গোবিন্দগঞ্জে অবৈধ বালু উত্তোলন ও বিক্রির অভিযোগে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
গোবিন্দগন্জ(গাইবন্ধা) প্রতিনিধি
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বালু উত্তোলন ও বিক্রির অভিযোগ স্থানীয় তহশিলদার কর্তৃক ৩৪ জনকে আসামী করে নিয়মিত মামলা রেকর্ড হলেও আজাবধি গ্রেফতার হয়নি কোনো আসামী। উপজেলার শতাধিক পয়েন্টে বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে স্থানীয় কাটাখালী-করতোয়া নদীতে ও অনেক স্থানে ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলন করে তা বিক্রি ও পরিবহন করে আসছে।
জানা যায়, বালু উত্তোলনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগীরা, গোবিন্দগঞ্জ সচেতন মহল ও নাগরিক কমিটি ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন কর্মসূচি-মানববন্ধন পালন করে আসছে। সেই সব আন্দোলনের চাপে স্থানীয় প্রশাসন একাধিক বালু পয়েন্টে একাধিক অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা আদায় ও ড্রেজার মেশিন-পাইপ ভেঙ্গে ফেলে। তার পরেও তাদের দৌরাত্ব না থামায় স্থানীয় ভুক্তভোগী ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত মামলা রুজু হলেও আসামীদের গ্রেফতার না করার অভিযোগ উঠেছে।
সর্বশেষ ৭ নম্বর তালুককানুপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমিসহকারী কর্মকর্তা জীবন বাদী হয়ে ২৬ মে ৩৪ জনের নাম ঠিকানা উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামী করে ৩১৮৩ নম্বর মামলা দায়ের করে। মামলায় ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে নদী গর্ভ হতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বালু বিক্রি করায় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংসের চেষ্টার অপরাধে কথা উল্লেখ করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই মামলার আসামীরা এখনও বালু উত্তোলন ও বিক্রির কাজে সরাসরি জড়িত থেকে বীরদর্পে নিজ ও উপজেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের কেউ আজাবধি গ্রেফতার বা আটক না হওয়ায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
বিষয়টিতে গোবিন্দগঞ্জ নাগরিক কমিটির আহবায়ক এম.এ মতিন মোল্লা জানান, এতদিন মামলা না হওয়ায় প্রশাসন কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। কিন্তু এখন সুনির্দিষ্ট নাম ঠিকানা উল্লেখ করে মামলা রুজু হলেও তাদের গ্রেফতারে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। অচিরে মামলায় উল্লেখিত আসামীদের গ্রেফতার করা না হলে আগামীতে গোবিন্দগঞ্জ নাগরিক কমিটি কর্মসূচি প্রদানে বাধ্য হবে।
এদিকে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইনপেক্টর (নিরস্ত্র) মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, মামলাটির তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আসামীরা পলাতক থাকায় কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।মামলায় আসামীরা হলেন- শাহিন মিয়া, আল আমিন, প্লাবন, মো. আনোয়ার হোসেন, সুজন মিয়া, আলম মিয়া, আশরাফুল ইসলাম, মুশফিকুর রহমান, তোফাজ্জল হোসেন, মেহেদুল মোটা মেহেদুল, বাবু মিয়া, বাদশা মিয়া, রেজাউল করিম, লুৎফর রহমান, শাহ আলম-১, শাহ আলম-২, চাঁন মিয়া, আমিরুল ইসলাম, বাছেদ মিয়া, শহিদুল ইসলাম, এনামুল হক, শাহজাহান মাস্টার, লিটন মেম্বার, রাসেল মিয়া, লিটু মিয়া, শহিদুল ইসলাম, আলেফ উদ্দিন, রতন মিয়া, আরিফ, এরশাদ মিয়া, আলমগীর মোল্লা,সোবতাকিন, জাহাঙ্গীর, আবু তালেব সহ অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ জন। এরা সবাই তালুককানুপুর ও ফুলবাড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা।
একটি সূত্র জানায়, শালমারা ইউনিয়নের উলিপুরের ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। অন্যান্য ইউনিয়নগুলোতে বালু উত্তোলনে জড়িতদের নাম উল্লেখ পূর্বক নিয়মিত মামলার প্রস্তুতি চলছে।