বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি-
প্রাইভেট কারে করে ডাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে প্রাইভেট কারের মূখোমূখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় প্রাইভেট কারে থাকা তিন যাত্রী ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছেন। নিহত স্বজনদের দাবি রেল কর্তৃপক্ষের উদাসিনতায় এমন ঘটনা ঘটেছে।
(০২ জানুয়ারি) গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বিরামপুর উপজেলার দিনাজপুর- গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কে ঘোড়াঘাট রেলগুমটি নামকস্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। তারা হলেন, রংপুর বদরগঞ্জ উপজেলার সর্দারপাড়া এলাকার ইসলাম হোসেনের ছেলে মাসুম হোসেন (৪৪), পার্বতীপুর উপজেলার শাহপাড়া খাগড়াবান্দ এলাকার আব্দুল হালিম শাহার ছেলে হাফিজুর রহমান শাহ (৩৯)। আব্দুল আজিজ এর পুত্র সুজন (৪৪)গ্রাম লোহানী থানা বদরগঞ্জ নিহতের স্বজরা জানান, তারা পার্বতীপুর মধ্যপাড়া পাথরখনিতে বিভিন্ন পেশায় চাকুরি করছিলেন। সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার সহকারি পুলিশ সুপার (সদর) তবারক আলী সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ৬টায় দিকে একটি প্রাইভেট কার করে (ঢাকা মেট্রো- ক-১১-২৩৩২) জয়পুরহাট বিআরটিএ অফিসে ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য যাচ্ছিল। ঘন কুয়াশার ফলে কিছু দেখতে না পেয়ে কারের চালক রেলক্রসিংয়ের উপর গাড়ি তুলে দেন। এসময় ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রাইভেট কারকে ধাক্কা দেয়।এতে ঘটনাস্থলেই তিন ব্যক্তি মারা যান।
নিহত হাফিজুর রহমানের মামাতো ভাই রায়হান বলেন, হাফিজুর রহমান জয়পুরহাট বিআরটিএ অফিসে ড্রাইভিং লাইন্সেসের পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিল। ভাই মধ্যপাড়া পাথর খনিতে চাকুরি করতেন। মহাসড়কে ব্যরিয়ার থাকলে হয়তো এমন ঘটনা ঘটতনা।রেল কর্তৃপক্ষের উদাসিনতায় এমন ঘটনা ঘটেছে।
গেট নং ই/১০১ সি স্থানের রেলওয়ের গেটম্যান হিসেবে দায়িত্বে থাকা সাইফুজ্জামান বলেন, সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কুড়িগ্রাম গামী কুড়িগ্রাম এক্সেপ্রেস ট্রেনটি আসতেছিল। এসময় মহাসড়কে ব্যরিয়ার না থাকায় দড়ি দিয়ে গাড়ি পারাপার বন্ধ করা হয়। কুয়াশাই প্রাইভেট কারটি দ্রুত ওই এলাকায় প্রবেশ করলে দড়ি ছিড়ে লাইনের ওপর উঠে যায়। মূহুত্বেই ট্রেনটি কারে ধাক্কা দিলে প্রায় ১শ হাত দূরে ছিটকে যায়। এতে কারের তিনজন ব্যক্তি নিহত হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিনাজপুর- গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কের ওই স্থানে প্রায় ৭দিন থেকে ট্রেন আসার সময় মহাসড়কের দ্রুতগামী পরিবহন গুলোকে থাকানোর জন্য যে ব্যরিয়ারটি ব্যবহার করা হয় সেটি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। ফলে কয়েকদিন থেকে ওই স্থানে ব্যরিয়ারের পরিবর্তে দড়ি দিয়ে ট্রেন আসার সময় রাস্তায় দ্রুতগামী পরিবহন গুলোকে থাকানো হয়।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ দিনাজপুর থেকে-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়ক প্রসস্ত করার কাজ প্রায় শেষ দিকে কিন্তু ঘোড়াঘাট রেলগুমটি এই এলাকায় রেলের পাশে রাস্তাটি আগের অবস্থানেই রয়েছে। ফলে প্রায়ই যানজট লেগে থাকে। এছাড়াও বিরামপুরে স্থায়ীভাবে ট্রাক টার্মিনাল না থাকায় সেখানে শত শত ট্রাক রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকে। এতে করে প্রসন্ত রাস্তাটি ছোট হয়ে যায়। ফলে প্রায় এই রাস্তাটিতে দূর্ঘটনা ঘটে।
এদিকে জিআরপি পার্বতীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন হোসেন বলেন, কুড়িগ্রাম ট্রেনের সঙ্গে প্রাইভেট কারের সংর্ঘষের ঘটনায় তিন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।আমরা দ্রুদত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মরদেহগুলো উদ্ধার করেছে। নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্তের কাজ চলছে। খুব দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জানতে চাইলে বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পরিমল কুমার সরকার বলেন, মহাসড়কে ইতোমধ্যে নতুন ব্যরিয়ার লাগানোর কাজ চলছে।
Leave a Reply