গোবিন্দগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের রোষানলে পড়ায় দশ মাস যাবৎ দুই শিক্ষকের বেতন বন্ধ
গোবিন্দগন্জ(গাইবান্ধা) প্রতিনিধি :
সরকার নিয়মিত বেতন ভাতা দিলেও, প্রধান শিক্ষকের রোষানলে পড়ে একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র দুই শিক্ষক প্রায় দীর্ঘ ১০ মাস ধরে বেতনভাতা পাচ্ছেন না। এমনকি ঈদুল ফিতরের আগে তারা বকেয়া বেতনসহ ভাতা পাওয়ার আশায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট ধর্ণা দিয়েও পাননি। ফলে ঈদুল ফিতরের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন ওই দুই শিক্ষক পরিবার।
ঈদ আনন্দ বঞ্চিতরা হচ্ছেন, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হরিরামপুর দ্বি-মুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের জ্যৈষ্ঠ শিক্ষক মোছাঃ মাখসুদা বেগম ও সিনিয়র সহকারি শিক্ষক মোছাঃ চামেলি বেগম। সারা দেশের মানুষ যখন ঈদ আনন্দে ভাসছে, ঠিক তখনই তাদের পরিবারের সদস্যদের চোখে মুখে যেন কষাঘাতের ছায়া।
ওই বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক বাচ্চা মিয়া জানান, তিনি চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর মাকসুদা বেগম জ্যৈষ্ঠতম শিক্ষিক হিসেবে বিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।এসময় শরিফুল ইসলাম নামে এক শিক্ষক অন্য একজন জুনিয়র শিক্ষকের নিকট থেকে প্রধান শিক্ষক পদে গোপনে নিয়োগ নেন।
জ্যৈষ্ঠ শিক্ষক মাখসুদা বেগম জানান, তিনি এ বিষয়ে হাইকোর্ট রিট পিটিশন নং ৬১৮৪/২০ দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।এ ঘটনায় শরিফুল ইসলাম ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন। ফলে সরকার আমাদের নিয়মিত বেতনভাতাসহ ঈদ উৎসব দিলেও প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম তা বন্ধ করে রেখেছেন।
গাইবান্ধা জেলা শিক্ষা অফিসার এনায়েত হোসেন জানান, ঈদের সপ্তাহ খানেক আগে এক আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই দুই শিক্ষকের বেতনভাতা নিশ্চিত পুর্বক বিষয়টি নিঃস্পত্তি করার জন্য গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এছাড়াও জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
উভয় দপ্তর থেকে চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ পারভেজ জানান, ওই দুই শিক্ষকের বকেয়া বেতনভাতা দেয়ার জন্য প্রধান শিক্ষককে একাধিকবার বলেছি।এরপরও ঈদ উৎসব ভাতা তো দুরেই থাক, বেতন পর্যন্ত পাননি।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ আকতারুজ্জামান বলেন, ওই দুই শিক্ষক বেতনভাতা পাওয়ার জন্য ঈদের আগে আমার নিকট আবেদন করেছে।কিন্তু বেতভাতার বিল আমি প্রস্তুত করিনা।বেতনভাতার বিল প্রস্তুত করেন প্রধান শিক্ষক।এ কারণে ওই দুই শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক বরাবর আরেকটি আবেদন দিতে বলেছি। আবেদনটি দিলে তিনি বিল প্রস্তুত করতে পারেন।এ প্রসঙ্গে কথা বলার জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলামের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।