এম.ডি. শাহিন: লালমোহন(ভোলা) সংবাদদাতাঃ ভোলা লালমোহনের বেতুয়া খালে (সাবেক বেতুয়া নদী) এখন রাজত্ব করছে কচুরিপানা। মেঘনা নদীর উপশাখা এ খালটিতে অবৈধ বিহন্দি জাল, বের জাল ও খুছি জাল বসিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে রেখেছে কতিপয় অসাধু ব্যক্তি। পুরনো এ বেতুয়া খালের রমাগঞ্জ ও ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের মধ্যবর্তী রায়চাঁদ বাজার থেকে উত্তর দিকে আজাহার রোড ও চতলা বাজার ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক অবৈধ জাল বসিয়ে মাছ শিকার করছে অভিযুক্তরা। শুষ্ক মৌসুমে কচুরিপানা পচে পানি দুর্গন্ধ ছড়ায়। ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর আবর্জনা মিশ্রিত পানির দুর্গন্ধকেও হার মানিয়, এ বেতুয়ার পানি। দু কুলের মানুষ ও পথচারীরা নাক বন্ধ করে হাটতে হয় এখানে দিয়ে। যার কারনে নানান প্রকার রোগের সৃষ্টি হয়।
সরেজমিন জানা যায়, এ খাল দিয়ে এক সময় লঞ্চ, স্টিমার, বোট, ট্রলার ও গয়না যাতায়াত করত। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ব্যবসায়ীরা তাদের সব ধরনের মালামাল এ বেতুয়া খাল ( কাগজপত্রে সাবেক নদী) দিয়ে পরিবহন করত। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে অবৈধ জালের কারণে এবং খনন না করায় জোয়ার ভাটার পানি চলাচলে বাঁধার সৃষ্টি হওয়ায় ভাসমান কচুরিপানাগুলো চলাচল না করতে পারায় এখন গজিয়ে স্থায়ী হয়ে উঠেছে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ দিনের ভারীবর্ষণে বেতুয়ার দু’কূলের শত শত একর ফসলি জমি, সবজি খামার, পুকুর এবং বসতিঘর, বাগান, মাছের ঘের পানির নিচে তলিয়ে গেছে। উপকূলীয় এলাকার কৃষকদের জন্য আষাঢ় ও শ্রাবণ মাস হলো আমন ধানের বীজ ও চারা বপনের সময়। কিন্তু এবছর ভারী বর্ষণে আমনের বীজ নষ্ট হওয়ায় দেরিতে রোপণ করেছেন আমনের চারা।
উপজেলার সাতদরুন বিলের আমন চাষি নুরনবী , জাহাঙ্গীর ,মহিউদ্দিন, সিদ্দিক,আব্দুল কাদের মিয়াসহ একাধিক কৃষকের সাথে কথা হলে তারা জানান, এ বছর আমন ধানের বীজ বপনের পর ভারী বর্ষণের কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। তাই তারা চারা কিনে অনেক দেরিতে আমনের চারা রোপণ করেছেন, জমিনে জলাবদ্ধ হয়ে রয়েছে বেতুয়ার পানি না সরার কারণে। দেরিতে আমনের চারা রোপণ করায় বিভিন্ন পোকা রোগও দেখা দিচ্ছে।
সূত্র জানায়, প্রতি বছর এ বেতুয়া খালে সরকারিভাবে মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। কিন্তু বের জাল বসিয়ে অবমুক্ত করা মাছের পোনা অবাধে নিধন করে যাচ্ছেন স্থানীয় জসীম, আলম মাঝি, মিলন, মোতাহার, নুর আলম, মনজু, নিরব, বশিরসহ অনেকে, যা সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছে।
স্থানীয়দের দাবি, কর্তৃপক্ষ যেন বেতুয়া খালের সব ধরনের অবৈধ শত শত জাল অপসারণের ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
লর্ডহার্ডঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ আবুল কাশেম মিয়া বলেন, আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বেতুয়ার খালের অবৈধ জালের ব্যাপারে অবগত করবো।