হাকিকুল ইসলাম খোকন ,সিনিয়র প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতিবছর মাথাপিছু ১৫০ কিলোগ্রাম এবং সর্বমোট ২২ দশমিক ৪ মিলিয়ন টন বর্জ্য উৎপন্ন হচ্ছে, যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে ২০২৫ সাল নাগাদ মাথাপিছু বর্জ্য সৃষ্টির হার হবে ২২০ কিলোগ্রাম এবং সর্বমোট বর্জ উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ৪৭ হাজার ৬৪ টনে; যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে পড়বে।খবর বাপসনিউজ।
গত শনিবার ২৬ ফেব্রুয়ারি কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওর (কাপ)-এর সভাকক্ষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০২১ নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময়সভায় এসব সুপারিশ তুলে ধরা হয়। কাপের নির্বাহী পরিচালক খোন্দকার রেবেকা সান-ইয়াতের সভাপতিত্বে সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন উন্নয়ন সংস্থা ইসাইটের ম্যানেজার নিগার রহমান। আলোচনায় অংশ নেন উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের আমিনুর রসুল বাবুল, সিনিয়র সাংবাদিক আশীষ কুমার দে ও সাকিলা পারভীন, কাপের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাহবুব হক প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, রাজধানীর গৃহস্থালির বর্জ্য (কঠিন বর্জ্য) অপসারণে সমন্বিত পরিকল্পনা না থাকায় স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। আর যথাযথ তদারকির অভাবে বিদ্যমান আইন ও বিধিমালা কার্যকর হচ্ছে না। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ফেরাতে ও পরিবেশ সুরক্ষায় তদারকি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা। তারা পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা, ১৯৯৭ অনুযায়ী প্রাথমিক বর্জ্য সংগ্রহ; পরিবহন, সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন এর কার্যক্রম পরিচালনায় পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা, পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা, ১৯৯৭ এর আওতায় সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন এর গন্ধ পরিমাপের মানমাত্রা নির্ধারণ করা, জাতীয়বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিটিতে বস্তিবাসী ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সাথে সম্পৃক্ত শ্রমিকদের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা, বিধিমালা বাস্তবায়নের জন্য গাইডলাইন প্রনয়ণকরার সুপারিশ তুলে ধরেন।
সভায় বক্তারা আরো বলেন, জলবায়ু অভিযোজনে বাংলাদেশ যেমন রোল মডেল, তেমনি বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিশ্বের কাছে রোল মডেল হওয়ার সুযোগ বাংলাদেশের আছে। আমাদের মোট উৎপাদিত বর্জ্যের সিংহভাগই গৃহস্থালির বর্জ্য। এটা থেকে চাইলেই আমরা সার, গ্যাস ও বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারি।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকতে হবে। পেশাদার কর্মীদের দিয়ে রাজধানীর বাসাবাড়ির বর্জ্য অপসারণ করতে হবে। বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর স্ব স্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বর্জ্য অপসারণের কর্মকৌশল নির্ধারণ করতে হবে। এ ছাড়া পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা, ১৯৯৭ অনুযায়ী প্রাথমিক বর্জ্য সংগ্রহ, পরিবহন এবং সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশনের কার্যক্রম পরিচালনায় পরিবেশ ছাড়পত্র সংগ্রহ বাধ্যতামূলক করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তারা।