এম এ বাশার, মহাসচিব বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটি (বিএমএসএস) বর্তমান সময়ের খুব আলোচিত একটি নাম সেন্টমার্টিন। বিভিন্ন ভাবে পর্যটন দ্বীপটি নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজনদের কৌতুহলের শেষ নেই। এদিকে কিছু রাজনৈতিক দলসমূহের জ্ঞানহীন মতামত। মতামত থাকতেই পারে, কারণ গনতান্ত্রিক রাস্ট্র ব্যবস্থার প্রধান দিক হল বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরকারের সমালোচনা করা। ভিন্নমতালম্বী রাজনৈতিক দলের শীর্ষস্থানীয় থেকে অনুসারীদের বক্তব্য সরকার প্রধান বলেছিলেন সেন্টমার্টিন দিয়ে নাকি ক্ষমতায় যাবো না, তবে এখন কি হল? তার মানে আমেরিকার কাছে সেন্টমার্টিন হস্তান্তর প্রক্রিয়া হচ্ছে? আবার কেউ বলছেন সেন্টমার্টিন নিরবে হস্তান্তর হচ্ছে। কেউবা বলছেন সেন্টমার্টিন নিয়ে রাঙামাটি ও রাখাইন ষ্টেট বিভক্ত করে আলাদা খ্রীষ্টান রাস্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে। আসুন আলোচানা করি। বিষয়টি নিয়ে যারা বলছেন সেন্টমার্টিন আমেরিকার কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য বলবো তার মানে সেন্টমার্টিন এমন একটি ভৌগোলিক এরিয়া, সেখানে আমেরিকার মতো একটি রাস্ট্র সেটা নিয়ে একটি রাস্ট্র প্রতিষ্ঠিত করবে। ভুল ধারণা সেটা আমেরিকার মতো রাস্ট্র কখনো করতে যাবে না। তাদের উদ্দেশ্য হলো তারা পৃথিবীর বিভিন্ন রাস্ট্র সমূহের জলপথে ঘাঁটি গাড়ে নিজেদের সামরিক শক্তি বজায় রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন তার অংশ হিসেবে হয়তো সেন্টমার্টিন তাদের পছন্দ। তাদের অর্থনৈতিক অঞ্চল করিডর প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল কিনা জানিনা, যদি কখনো এরূপ চিন্তা ভাবনা বা দাবি দাওয়া করে থাকেন সেখানে বিপত্তি সৃষ্টি হবে। কারণ পার্শ্ববর্তী দেশ হিসেবে পরাশক্তি চীন। চীন কখনো চাইবে না তার ঘরের মধ্যে শত্রুদের ঘাঁটি বা অর্থনৈতিক অঞ্চল করিডর তৈরি করুক। সরকার বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করে, সরকার কখনোই আমেরিকার কাছে সেন্টমার্টিন হস্তান্তর করবেনা। বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ থেকেই বিভিন্ন সময়ে তার বক্তব্যে স্পষ্ট করেছেন। এবার আসি সেন্টমার্টিন রাঙামাটি ও রাখাইন ষ্টেট বিভক্ত করে আলাদা খ্রীষ্টান রাস্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে বা কখনো কি সম্ভব? আপনারা জানেন, রাখাইনরা সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলিম তাদের হাজার বছরের ইতিহাস নিজেদের মাতৃভূমি রক্ষায় বীরদর্পে যুদ্ধ করে যাচ্ছেন। জান্তা সরকারের সশস্ত্র বাহিনীর সাথে তাদের দাবি সমূহ তাঁরা আলাদা রাজ্য গঠন করে স্বাধীন সার্বভৌমত্বের অগ্রযাত্রা গনতান্ত্রিক ধারায় পরিচালিত হবে। মুসলিমরা নির্ভয়ে তাদের মাতৃভূমিতে স্বাধীনভাবে বিচরণ করবে। যেখানে বৌদ্ধদের অধীন থেকে বের হতে যে জাতি দীর্ঘ বছর যুদ্ধ সংগ্রাম করে চলছে সেখানে নাম বিহীন একটি খ্রীষ্টান রাস্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবার কোন অবকাশ নেই বলে মনে করি। এবার আসুন আলোচনা করি, সেন্টমার্টিন আক্রান্ত কেন, এবং সরকারের ভুমিকা কি? সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের অংশ এবং দ্বীপের মোহনায়। টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে যাওয়ার জন্য মায়ানমার অংশের জলসীমানা দিয়ে কয়েক কিলোমিটার পাড়ি দিতে হয়। সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী ময়ানমারের সঙ্গে সাগরের বর্ডার এলাকা সেখানে দীর্ঘদিন পর্যন্ত যুদ্ধ চলছে। যার কারণে বারবার স্থলভাগের মর্টারের শেল, সে দেশের সৈন্য সমূহ বাংলাদেশে প্রবেশ করে তাদের জীবন রক্ষা করেছেন। বার বার তাদেরকে সরকারী পর্যায়ে আবার ফেরত ও পাঠানো হয়েছে। এখানে বাংলাদেশ অংশ দখল করার কিছুই হয়নি। যেহেতু যুদ্ধটি অগ্রসর হয়ে সেন্টমার্টিন এরিয়া থেকে তাদের রাজ্যের ভিতরে ঐ রাজ্যটি দখলে নেবার চেষ্টা করছে জান্তা সরকার আবার আরাকান আর্মি সেটা কে রক্ষায় শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। সেদেশের সরকারি বাহিনী গুলো তাই তাঁদের দেশের জলসীমায় নৌবাহিনীর অবস্থান দেখা যাচ্ছে সেখানে জলভাগে যে কোন সময় বড় কোন হামলা শুরু করতে পারে যে কোন পক্ষ থেকে। যেহেতু তাদের এবং আমাদের জলসীমা কাছাকাছি তাই আমাদের অংশের মানুষের জীবন রক্ষায় সরকার সেন্টমার্টিনে চলাচল সীমিত করেছেন। একটি দেশের স্বাধীন সার্বভৌমত্বের রক্ষায় সরকার যে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন। বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা গভীর ভাবে নজর রেখে চলছে পার্শ্ববর্তী দেশের শত্রু এবং সৈন্যদের কার্যক্রম এর উপর সেগুলো নিয়ে কোন পর্যালোচনা না করে আমারা গুজব ছড়িয়ে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে চলছি। আসুন দেশ কে ভালোবাসি দেশের স্বাধীন সার্বভৌমত্বের রক্ষা করতে দেশ রক্ষা কারী বাহিনীর সদস্যদেরকে সহায়তা করি। কোন গুজব রটাবোনা, গুজবে কান দিব না।
Leave a Reply