বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি,সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশ।মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী শাসক গোষ্ঠী জাতিকে ইতিবাচক স্বপ্ন দেখতে ভুলিয়ে দিয়েছিল।হত্যার পিছনে প্রধান উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে এদেশের রাজনীতি থেকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করা।বঙ্গবন্ধুরই সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা ২১ বছর পর রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে জাতিকে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছেন।স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথ দেখিয়েছেন। জাতিকে আবার সাহসী করে তুলেছেন।২০০৭ সালের ১/১১-এ সামরিক বাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে যখন দেশকে বি-রাজনীতিকরণের চেষ্টা করে তখন দেশের মানুষ চাক্ষুষ প্রমাণ পায় বাংলাদেশে একমাত্র সাহসী ও আপসহীন রাজনৈতিক নেতা শেখ হাসিনা।হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি,স্বাধীন বাংলার মহান স্থপতি,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু-কন্যা টানা তৃতীয় মেয়াদে বাংলার মানুষের ম্যান্ডেট নিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত।বাংলার মানুষের কাছে বঙ্গবন্ধু-কন্যার ইমেজ তার প্রতি এ জাতির আস্থা-বিশ্বাস বিশ্বের যেকোনো জনপ্রিয় নেতাকেই হার মানিয়েছে।১৯৮১ সালের ১৭ মে পর্যন্ত এই প্রবাস জীবনে শেখ হাসিনা কখনো রাজনীতি থেকে দূরে থাকেননি।বরং তিনি তখনই যুক্ত হতে চেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনীতির সঙ্গে।আজ ইতিহাস পর্যালোচনা করে বলা যায়,নেত্রী আরও আগে দেশে ফিরলে ইতিহাস ভিন্ন হতে পারতো।গণআন্দোলনের ভেতর দিয়ে যেমন এরশাদের পতন ঘটেছিল,এই পতনটি খুনি জিয়ারও হতো।১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনার দেশে ফেরায় বাংলাদেশে একটা পরিবর্তন শুরু হয়।প্রকাশ্যে যা ঘটেছিল তা ছিল জনসমাগম।প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে সেদিন ঢাকার রাজপথে যে মানুষ নেমে এসেছিল তা একটি গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর জন্য যথেষ্ট ছিল।বিশাল জনসভায় জনগণ শুধু একটি সুরই তুলেছিল:শেখ হাসিনা,শেখ হাসিনা।এর ভেতর দিয়ে চিহ্নিত হয়ে যায় আওয়ামী লীগের কর্মী,সমর্থক এবং স্বাধীনতার পক্ষের মানুষের নেতা আজ থেকে বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা।খুনি জিয়ার আশঙ্কা ছিল বঙ্গবন্ধু-কন্যা বিপুল মানুষকে আজই যেকোনো সংগ্রামের দিকে ঠেলে দিতে পারেন।এই ভয়ে জিয়া পূর্বঘোষিত সব প্রোগ্রাম বাতিল করে ক্যান্টনমেন্টে লুকিয়ে ছিলেন।জিয়া আশঙ্কা করেছিলেন- বঙ্গবন্ধু-কন্যা জনতাকে সহিংস পথে ঠেলে দেবেন,তিনি তা করেননি।জানিয়ে দিয়েছিলেন ‘শোককে শক্তিতে পরিণত করুন‘।
দেশ স্বাধীন করার পর বঙ্গবন্ধু দেশকে আর্থিক মুক্তি দিতে চেয়েছিলেন।কিন্তু চক্রান্তকারীরা সেদিন মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে তাঁর দলেরই একাংশ মোশতাক-জিয়া ও আমলা চাষীর যৌথ নেতৃত্বে দেশকে পেছনের দিকে ঠেলে দিতে চেয়েছে। পঁচাত্তরের ঘৃণ্য হত্যা পরবর্তী একুশ বছর মানুষের মধ্যে সীমাহীন দুর্নীতির বীজ জিয়া-এরশাদ-খালেদা গ্রথিত করে ভোগবাদী সমাজ ব্যবস্থায় শাস্তিহীন সীমাহীন দুর্নীতির ব্যবস্থা করেছিল।আল্লাহর অশেষ রহমতে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা হিংস্র ঘাতকদের হাত থেকে বেঁচে যাওয়ায় ১৯৯৬ সালে প্রথমবার সরকার গঠন করে শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছিলেন সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য রাষ্ট্রনায়োকচিত গুণাবলী তার মধ্যে কেবল বিদ্যমান নয়,বরং সঠিক স্ফুরণ ঘটিয়ে মানুষের মঙ্গল সাধনায় তিনি আলোকোজ্জ্বল পথের দিশারী।বাংলার কোটি মানুষের প্রাণপ্রিয় নেত্রী,আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ তথা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সমুন্নত রেখে অর্থনৈতিক মুক্তির দায়িত্বভার গ্রহণ করে উন্নীত করেছেন বাংলাদেশকে আজ অনন্য উচ্চতায়। বাংলাদেশের অভিবাবক হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার গুরুত্ব অনিবার্য।বাংলাদেশ আজ একটি স্বর্ণালি অধ্যায়ে রয়েছে যার অর্জন শুধু মাত্রই জাতীর পিতার সুযোগ্য কন্যার।আজ দেশের স্বর্ণোজ্জ্বল অধ্যায়ের রচনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভব।কোনো প্রধানমন্ত্রী সৎ ও আন্তরিক থাকলে যে দেশের উন্নয়ন হয় তার প্রমাণ জাতির পিতার কন্যা।শেখ হাসিনা বারবার একটি কথা বলেন, আমরা যেহেতু মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় অর্জন করেছি তাই কোনো বিজয়ী জাতি কখনো মাথা নত করে থাকতে পারে না।এই একটি মন্ত্রই দেশরত্ন শেখ হাসিনার হয়তো মূলমন্ত্র।তাই তো আমরা দেখেছি যুদ্ধাপরাধী,যারা বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাই শুধু করেনি,হত্যা,অগ্নিসংযোগ,লুট ও ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধ করেছিল তাদের বিচার করেছেন তিনি।আর এই বিচার বাধাগ্রস্ত করতে বিএনপি-জামায়াতসহ দেশি-বিদেশি নানা মহল দেশরত্ন শেখ হাসিনার ওপর প্রভাব বিস্তার করতে চেয়েছিল।কিন্তু শেখ হাসিনার দৃঢ়তায় সেটা সম্ভব হয়নি।দেশ ও জাতিকে রক্ষায় করোনাকালে অবিচল,দৃঢ়চেতা নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা একাই লড়াই করে যাচ্ছেন।তবে এই একা লড়াই তার জীবনে প্রথম নয়।বরং সারা জীবন দলে ও দলের বাইরে তাকে মূলত একাই লড়তে হয়েছে।আর এই লড়াইয়ের শুরু তার ছাত্ররাজনীতির জীবন থেকেই।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর জাতির জীবনে আসে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়।স্বামীর উচ্চশিক্ষার কারণে প্রবাসে বসে এ ভয়ানক দুঃসংবাদটি পান বঙ্গবন্ধু-কন্যা।অত্যন্ত বেদনাদায়ক হলেও ভেঙে পড়েননি শেখ হাসিনা।আজ ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায়,সে সময়েও তিনি দেশ ও জাতির জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।বর্তমানে দেশে ডেল্টা প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০৪১ সাল নাগাদ এদেশ উন্নত দেশ হওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছে।কর্মের গুণাবলীতে জাজ্বল্যমান শেখ হাসিনা বিদেশ থেকে নানা সম্মান ও পুরস্কার পেয়েছেন।কিন্তু সবচেয়ে বড় পুরস্কার হচ্ছে সাধারণ মানুষের অন্তরের অন্তস্তলের ভালবাসা এবং সমর্থন।শেখ হাসিনা করোনাকালের প্রথম দিন থেকে সামনে থেকে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি এবং চিকিৎসাসেবা প্রদানের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন।আজকের শেখ হাসিনাকে কঠিন থেকে কঠিনতম সংগ্রামের মুখোমুখি হয়ে ন্যায়ের পথ বেছে নিতে হয়