সিলেট ব্যুরোঃ
সিলেটে করোনার টিকার নিবন্ধনে এসে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন প্রবাসীরা। কেউ কেউ গেলো টানা ৩ দিনে এসেও পারেননি নিবন্ধন করতে। আবার কারো কারো কাছ থেকে দাদাল চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে অতিরিক্ত টকা। এমন অবস্থায় প্রবাসীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
রোববার লকডাউনের চতুর্থদিন উপশহর সি ব্লকের ৪১ নম্বর সড়কের জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে গিয়ে দেখা যায় প্রবাসীদের উপচে পড়া ভিড়। কেউ মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। দীর্ঘ অপেক্ষা করে কেউ কেউ ক্লান্ত। বসে আছেন বিচ্ছিন্ন ভাবে।
এসময় সেলিম আহমদ নামের এক প্রবাসী সিলেট ভয়েসকে জানান,গেলো শুক্রবার থেকে তিনি প্রতিদিন সিলেটের জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোতে আসলেও এখনো পারেননি নিবন্ধন সম্পন্ন করতে।
অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন লাইনে। সেই সাথে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর কোন সদস্য না থাকায় গাদাগাদির কারণে টিকার নিবন্ধন করতে এসে করোনা সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে বলেও জানান তিনি।
কাইয়ুম নামের আরও এক প্রবাসী বলেন, একটি সিণ্ডিকেট সক্রিয় কাজ করছে। অন্য কোথাও থেকে বিকাশে টাকা দিতে চাইলেও নেটওয়ার্ক সমস্যা দেখিয়ে তা হচ্ছে না।
আর কর্মসংস্থান অফিসের কাছের সকল দোকান থেকে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।
তবে সিলেট জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মীর কামাল হোসেন বলেন, প্রবাসীদের কাজ যাতে দ্রুত সম্পন্ন হয় সেজন্য গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
শনিবার (৩ জুলাই) টিকা নেয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন ৩৬৪ জন।
এমআরপি পাসপোর্টধারী প্রবাসীদের টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পেমেন্ট দেয়া হচ্ছে। ভোগান্তি এড়াতে যেকেউ চাইলে ‘আমি প্রবাসী অ্যাপের’ মাধ্যমে খুব সহজেই নিবন্ধন করতে পারবেন। যাদের পাসপার্ট ও ভিসা আছে শুধু তাদেরকে নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তবে কোন সিণ্ডিকেট বা অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কোন অভিযোগ তার কাছে আসেনি বলে জানান জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মীর কামালহোসেন।
এদিকে জনশক্তি ও কর্মসংস্থান অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ২ জুলাই থেকে চালু হওয়া সিলেটসহ দেশের ৪২টি জনশক্তি অফিস, ৯টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং ১টি মেরিন টেকনোলজি ইন্সটিটিউটে অথবা ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপে বিএমইটির এই রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চলবে।
প্রবাসী কর্মীদের কর্মস্থলে গমন নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত করতে বিদেশগামী কর্মীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নকল্পে বয়স প্রমার্জন ও অগ্রাধিকার পাওয়ার লক্ষ্যে যেসব কর্মীর বিএমইটির ডাটাবেজে নিবন্ধন ও স্মার্ট কার্ড নেই অথবা চলতি বছরের গত ১ জানুয়ারির পূর্বের বিএমইটির স্মার্ট কার্ড আছে সে সব কর্মীর টিকার জন্য সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধনের সুবিধার্থে বৈধ পাসপোর্ট দিয়ে ২ জুলাই থেকে বিএমইটির ডাটাবেজে নিবন্ধন করতে হবে। তবে জানুয়ারি থেকে নিবন্ধিত কর্মীদের নতুনভাবে নিবন্ধনের প্রয়োজন হবে না।
বিএমইটির ডাটাবেজে নিবন্ধিত কর্মীরা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রাপ্তির লক্ষ্যে সুরক্ষা এপস বা surokkha.gov.bd এর মাধ্যমে জরুরিভাবে টিকা গ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। surokkha App এ রেজিস্ট্রেশন সফল হলে মোবাইল ফোনে এসএমএস এর মাধ্যমে টিকা সেন্টার ও টিকার তারিখ জানা যাবে। এ সংক্রান্ত মেসেজ না পাওয়া পর্যন্ত বিদেশগামী কর্মীদের কোনো হাসপাতাল, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বিএমইটি বা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করে জমায়েত হয়ে টিকা গ্রহণের কোন সুযোগ নেই বলে জানান জনশক্তি ও কর্মসংস্থান অফিস।
Leave a Reply