সৈয়দ রাসেল, স্টাফ রিপোর্টার:
আগামীকাল মধ্যরাত থেকে শুরু হচ্ছে সাগরে মাছ ধরার উপড় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। প্রতিবছর সামুদ্রিক মাছের বাঁধাহীন প্রজনন ও সংরক্ষনে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আসছে মৎস্য বিভাগ। বছরজুড়ে ইলিশের আকাল তার উপর নিষেধাজ্ঞায় অনেকটা হতাশা প্রকাশ করেছে জেলেসহ মৎস্য আড়তদার ব্যবসায়ীরা। তবে অবরোধকালীন সময়ে নিবন্ধিত জলেদের প্রত্যেককে ৮৬ কেজি করে চাল প্রদানের কথা জানিয়েছে জেলা মৎস্য বিভাগ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ইতিমধ্যে অধিকাংশ ট্রলার মহিপুর ও আলীপুর মৎস্য বন্দরে এসে পৌচেছে। এসব ট্রলারের অনেকে তীরে ছেড়া জাল তুলছেন। কেউবা আবার বিছানা বেডিং নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। অনেকে আবার ট্রলার মেরামতের জন্য ডগে তুলেছেন। কেউবা আবার আড়ৎ ঘাটে লম্বা করে জাল সাজাচ্ছেন সেলাই করার জন্য। তীরে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে এসব জেলেদের অনেকেকেই ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। তবে এবছর কাঙ্খিত ইলিশ ধরা না পড়ায় অনেকে জেলেই পেশা পরিবর্তনের কথা জানিয়েছেন। মৎস্য ভিত্তিক অর্থনীতির সুরক্ষায় এসব জেলেদের পেশা পরিবর্তন রোধে খাদ্য সহায়তার পরিমান বৃদ্ধিসহ আর্থিক সহায়তা প্রদানের দাবী জানিয়েছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা। এছাড়া নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে ভারতীয় জেলেদের আগ্রাসন রোধেও কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
গভীর সমুদ্র থেকে ফেরা এফবি আব্দুল্লাহ-২ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া জানান, সাগরে তেমন মাছ নেই। তাই আগে ভাগেই ট্রলার নিয়ে তীরে ফিরেছি। কিছু ছেড়া জাল রয়েছে। এসব জাল সেলাই করতে ৮ থেকে ১০ দিন সময় লাগবে। তারপর বেকার সময় পার করতে হবে। সরকার আমাদের যে চাল দিবে তা পেতে অনেক সময় লাগবে। আর এছাড়া চাল তুলনায় খুবই কম। এ প্রনোদনা দিয়ে সংসার টিকিয়ে রাখা দায় হবে দাড়াবে। তাই অন্য কাজ করতে হবে। এফবি সোনালী-২ ট্রলারের মাঝি মোস্তফা মিয়া জানান, আমাদের যে প্রনোদনা দেয় তা অবরোধের শুরুতে পেলে অনেকটা সুবিধা হতো। আমরা এ অবরোধকালীন সময়ে মাছ ধরা বন্ধ রাখলেও পাশ্ববর্তী জেলেরা আমাদের জলসীমানায় ঢুকে মাছ ধরে নিয়ে যায়। তাই সরকারকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
কুয়াকাটা-আলীপুর মৎস্য আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি ও লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনসার উদ্দিন মোল্লা জানান, জেলেদের প্রনোদনা বাড়ানোসহ নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে গভীর সাগরে প্রশাসনের টহল বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি। যাতে পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা এদেশের জলসীমানায় প্রবেশ করতে না পারে।
কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, এ অবরোধের পর সাগরে কাঙ্খিত ইলিশ ধরা পড়ার আশা প্রকাশ করছি। এছাড়া এ নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে কর্মহীন ইলিশ শিকারী ১৮,৩০৫ জন জেলেকে দুই ধাপে ৮৬ কেজি করে চাল প্রদান করা হবে।