মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
ঈদকে সামনে রেখে মোংলায় চলছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিম্নমানের সেমাই তৈরি ও বিপননের রমরমা ব্যবসা। দেশি-বিদেশী ব্র্যান্ডের নামে নকল সেমাই প্যাকেটজাতের ব্যবসাও জমে উঠেছে এখানে। কিন্তু এটা দেখার যাদের দায়িত্ব, তারা চরম উদাসীন হওয়ায় বেপরোয়া হয়ে পড়েছে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার (২এপ্রিল) মোংলা পৌর বাজারে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ভেজাল, বিষাক্ত আর মানহীন সেমাইয়ের ছড়াছড়ি। বিক্রেতারা সেই সেমাই যেমন বিক্রি করেছেন, ক্রেতারাও না বুঝে তা কিনছেন। মান যাচাইয়ের কোন সুযোগ না থাকায় এমনটা হচ্ছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
জানা গেছে, ঈদে সেমাইয়ের ব্যবহার বেড়ে যায় বিপুলভাবে। এ চাহিদা মেটাতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেও গড়ে ওঠে সেমাই কারখানা। মোংলায় এসব কারখানা থেকে প্রতিদিন ভেজাল রং দিয়ে তৈরি হচ্ছে নিম্নমানের সেমাই। যার ৯৫শতাংশের পরিবেশই অস্বাস্থ্যকর।
এদিকে নকল ও ভেজাল সেমাইয়ের ছড়াছড়ি হলেও স্থানীয় প্রশাসনের কোন মাথাব্যথা নেই। এ কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা এবং অপরাধ করছেন।
মোংলা উপজেলা বাজার মনিটরিং কমিটির সদস্য মোঃ নুর আলম শেখ বলেন, এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফা ও লোভের কারণেই দিনে দিনে আমাদেরও মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ছে। এদের মধ্যে কোনো মানবিক বোধ নেই। বরং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিষ্ঠুরতাই কাজ করে। এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। কিন্তু প্রশাসন তা না করায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ শাহীন বলেন, ভেজাল ও বিষাক্ত খাদ্য গ্রহণের ফলে মানবদেহে প্রথমত পেটের পীড়া আর দ্বিতীয়ত অনিরাময়যোগ্য ক্লোন ক্যান্সারের মত মারাত্মক রোগব্যাধী বাসা বাঁধবে। এ রোগ থেকে নিরাময়ের জন্য আর যেন কোনো রাস্তাই খোলা নেই। এসব জটিল ও অনিরাময়যোগ্য কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই অকালে মারা যাবে। এই জটিল রোগ কিংবা অকাল মৃত্যুর জন্য দায়ী কিন্তু মানুষই।
মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান বলেন, পৌর শহরে যেসব কারখানায় অবৈধ ও ভেজাল সেমাই তৈরি হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কখনো বিএসটিআই এবং স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে দেখিনি। অন্তত ঈদকে সামনে রেখে জরুরীভাবে উপজেলা প্রশাসনকে অভিযান চালানোর দাবী করছি।
মোংলা বাজারে ভেজাল ও নকল সেমাইয়ে সয়লাবের বিষয়ে জানাতে চাইলে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নারায়ন চন্দ্র পাল বলেন, এ বিষয়ে তিনি অবগত নন। তবে জনস্বার্থে অনুমোদনবিহীন সেমাই কারখানা এবং ভেজাল সেমাই তৈরীকারীদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।