রতন ইনতিসার, বকশীগঞ্জ( জামালুর) প্রতিনিধি।
ঈদে যদি না হয় শাড়ী অর্পূর্ণ হয় নারী ,কথায় বলে শাড়ীতেই নারী ,আর তা যদি হয় জামদানী তাহলে তো কথায় নেই। তাই আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর সামনে রেখে জামালপুরের বকশীগঞ্জ পৌরসভার পাখিমারা জিগাতলা এলাকায় রাত দিন ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকেরা।
বাড়তি আয়ের আশায় দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে জামদানি শাড়ি তৈরি করছেন শ্রমিকরা । তাঁতের খটখট শব্দে এখন মুখরিত পাখিমারা জিগাতলা তাঁতপল্লী । বকশীগঞ্জের পৌর শহরের পাখিমারা জিগাতলা এলাকায় গড়ে উঠেছে দেশীয় তাঁতের জামদানি শাড়ির তাঁতশিল্প। প্রায় শতাধিক তাঁত মালিকের এক সহস্রাধিক মানুষ এই শিল্পের সাথে জড়িত। কেউ বুনছেন বাহারি রঙের শাড়ি, কেউ শাড়ির গায়ে তুলছেন বাহারি রকমের নকশা, বৈচিত্র্যময় ডিজাইন, নজরকাড়া কারুকাজ, নতুনত্বের ছোঁয়ায় তৈরি করার কারণে দেশীয় তৈরি জামদানি শাড়ির প্রতি নারীদের রয়েছে বিশেষ আর্কষণ। কাপড়ের ডিজাইন ও সুতার পার্থক্যভেদে প্রতিটি জামদানি শাড়ি দুই হাজার টাকা থেকে বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তাঁতপল্লীর মালিকেরা।
এছাড়া এ বছর বেনারশি, সিল্ক, জামদানিসহ বিভিন্ন ডিজাইনের শাড়ির চাহিদা বেশি রয়েছে বলেও জানান তারা। চাহিদা বাড়ায় বাড়তি লাভের আশা করছেন তাঁত মালিকরাও। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে বকশীগঞ্জের তাঁতের শাড়ি। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের হাঁকডাকে এবার কারখানার মালিক ও কারিগরদের চোখেমুখে যেন হাসি উঁকিঝুঁকি মারছেএরই মধ্যে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে খরিদদারদের পাশাপাশি খুচরা ক্রেতারাও শাড়ি কিনতে ভিড় করছেন পাখিমারা জিগাতলা তাঁতপল্লীতে।
তাঁত শ্রমিকরা জানান, বাড়তি আয়ের আশায় আমরা ঈদকে সামনে রেখে দিন-রাত এক করে কাজ করছি। যাতে পরিবার-পরিজন নিয়ে একটু আনন্দে ঈদ করতে পারি এটাই আমাদের প্রত্যাশা। এ ব্যাপারে স্বর্ণা জামদানি মালিক হাসান সবুজ জানান, এবার জামদানি শাড়ির চাহিদা বেশি। ব্যবসাও ভালো হচ্ছে। চাহিদার তুলনায় আমরা জোগান দিতে পারছি না।দামি একটি শাড়ি তৈরি করতে নক্শানুযায়ী প্রায় সাত থেকে ১০ দিন সময় লাগে। এছাড়া উচ্চমূল্যে সুতা ও শ্রমিক মজুরি বেড়ে যাওয়ার কারণে শাড়ির দাম বেশি পড়ে। যার কারণে সৌখিন ক্রেতারাই এই শাড়ি ক্রয় করে থাকেন বেশির ভাগ। তবে অন্যবারের তুলনায় এ বছর শাড়ি বেশি বিক্রি হচ্ছে।
বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অহনা জান্নাত জানান, জামদানি একটি বকশীগঞ্জের ঐতিহ্য ও অস্তিত্ব। এ পেশায় জড়িতদের যদি কোন ঋণ ও সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা লাগে যথাসাধ্য চেষ্ঠা করব।
রতন ইনতিসার