের গুরু’ সিনিয়র সচিব
বিশেষ প্রতিনিধিঃ মোঃ ফেরদৌস মোল্লা
আলোচিত দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনের চাকরিচ্যুতির ঘটনার পর ফের আলোচনায় এসেছে সরকারের এক সিনিয়র সচিবের নাম। এক সময় নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে থাকা এ কর্মকর্তার বাড়ি কক্সবাজারে। নির্বাচন কমিশনের ৭টি ল্যাপটপ রহস্যজনকভাবে চুরি হওয়া ও এক ল্যাপটপে ৫৫ হাজার রোহিঙ্গাকে ভোটার করার ঘটনাটি উদ্ঘাটিত হলে বেকায়দায় পড়েন এই সিনিয়র সচিব। এনআইডি জালিয়াতিতে নির্বাচন কমিশনের পরিচালক খোরশেদ আলমের নামও আসে তদন্তে। আসে কক্সবাজারের পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানসহ দুই ডজনেরও বেশি জনপ্রতিনিধির নাম। এ ঘটনায় ২০টি মামলাও দায়ের করেন মো. শরীফ উদ্দিন। আবার ভূমি অধিগ্রহণের নামে সবচেয়ে বড় জালিয়াতিও হয়েছে কক্সবাজারে। জালিয়াতির ঘটনায় কোনো না কোনোভাবে নাম আসা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা তাই একজোট হয়ে শরীফকে ‘শায়েস্তা’ করার মিশনে নামেন। আর এ মিশনে ব্যবহার করা হয় ওই সিনিয়র সচিবকে। বিভিন্ন সময়ে শরীফের সঙ্গে কথা বলে, দুদকের সংক্ষুব্ধ কর্মীদের দাবি ও মামলার নথি দেখে এমন তথ্যই মিলেছে।
“আমার চাকরিচ্যুতির নেপথ্যে ‘নাটের গুরু’ হিসেবে কাজ করেছেন সরকারের সিনিয়র এক সচিব। তিনি আগে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। এনআইডি জালিয়াতি ধরার পর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় তার। এটির শোধ নিতে অন্য আমলাদের সঙ্গে জোট বাঁধেন তিনি। কমিশনে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ দেন। কক্সবাজারের ভূমি অধিগ্রহণে যেসব প্রভাবশালীর সম্পৃক্ততা পেয়েছি, তাদের বাদ দিতেও চাপ দেন। এ জন্য আমি বদলি হওয়ার আগে কক্সবাজারের ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত ফাইল জমা দিয়ে এলেও তা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে অনেক পরে। আবার ঢাকায় ফাইল আসার পর মামলার কার্যক্রম পুনর্তদন্তে পাঠিয়েছে দুদক। চাকরিচ্যুত করেছে আমাকে। সিনিয়র সচিবসহ আমলাদের চাপেই মূলত নতিস্বীকার করেছে কমিশন।”- নিজের চাকরিচ্যুতির নেপথ্যে সরকারের সিনিয়র এক সচিবকে দায়ী করে সমকালের কাছে এভাবেই বক্তব্য দিয়েছেন সদ্যসাবেক দুদক কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিন। কে এই সিনিয়র সচিব? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘উনি আগে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে ছিলেন। ওনার নিজ বাড়ির এলাকার ইউনিয়নে দুই হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে এনআইডি কার্ড দেওয়া হয়। এখন নির্বাচন কমিশনে নেই তিনি। এ মুহূর্তে ওনার নাম বলতে চাই না। তবে উনি যে নেপথ্যে আমার বিপক্ষে কাজ করেছেন তার তথ্য-প্রমাণ আমার কাছে আছে। কক্সবাজারে হরিলুটের টাকা ওনার স্ত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হতো তৃতীয় একটি পক্ষের মাধ্যমে। সময় হলে সব জানিয়ে দেব জাতিকে।
কেন শরীফের পিছু লাগবেন সিনিয়র এক সচিব? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে সমকাল। খুঁজেছে প্রত্যক্ষ তথ্য-প্রমাণ। মিলেছে ঘটনার পরম্পরাও। কিছু ক্লু দিয়েছেন চাকরিচ্যুত দুদক কর্মকর্তা শরীফও। তিনি জানান, মামলা করার সময় দলিলপত্রাদি যথাযথভাবে সংরক্ষণ করায় প্রভাবশালীরা বেকায়দায় ছিল। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়েও তখন সুবিধা করতে পারছিল না তারা। তাই কক্সবাজারের পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের মাধ্যমে দৃশ্যপটে আসেন সিনিয়র সেই সচিব। নিজেকে আড়ালে রেখে প্রশাসনিক তদবির করতে থাকেন তিনি। এ কারণে কক্সবাজার পৌরসভার পানি শোধনাগার প্রকল্পের মেয়র মুজিবুর রহমানের শ্যালক মো. মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন শরীফ উদ্দিন। জেলা প্রশাসনের যোগসাজশে মিজানুর রহমান ক্ষতিপূরণের সাত কোটি ১৪ লাখ ৮৮ হাজার ৭৮০ টাকা উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ করেন বলে দাবি করেন শরীফ উদ্দিন। ওই অধিগ্রহণকৃত টাকার মধ্যে মেয়রের শ্যালক মিজানের ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক হিসাবে প্রাপ্ত ৪ কোটি টাকার এফডিআর যাতে তিনি উত্তোলন করতে না পারেন, সে জন্য শরীফ উদ্দিন তাতে বিধিনিষেধ দেন। কিন্তু শরীফ চট্টগ্রাম থেকে পটুয়াখালী বদলি হয়ে যাওয়ার পরপরই সেই সিনিয়র সচিবের তদবিরে এ টাকা তুলে ফেলেন মিজানুর রহমান। পৌরসভার পানি শোধনাগারের বিষয়ে শরীফের জব্দকৃত নথিও ফেরত দেওয়া হয়েছে। সিনিয়র সেই সচিব তখন সার্কিট হাউসেও এসেছিলেন।
কক্সবাজারের ঈদগাঁ এলাকার ইসলামাবাদ ইউনিয়নে প্রায় দুই হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশের এনআইডি কার্ড পায়। এ কার্ডগুলোর অনেকগুলোতে প্রত্যয়ন দেন কক্সবাজারের মেয়র মুজিব। আবার সিনিয়র সেই সচিবের বাড়িও ঈদগাঁতে। অবসরের পর সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচনেরও ইচ্ছে আছে তার। নির্বাচনী এলাকায় ভোটব্যাংক তৈরি করতে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেন তিনি। শরীফ উদ্দিন এ জালিয়াতি উদ্ঘাটন করলে তাকে বদলি করতে তৎপর হয়ে ওঠে সেই চক্র। কারণ সিনিয়র সচিব তখন নির্বাচন কমিশনে দায়িত্বে ছিলেন। মেয়র-সচিবের যৌথ উদ্যোগের ঘটনায় মামলা স্বভাবতই ক্ষুব্ধ করে তাদের। তারপরই প্রতিশোধ নিয়ে তারা উঠেপড়ে লাগেন বলে দাবি শরীফের। নির্বাচন কমিশনের শীর্ষ কয়েকটি পদ আমলানির্ভর হওয়ায় সেখানে দাপট খাটাতে থাকেন তিনি। কক্সবাজারের যেসব স্থানীয় আমলা ভূমি অধিগ্রহণের মামলায় কোনো না কোনোভাবে জড়িয়ে গেছেন তারাও শরীফকে সরাতে একাত্ম হন। এ জন্য সিনিয়র সেই সচিব দুদকে গিয়ে কমিশনকে নানাভাবে প্রভাবিত করেছে বলে জানিয়েছেন চাকরিচ্যুত দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন। তিনি আরও জানান, কক্সবাজারের ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত ফাইল যাতে আটকে থাকে সে জন্য আমলারা কক্সবাজারের এক ম্যাজিস্ট্রেটকে দুদক সচিবের পিএস হিসেবেও নিয়োগ দেন।
বক্তব্য জানতে কক্সবাজারের পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ না করে বারবার কেটে দেন। তবে দুদক চট্টগ্রাম কার্যালয়ের আঞ্চলিক পরিচালক মাহমুদ হাসান সমকালকে বলেন, ‘শরীফ উদ্দিনের বিষয়টি কেন্দ্র থেকে মনিটর করা হচ্ছে। আমি এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করব না।’
তথ্য সূত্রঃ দৈনিক সমকাল

ad

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
ad
ad
© All rights reserved 2022
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: সীমান্ত আইটি