সোহেল রানাঃ
কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ও সচিব আশরাফুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ উঠেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিতরণের অপেক্ষায় থাকা ৭২ বস্তা ভিজিডি কার্ডের চাউল আত্নসাৎতের অভিযোগ এনে প্রায় ২৬ ঘন্টা অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন ঐ ইউনিয়নের ইউপি ১১ জন সদস্য।
পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থলে এসে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে তারা অবস্থান ধর্মঘট তুলে নেন।
শুক্রবার(২৭ আগষ্ট) দুপুরে চাকিরপশার ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা যায় ১১ জন ইউপি সদস্য ইউনিয়ন পরিষদের বারান্দায় অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন। ইউপি চেয়ারম্যান এবং ইউপি সচিব ভিজিডি কার্ডের চাউল গুলো বিতরণ না করে গোপনে বিক্রি করে দিয়েছেন। এ নিয়ে চেয়ারম্যান ও সচিবের কাছে একাধিকবার ব্যখ্যা চাওয়া হলেও তাদের পাত্তা দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন ইউপি সদস্যরা।
দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরে তাসনিম। ধর্মঘটে অবস্থান নেয়া ইউপি সদস্যদের সাথে কথা বলে তিনি ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। ইউপি চেয়ারম্যানের অনুপস্থির কারনে তিনি গোডাউন সিলকালার করে দেন। ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে গোডাউন খোলা হবে বলে জানান তিনি।
৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোসলেম উদ্দিন মন্ডল বলেন,চেয়ারম্যান ও ইউপি সচিব গোপনে ৭২ বস্তা চাউল বিক্রি করেছেন। এখন বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে তারা এখন অন্য জায়গার চাল গোডাউনে ঢোকানোর পায়তারা করছে। আমরা সকল সদস্য তাদের বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্ণীতির বিচারের দাবিতে গতকাল সকাল ৯ টা থেকে আমরা অবস্থান ধর্মঘট পালন করছি।’
এর আগে চলতি মাসের গত ২৪ জুলাই ভিত্তিতে ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ও সচিব আশরাফুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির ১০টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনে পরিষদের ১১ জন সদস্য রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত ভাবে অনাস্থা প্রস্তাব দেয়।
অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়,বর্তমান চেয়ারম্যান ৬মাস যাবৎ ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ ও বিশেষ সভা আহবান করেন না।তিনি হোডিং ট্যাক্স,রেট লাইসেন্স,জন্ম নিবন্ধন, সরকারি টাকা আত্মসাৎ ও ভিজিডি কার্ডের অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে যুক্ত। বিভিন্ন খাতের প্রায় ১০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলেও উল্লেখ করা হয় অভিযোগ পত্রে। গত ঈদুল আজহা উপলক্ষে অসহায় দু:স্থদের নামে বরাদ্দকৃত ভিজিএফ চালের তালিকায় মৃত ব্যক্তি জাল সাক্ষর দিয়ে চাল আত্মসাৎ এবং নিয়ম বহির্ভূতভাবে তালিকা করার কথাও উল্লেখ করা হয় অভিযোগপত্রে।
এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরে তাসনিম জানান,
অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি ১০ কার্যদিবসের মধ্যে গঠন করা হবে। তদন্তের পর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে চাকিরপশার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ও সচিব আশরাফুল ইসলাম এর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে ২ জনেই অভিযোগগুলো অস্বীকার করেন।
Leave a Reply