সৈয়দ মো. রাসেল, স্টাফ রিপোর্টার:
পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌরশহরের আন্ধারমানিক নদী তীরে নৌ যান থেকে পন্য কিংবা মালামাল ওঠা নামা করালেই এখন দিতে হচ্ছে নির্দিষ্ট অংকের টাকা। আর এ টাকা আদায় করা হচ্ছে ব্যবসায়ী ও গ্রামগঞ্জ থেকে শহরে হাট বাজার করতে আসা সাধারন মানুষের কাছ থেকে। এমনকি পৌরসভার বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশন ব্যবহার না করে নদীর পাড়ে ব্যবসায়ীদের তৈরী নিজস্ব জেটি দিয়ে পন্য ওঠা নামা করালেও মেয়র অনুসারী ইজারাদার টোলের নামে টাকা আদায় করে নিচ্ছে। এতে বিক্ষুব্দ ব্যবসায়ীরা হয় বিষয়টি সমাধান নতুবা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তালা মেরে বন্ধ করে দিতে অনুরোধ জানিয়েছেন পৌর কর্তৃপক্ষকে। তবে বোট ল্যন্ডিং ষ্টেশন ব্যবহার না করলে টোল আদায় করা হচ্ছে না এমন দাবী পৌরসভা কর্তৃপক্ষের। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন।
জানা যায়, শহরের আন্ধারমানিক নদী তীরে লঞ্চ টার্মিনাল ঘাট, খেয়া ঘাট, ফেরী ঘাট ব্যবহার করে নৌযান গুলো মানুষ কিংবা পন্য ওঠা নামা করালে সংশ্লিষ্ট ঘাট ইজারাদারকে সহনীয় টোল দিয়ে অভ্যস্ত ছিল সাধারন মানুষ ও ব্যবসায়ীরা। এবছর পৌরসভা থেকে বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশন নামে ইজারা নেয় মেয়র অনুসারী পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি শুভ ও তার সহযোগীরা। আর এ ইজারা নেয়া হয় মেয়র অনুসারী যুবলীগ নেতা গাজী মশিউর রহমান মামুনের নামে। চলতি মাসের ১৩ তারিখ পৌর মেয়র ও নির্বাহী প্রকৌশলী বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশন’র ইজারার টোলের মূল্য/হারে স্বাক্ষর করেন। এরপর বেপরোয়া হয়ে ওঠে ইজারাদার। পৌর সভার বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশন ব্যবহার না করলেও পৌরশহরের সীমানার মধ্যে নদী তীর ব্যবহার করে পন্য ওঠা নামা করালে টোল আদায় শুরু করেন তারা। এমনকি ব্যবসায়ীদের কাছে পন্যের ওজন ও বস্তা প্রতি টোল দাবী করেন তারা। তাদের এ ইজারা আদায়ের সীমানা নির্ধারিত না থাকায় ব্যবসায়ীদের কাছে তাদের টোল দাবীর বিষয়টি অযৌক্তিক বলে বিবেচ্য হওয়ায় সংক্ষব্ধ হয়ে পৌর কর্তৃপক্ষকে অবগত করেন তারা।
একাধিক ব্যবসায়ীর অভিযোগ, মেয়র অনুসারী ক’জন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশন’র ইজারা নিয়ে ব্যবসায়ী ও সাধারন মানুষের উপর আর্থিক নির্যাতন শুরু করেছে। এ বিষয়টি ব্যবসায়ী সমিতি নেতৃবৃন্দ সহ স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশন’র ইজারাদার গাজী মশিউর রহমান মামুন বলেন, ’আমার নামে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকায় বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশন’র এক বছরের ইজারা নেয় পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি শুভ। যা ভ্যাট, ট্যাক্স নিয়ে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ইজারা মূল্য পড়েছে। তার দাবী বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশন ছাড়া অন্য কোথাও থেকে ইজারা আদায় করা হচ্ছে না।’
পৌরসভার সচিব মো: হুমায়ুন কবিরের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশন ইজারা সংক্রান্ত কোন বিষয় অবগত নন, তবে নির্বাহী প্রকৌশলী সব জানেন বলে জানান।
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী ধ্রুব লাল দত্ত বলেন, ’এবছর পৌরসভা থেকে বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশন’র ইজারা দেয়া হয়েছে। ইজারা মূল্য অনুযায়ী বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশন ব্যবহারকারী নৌযান সমূহ থেকে টোল আদায় করা হচ্ছে বলে দাবী করেন তিনি।’
কলাপাড়া বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দিদার উদ্দীন আহমেদ ও সম্পাদক ফিরোজ সিকদার বলেন, ’একাধিক ব্যবসায়ী তাদের কাছে এ সংক্রান্ত অভিযোগ দিয়েছেন। ঈদের পর পৌর প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের মধ্যস্ততায় ব্যবসায়ী সমিতি এর সমাধান চায়। নতুবা তাদের শান্তিপূর্ন আন্দোলনে যেতে হবে।’