কুষ্টিয়ার কলেজ মোড়ে কৃত্রিম যানজট:চরম দুর্ভোগে পথচারীর
প্রকাশিতঃ২৭/০১/২১ ইং
জেলা প্রতিনিধিঃ প্রথম-প্রথম যে-কেউ দেখে মনে করবে মোটর সাইকেলের গ্যারেজ।পুরো ফুটপাত জুড়ে সুসজ্জিতভাবে অন্তত ৩০০ মোটর সাইকেল।ফুটপাত পূর্ণ হলে ধীরে ধীরে রাখা শুরু হয় রাস্তায়। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন ফাস্ট ফুডের দোকান।এ চিত্র কুষ্টিয়া শহরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা কলেজ মোড়ের!
পথচারীরা ফুটপাতে হাঁটার জায়গা না পেয়ে বাধ্য হয়ে মাঝ রাস্তা দিয়ে হাঁটতে গিয়ে নানা রকম দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। অটোরিকশা, রিক্সা,ভ্যান ও চলমান মোটর বাইকের ধাক্কায় আহত হচ্ছে।তাছাড়া কলেজ মোড়ের ওই রাস্তায় বেশিরভাগই রোগ নির্ণয় করতে আসা রোগীদের যাতায়াত। ইচ্ছাকৃতভাবে মানব সৃষ্ট এ যানজট রোগীদের যন্ত্রণার মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে আরও বহুগুণ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আমিন,পপুলার ও সনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনের ফুটপাতে ও রাস্তায় এলোমেলোভাবে অন্তত ৩০০ মোটর সাইকেল রাখা।সরকারি কলেজের কোল ঘেষে রয়েছে কুষ্টিয়ার বিখ্যাত হালিম,ফল সহ বিভিন্ন ফাস্টফুড ও চিতই পিঠার দোকান।সেখানে জটলা পাকিয়ে চলছে খাওয়া-দাওয়া।
ওই রাস্তা দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী কয়েকজন পথচারী বলেন,আমরা প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করছি।এখানে যেসব গাড়ীগুলো থাকে তা সবই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আসা ব্যক্তিদের।তাছাড়া রাস্তার মাঝে এ্যাম্বুলেন্স দাঁড় করিয়ে রোগী ওঠানামা করাই ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো।তখনও প্রচন্ড যানজটের সৃষ্টি হয়।তাছাড়া ওই দোকানগুলোতে জটলা পাকিয়ে খাওয়া দাওয়া করার কারণেও অনেক সমস্যা হয়।জেলা প্রশাসন,পুলিশ প্রশাসন বা পৌর কর্তৃপক্ষ কখনোই এ সমস্যা নিয়ে কখনো ভাবে না বা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে না।
এ ব্যাপারে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার মোহাম্মদ রেজাউল করিম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মোটর সাইকেল গুলি ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের। নিষেধ করলেও প্রতিনিয়ত তাঁরা সেখানেই গাড়ি পার্কিং করে। পার্কিং নিষেধ বলে দুইটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছি তারপরও তারা ফুটপাতের উপর মটর সাইকেল পার্কিং করে।
কুষ্টিয়া কলেজ মোড় সমিতির সেক্রেটারি আশরাফুল হোসেন বলেন, আমি অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু এটা বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। এমন কি বাঁশ ও দড়ি কিনেছিলাম ঘিরে দেওয়ার জন্য যেন ফুটপাতের উপরে গাড়ি তুলতে না পারে। কিন্তু আমিন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক আরজু আমাকে বাধা প্রদান করে।
আমিন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর শাজাহান আনসারী আরজু বলেন, মোটরসাইকেগুলো ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের। তাদেরকে মোটরসাইকেল রাখতে নিষেধ করলেও তারা শোনে না। আমি আগামীকাল থেকে আমার প্রতিষ্ঠানের সামনে যেন মোটরসাইকেল না রাখে সে দিকে খেয়াল রাখব। কুষ্টিয়া কলেজ মোড় সমিতির সেক্রেটারির বাঁশ ও দড়ি দিয়ে ফুটপাত ঘেরার ব্যবস্থায় তাঁর বাধা প্রদানের কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি ফোন কেটে দেন।
কুষ্টিয়ার সচেতন মহলের অনেকেই মনে করেন, কলেজ মোড়ে অবস্থিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে আগত রোগীদের গাড়ীগুলো পার্কিং বা রোগী ওঠানামা করার জন্য ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর নিজস্ব কোনো জায়গা না থাকার কারণেই এই জন দুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে। জেলা প্রশাসন ও পৌর প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে যদি তাঁদের গাড়ী পার্কিং-এর জায়গা করতে বাধ্য করা যায় তবে এ জন দূর্ভোগের মুক্তি মিলবে।
এছাড়া পথচারীরাও প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে আসা রোগীবাহী গাড়ী ও কোম্পানির প্রতিনিধিদের মোটরসাইকেল গুলো পার্কিং করার জন্য ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো যেন নিজস্ব পার্কিং পজিশনের ব্যবস্থা করে সে ব্যাপারে নজরদারি করার জোর দাবি জানান।একই সাথে ফুটপাতের দোকানগুলোও উচ্ছেদ করার আহ্বান জানান তাঁরা।
Leave a Reply