আসিফ জাহান
বিশেষ প্রতিনিধি কুলাউড়া
কুলাউড়ার মুরইছড়া ফরেষ্টের সামাজিক বনায়নের ২৫ হাজার গাছ কেটে ফেলার পর উদ্ভতু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন এবং খাসিয়া বাঙ্গালীদের মধ্যে সম্প্রীতি সৃষ্টির লক্ষ্যে মঙ্গলবার(৭সেপ্টেম্বর)স্থানীয় কাঠালতলী বাজারে এক সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্টিত হয়েছে।
স্থায়ী সমাধানের লক্ষে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটি এম ফরহাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া কুলাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম সফি আহমদ সলমান উপজেলা আ’লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেণু প্রমুখ।
এ ছাড়াও কুলাউড়া থানার অসিসার ইনচার্জ (ওসি) বিনয় ভুষন রায় কুলাউড়া রেঞ্জের নবাগত রেঞ্জ অফিসার রিয়াজ উদ্দিন কর্মধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ আতিক রহমান পৃথিমপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নবাব আলী বাখর খান সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীদের সভাপতি হারিছ আলী ও খাসিয়াদের পক্ষে বাবলী তালাং বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্টানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কুলাউড়া সার্কেলের অতি:পুলিশ সুপার ছাদেক কাওছার দস্তগীর।
সভায় মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান খাসিয়াদের সর্তক করে বলেন রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। খাসিয়াদেরকে রাষ্ট্রীয় আইন কানুন মেনে চলতে হবে।যতক্ষন খাসিয়ারা সরকারী নিয়ম নীতি ও আইনকানুন মেনে চলবে ততক্ষন তাদেরকে সহযোগীতা করা হবে।
তিনি বলেন বনবিভাগ হলো সরকারী একটি প্রতিষ্টান।আর সরকারী প্রতিষ্টানকে রক্ষা করাই আমাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব।তিনি বিরোধপূর্ন জায়গার বিষয়ে বলেন ১০৫ নং দাগের মধ্যে ১৪৫ একর জায়গা নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান থাকায় বাকি ১৪১ একর জায়গায় সামাজিক বনায়ন থাকবে।
এ বিষয়ে তিনি খাসিয়াদেরকে সহযোগীতার আহবান জানান।এছাড়াও বনবিভাগের সামাজিক বনায়ন জবর দখল করে খাসিয়ারা যে অস্থায়ী ঘর নির্মান করেছিলেন সেগুলি অপসারনের জন্য খাসিয়াদেরকে নির্দেশ দেন।এছাড়াও তিনি (ইউএনও) নেতৃত্বে ৫ সদস্য একটি কমিটি গঠন করে দেন।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন বনবিভাগের রেঞ্জার কি বক্তব্য রেখেছে সবাইতো বুঝতে পেরেছেন। রাষ্টের প্রচলিত বিধি বিধান এবং সংবিধান সকলকে মেনে চলতে হবে।পাহাড়ের জায়গা তো বনবিভাগের।এখানে অন্য কাউকে তো জমির মালিকানা দেওয়া হয় নাই।
বনের সাথে যাদের আধ্যাত্মিক সর্ম্পক তারাতো গাছ কাটতে পারেনা।তাহলে কি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বড় হয়ে গেলো।গাছ কেটে বিল্ডিং নির্মান বন্ধ করতে হবে। এছাড়াও রাষ্ট্রেরতো রেভিনিউ লাগবে। সবকিছুতো নিয়ম কানুনের মধ্যে চলতে হবে।
কুলাউড়ার নবাগত রেঞ্জ অফিসার রিয়াজ উদ্দিন পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন মুরাইছড়া বিটের অধীনে আজ থেকে ১০/১২ বছর পূর্বে ৪ টি বাঁশ মহাল ছিল।বড়কালাইগিরি বাঁশ মহাল নিলাম হয়েছিলো ৭৩ লক্ষ টাকা। এভাবে ৪ টি মহাল থেকে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করত।কিন্তু ১০/১২ বছরের ব্যবধানে খাসিয়ারা বাঁশ মহালের প্রায় ৪ হাজার একর জায়গার বাঁশ কেটে পান চাষ করেছে।বিলীন হয়ে গেছে বাঁশ মহালগুলি।
বনবিভাগ তথা সরকার এখানে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
তিনি বলেন বনবিভাগ ২০১৭-১৮ সনে ১৫ হেক্টর সামাজিক বনায়ন করেছিল এবং কালাইগিরিতে একটি ক্যাম্প গঠন করা হয়েছিল।২০২০-২১ এ ২০ হেক্টর সামাজিক বনায়ন করা হয়েছিল।কিন্তু ২৩ জুন খাসিয়ারা বনায়নের ৭ হাজার গাছ কেটে ফেলে।
আর ৭ আগষ্ট ২৫ হাজার বনায়নের গাছ কেটে একটি ঘর নির্মান করে খাসিয়ারা বনায়নের সমস্থ জায়গা তাদের দখলে নিয়ে নেয়।
তিনি বলেন সরকার যেখানে সিলেট বিভাগে পুন:বনায়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে সেখানে কুলাউড়ায় খাসিয়ারা সামাজিক বনায়ন ধবংস করছে।তিনি বলেন পাহাড়ে আগে ছিল বাঁশ আর এখন শুধু পান।তিনি বনজ সম্পদ রক্ষার জন্য সকলের সহযোগীতা কামনা করেন।
Leave a Reply