মোঃ সুমন ইসলাম প্রামানিক ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি
নীলফামারীর ডোমারে বাবা মায়ের কোলে চড়ে ৯ বছর ধরে বিদ্যালয়ে যাচ্ছে শারীরিক প্রতিবন্ধী কামাল(১৭)। প্রতিবন্ধী কামাল উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম বোড়াগাড়ী সবুজপাড়া গ্রামের মো. আফছার আলী ও করিমুন বেগম দম্পতির বড় ছেলে। সে বাড়ির এক কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থানরত পশ্চিম বোড়াগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।
কামালের বাবা জানান, ছেলেটা জন্মের পর ভালো ছিল। দুই বছর পর একদিন হঠাৎ কামালের শরীরে জ্বর আসে। স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা করি, কিন্তু জ্বর কমছে না। পরে ডাক্তার রংপুরে চিকিৎসার জন্যে পাঠালে রংপুর ব্রাক হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে জ¦র কমলেও কামালের হাত পা বাকাঁ হয়ে যায়। ব্র্যাকে ৩ বছর ধরে চিকিৎসা করা হলেও হাত পায়ের হাঁড়গুলো সোজা হয়নি।
সেখানকার ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্যে দিল্লিতে নিয়ে চিকিৎসা করাতে বলেছে। কিন্তু আমার পক্ষে দিল্লিতে চিকিৎসা করা সম্ভব হয়নি। ছেলেটা অর্থের অভাবে প্রতিবন্ধী হয়ে গেল। কামাল স্কুলে পড়ে। আমরা দু’জন মানুষ ( স্বামী-স্ত্রী) যে যেদিন সময় পাই, কোলে নিয়ে কামালের স্কুলে যাওয়া আসা করি। এখন ছেলে বড় হয়েছে, আমাদের কষ্টগুলো বুঝতে শিখেছে। তাই সে নিজেই হুইল চেয়ারে বসে স্কুল যেতে চায়। হুইল চেয়ার কেনার টাকা না থাকায় আমি একটি হুইল চেয়ারের জন্যে ছেলেকে কোলে নিয়ে সরকারী দপ্তরসহ জনপ্রতিনিধিদের কাছে যাচ্ছি। যদি কেউ আমাকে সহযোগীতা করে তাহলে আমার ছেলে চেয়ারে বসে একাই স্কুলে যেতে পারবে বলে ইচ্ছা পোষণ করেন।
কামাল বলেন, দিনমজুর পিতা মাতার সময় নষ্ট করে তাদের কোলে চড়ে বিদ্যালয়ে যেতে চাই না। আমার বিশ্বাস হাত দিয়ে চালানো একটি হুইল চেয়ার হলেই, নিজেই তাহা চালিয়ে বিদ্যালয়সহ চলাফেরা করতে পারবো। কিন্তু কে দেবে আমাকে একটা চলাচলের জন্য হুইল চেয়ার। দিন মজুর বাবা মা ইতিপূর্বেই আমার চিকিৎসার জন্য সহায় সম্ভল শেষ করেছে। এখন প্রত্যহ দিনমুজুরী করে কোনক্রমে সংসার চালায়।