কয়রা(খুলনা)প্রতিনিধিঃ ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার মানুষের জন্য জরুরি প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা এবং ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। শুক্রবার (৩১মে) সকাল থেকে দিনব্যাপী খুলনার কয়রা উপজেলার সুন্দরবনের কোল ঘেঁষা পাথরখালি ও দক্ষিণবেদ কাশী এলাকায় গণস্বাস্থ্যের অন্যতম প্রতিষ্ঠাকালীন ট্রাস্টি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. নাজিমুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে এ ত্রাণ বিতরণ ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ঝড় কবলিত প্রায় ১সহস্রাধিক পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার এবং ৬০০ জনকে ফ্রি ওষুধ সহ স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে গণস্বাস্থ্যের ডাক্তার ও স্বেচ্ছাসেবকগণ। এছাড়া একই সময়ে বাগেরহাটের মংলা এবং রামপাল এলাকায়ও স্বাস্থ্য সেবা ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন তারা। ফ্রিতে চিকিৎসা নিতে আসা মিতা রাণী বিশ্বাস নামের বিধবা বৃদ্ধা খাবার সামগ্রী পেয়ে বলেন, 'আমাদের ঘর বাড়ি ভাংগে গেছে, দুইদিন না খেয়েছিলাম। এহনো ওয়াপদা থাকি খাবার পাইনা। আজকে ঔষধ আর খাবার পেয়ে মেলা খুশি আমরা। আশির্বাদ করি গণস্বাস্থ্যের প্রতি।' ডা. নাজিমুদ্দিন ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্দেশ্যে খাবার সামগ্রী বিতরণের সময় বলেন, জনতার সেবার জন্য প্রতিষ্ঠিত গণস্বাস্থ্য সব সময় সব দূর্যোগে সাধারণ মানুষের পাশে ছিল। আজকে এগুলো ত্রাণের খাবার বলে মনে করবেননা দয়া করে। এগুলো শুধুমাত্র আপনাদের জন্য উপহার স্বরুপ ভাই বোনের বিপদে পাশে থাকার চেষ্টা করেছি মাত্র। তিনি আরও বলেন, ১৯৮৫ এর ঝড়ে উড়ির চরে সেনাবাহিনীর আগেই আমি আর জাফরুল্লাহ চৌধুরী গণস্বাস্থ্যের স্বেচ্ছাসেবকদের একসাথে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে ছুটে গিয়েছিলাম চিকিৎসা আর খাবার সামগ্রী নিয়ে। সেই থেকে শুরু করে আমরা গণস্বাস্থ্য থেকে আজও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের পাশাপাশি দূর্গত মানুষের মাঝে চিড়া, গুড়, স্যালাইন ও বিশুদ্ধ পানিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করার পাশাপাশি জনমানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র বলে আশ্বাস দেন সংশ্লিষ্টরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডেপুটি সি,ই,ও ডাঃ সোহেল আহমেদ, ডেপুটি অর্থ পরিচালক রাসেল আহমেদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অর্থ বিভাগের উপপরিচালক শেখ কবীর, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ হাসানুর রহমান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল টিম ও ত্রাণ কমিটির সমন্বয়কারী ডাঃ মাহবুব জোবায়ের সোহাগ সহ মাইক্রোবায়োলজিস্ট ও জিকের বারোবাড়িয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রকল্প ব্যবস্থাপক জুয়েল রানা নজরুল সহ তিনজন ডাক্তার, ইন্টার্ন এমবিবিএস ডাক্তার ও ভেটেরিনারিয়ান, স্বাস্থ্যকর্মী সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সামাজিক সংগঠন বেদকাশী পাথরখালী মিলনী যুব সংঘের স্বেচ্ছাসেবীরা। উল্লেখ্য, ২৬ ও ২৭ মে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় রেমালে খুলনা, বাগেরহাট এবং সাতক্ষীরা ভোলা বরগুনা সহ বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ঘর বাড়ি ক্ষেত খামার হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ। তখন থেকেই দক্ষিনাঞ্চলের অন্তত ৫টি জেলার ১২ টি ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলায় মেডিকেল টিম গঠন করে দুর্গত মানুষদের জরুরি প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সেবা দিয়ে দিয়ে যাচ্ছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। ফরহাদ হোসেন কয়রা খুলনা তাং ৩১-৫-২৪ইং ০১৯৯৫৩৮০২৬৯