মোঃমাজহারুল ইসলাম মলি
গলাচিপা উপজেলা প্রতিনিধি
একটু সহযোগীতায় মাথা গোজাঁর ঠাই পেলে কোন রকমে জীবন বাচাঁতে পারতাম! এমনি ভাবেই কথা গুলো বলছিলো পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার আমখোলা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের বাশঁবুনিয়া গ্রামের বিধবা এক অসহায় নারী রাসেদা।
আমি পেশা গত একজন গণমাধ্যম কর্মী হিসে একটি অনুসন্ধানে রিপোর্ট তৈরীতে ঐ এলাকায় গিয়েছিলাম। কথা কপথনে জানা হলো, তার মানবতার জীবনযাপনের ইতিহাসের কিছু অংশ পাঠকের কাছে তুলে ধরছি।
রাসিদা, আমখোলা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য শুনেই আমি প্রথমেই অবাক হলাম, একজন ইউপি সদস্যের কোন মাথা গোজাঁর ঠাই নেই! এটা অবিশ্বাস্য মনে হলেও, তার কথা গুলো মন দিয়ে শুনছিলাম। তার স্বামী ছিলেন আওয়ামীলীগের একজন নিবেদিত কর্মী এবং স্থানীয় জনসাধারণের কাছেও ছিলো যথেষ্ট সুপরিচিত।
খোজঁখবর নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় মুদিরহাঠ বাজারের পাশেই অন্যের জমিতি প্রায় বিশ বছর যাবৎ বাসবাস করে জনসাধারণের ভালোবাসা ও বিশ্বাস্য হওয়ার কারনে তাকে প্রায় ১৭'শত ভোটের মাধ্যমে সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
এতেই কাল হয়ে দাড়ায় তার প্রতিদন্ধিদের মাঝে। নির্বাচিত হওয়ার পর পরেই শুরু হয় তার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র। জনসাধারণে সেবা করার পূর্বেই মামলা হামলায় জরিয়ে নানা ভাবে হয়রানী এবং হেনেস্তা যেন তার নিত্যদিনের সাথী হয়ে রইলো। অনেক জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটিয়ে মিথ্যে ও হয়রানী মামলা হামলা থেকে রেহায় পেলেও, ভাগ্যদেবতা যেন তার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন।
শুরু হলো এক মেয়ে আর এক ছেলেকে নিয়ে রাসিদার আর এক নতুন জীবন সংগ্রামের যুদ্ধ। স্বামীর শরীলে ধরা পরলো কঠিন মরণব্যাধি রোগ ফুষ ফুষের ক্যান্সার। এক মাত্র অবলম্বন স্বামীকে বাচাঁনোর মরণপ্রাণ চেষ্টা। নিজের জায়গা জমি বলতে মাত্র তিন শতক জমি। অন্যের সহযোগীতা ধার দেনা করে স্বামীকে বাচাঁনোর চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত তাকেও বিদায় দিতে হয় নাফেরার দেশে। কথা গুলো বলতে বলতে আবেগপ্লুত হওয়ায় আমিও তার কথা গুলো গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনছিলাম।
কথার এ প্রশ্নের মাঝে জান্তে চেয়েছিলাম, তার স্বামীকে কোথায় সমাধিত করছেন? তিনি আমাকে বল্লেন, কোথায় রেখেছি দেখবেন? চিন্তা করে দেখলাম তার কথা গুলো কতটা বাস্তবতা একটু দেখা যাক। মুদিরহাঠ বাজার থেকে আধা কিলো দূরে আমি আর আমার এক গণমাধ্যম কর্মীকে সাথে নিয়ে রওনা হলাম।
প্রথমেই আমি অবাক হলাম একজন সাধারণ ইউপি সদস্যের কোন মাথা গোজাঁর ছায়া নেই! শূন্য ভিটার পাশেই তার স্বামীকে সমাধি করেছেন। স্থানীয় জনসাধারণও আস্তে আস্তে জরো হতে শুরু করছেন, তাদের কাছ থেকেও জানতে পারলাম, এ শূন্য ভিটে ছাড়া তার অবশিষ্ট আর কিছুই নেই জনসাধারণে সুখেদুঃখে পাশে ছিলো, বা এখনো আছে। বর্তমান সরকারতো অনেক অসহায়দের মাথা গোজাঁর ব্যাবস্থা করে দিয়েছে! তার কি একটু মাথা গোজার ব্যাবস্থা হবেনা?
আমি তাতক্ষনিক কোন সদউত্তর না দিতে পারলেও, অন্ততপক্ষে এইটুকু বিশ্বাস করেছি, নিশ্চই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারে আমলে একসকল অসহায় নারীরা বঞ্চিত হবেননা। নিশ্চই গলাচিপা উপজেলা প্রশাসনের সু-দৃষ্টিতে সত্যিই মাথা গোজাঁর ঠাই মিলবে আমার বিশ্বাস।
বিষটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব, আশিষ কুমার কে জানালে, বিষয়টি অবশ্যই খোজঁখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস্ত করেন।
মুজিবর্ষের অঙ্গিকারে দেশের প্রতিটি অসহায় মানুষের ভাগ্যের সুপরিবর্তনে সাথে বিধবা অসহায় নারী রাসেদা বেগমের ভাগ্যে একটু মাথাগোঁজা ঠাই মিলবে, এমনটা আমাদের প্রত্যাশা।