নিজস্ব প্রতিবেদক বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত লাগোয়া কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন, এখানকার সাধারণ মানুষের মূর্তমান আতংকের নাম মুজিবুর রহমান প্রকাশ মুন্না ডাকাত। ৭নং ওয়ার্ডের এই বাসিন্দা স্থানীয়দের কাছে কানা মুইন্ন্যা নামে পরিচিত, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে যার রয়েছে হত্যা,অপহরণ, মাদক, অস্ত্র সহ বিভিন্ন অপরাধে কমপক্ষে ১৮ টি মামলা। দুর্ধর্ষ মুইন্ন্যার অপরাধ জগতের অন্যতম সহযোগী তার নিজের জামাতা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। পুলিশের খাতায় শশুড়ের মতো জাহাঙ্গীরের নাম আছে অপরাধীদের তালিকায়। ঢাকা,চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন থানায় ১২ টি মামলা রয়েছে ভয়ংকর এই প্রতারকের বিরুদ্ধে। ভিন্ন ভিন্ন পরিচয়ে চলে জাহাঙ্গীরের অপকর্ম, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যমতে তার পিতার নাম শহীদুল আলম প্রকাশ আবু বক্কর সাইদুল।জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর এজাহার বিশ্লেষণ করে পাওয়া গেছে তার দুটি ঠিকানা। যার একটি ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের ০৮ নং ওয়ার্ডে (পুর্ব জয় নায়ারণপূর, আশরাফ ভূঞা বাড়ি) এবং অন্যটি নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি দক্ষিণপাড়ায় ( ২নং ওয়ার্ড, ভূঞা বাড়ি)। শশুড়বাড়ির এলাকা পালংখালীতে প্রায় প্রতিনিয়তই দেখা যায় জাহাঙ্গীরকে, মুলত নানা পরিচয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি এবং প্রভাব বিস্তার করে শশুড়ের অবৈধ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে সেখানে চলে তার আনাগোনা। সম্প্রতি পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে পালংখালীতে প্রতারণার সময় জাহাঙ্গীরকে আটক করে স্থানীয় তরুণরা,যদিও শশুড় ও প্রভাবশালী এক রাজনৈতিক নেতার কারণে ঐ ঘটনা থেকে রেহাই পায় সে। এসময় উদ্ধার হওয়া জাহাঙ্গীরের ছবি সম্বলিত ডিএমপি পূর্ব বিভাগ,ট্রাফিক পুলিশের একটি ভুয়া পরিচয়পত্রে পদবী হিসেবে উল্লেখ আছে জোন কমান্ডার। প্রতিবেদকের হাতে আসা পরিচয়পত্রটি যাচাই করে দেখা যায়, উপরের অংশে লেখা আছে 'বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন'। কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) জসীম উদ্দিন চৌধুরী জানান, " পরিচয়পত্রটি ভুয়া,এডিট করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে বানানো হয়েছে। যে ব্যক্তি এটি ব্যবহার করছে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" জাহাঙ্গীর নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে লিখে রেখেছেন তিনি জাতীয় দৈনিক যায়যায়দিনের বিশেষ প্রতিবেদক। পুলিশ, কারারক্ষী, প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতা সহ বিভিন্ন জনের সাথে নিজের ছবি হরহামেশা আপলোড করেন নিজের প্রোফাইলে। এসব ছবিকে প্রতারণার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে সাংবাদিক পরিচয়ে মোটা অংকের চাঁদা দাবী করার অভিযোগ আছে বহুরূপী এই প্রতারকের বিরুদ্ধে। নিজের এসব অপকর্ম প্রকাশ্যে আসার পর প্রতিবাদ করা পালংখালীর স্থানীয় তরুণদের মধ্যে এক যুবককে জাহাঙ্গীর নিয়মিত হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন, দেখাচ্ছেন ভয়ভীতি। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ঐ যুবক উখিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ প্রসঙ্গে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামীম হোসাইন বলেন, " অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। প্রমাণ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। " অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরের মুঠোফোনে বারবার কল দিয়েও সংযোগ পাওয়া যায়নি।