গোয়াইনঘাটে জাল সনদে প্রধান শিক্ষক পদে চাকরি করছেন জামাল আহমদ
সিলেট ব্যুরো প্রধান:
সিলেটের গোয়াইনঘাটে এক প্রধান শিক্ষক শিক্ষাগত যোগ্যতার জাল সনদ দিয়ে এক যোগের বেশি দিন ধরে চাকরি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে সম্প্রতি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদে পক্ষ থেকে এলাকার সচেতন মহল বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রনালয়, উপ পরিচালক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্টান ঢাকা,চেয়ারম্যান দূর্নীতি দমন কমিশন ঢাকা,সচিব শিক্ষা মন্ত্রনালয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা ঢাকা, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক,সিলেট জেলা শিক্ষা অফিসার, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সিলেট, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আই সি টি সি সহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের আলীর গ্রামের জামাল আহমদ।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গোয়াইনঘাটের ডৌবাড়ী ইউনিয়নের হাকুবাজার উচ্চ বিদ্যালয়টি ২০০৫সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন PSSP-2প্রকল্পের অধীনে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ করা হয় জামাল অাহমদকে। তারপর ২০১০সালে বিদ্যালয়টি এমপিও ভুক্ত হয়।
তখন জামাল আহমদ ১১মার্চ ২০০৮তারিখে প্রধান শিক্ষক পদে ভুয়া নিয়োগ দেখিয়ে এমপিও পান। অতচ যে নিয়োগে তিনি তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ প্রদান করেছেন সেখানে প্রায় সবকটি সার্টিফিকেট নকল এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ার সকল সাক্ষর জাল রয়েছে।
বিশেষ করে ১৯৯২সালে তিনি ৩য় বিভাগে এইচ.এসসি পাস করেছেন কিন্ত নিয়োগে নকল সার্টিফিকেট তৈরি করে ৩য় বিভাগের জায়গায় ২য় বিভাগ দেখিয়েছেন।
এবং নিয়োগে একজন শিক্ষিকাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বানিয়ে তার সিল সাক্ষর নকল করা হয়েছে সেই শিক্ষিকা কখনই এই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেননা এমনকি তিনিও সাক্ষর করেনি। এছাড়াও যাদের সাক্ষর দেখানো হয়েছে তারা কেউ এই নিয়োগ বিষয়ে জানেননা এমনকি সাক্ষরও করেননি।
নিয়োগে জামাল আহমদ শিক্ষকতায় অভিজ্ঞতার সনদে উল্লেখ করেছেন গোয়াইনঘাটের কোওর বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৯৯৪ই হতে ২০০৫সাল পর্যন্ত তিনি কর্মরত ছিলেন শিক্ষকতা পেশায়। কিন্তু সেটি সটিক নয়। সেখানে তিনি অফিস কেরানি ছিলেন।
কোওরবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক অভিজ্ঞতা সনদে সাক্ষর করেননি। এই সনদ ভূয়া বলে জানিয়েছেন কোওরবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক।
অনুসন্ধানে জানাযায়, জামাল আহমদ ১৯৯০সালে গোয়াইনঘাট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২য় বিভাগে এস এসসি এবং ১৯৯২সালে ৩য় বিভাগে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কুমিল্লার অধীনে (বানিজ্য বিভাগে) এইচ.এস.সি. ও ১৯৯৬সালে ৩য় বিভাগে বিএ পাস করেন। তারপরে ১৯৯৪ সালে কোওর বাজার উচ্চ বিদ্যালয় অফিস কেরানি পদে যোগদান করে২০০৫সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। তিনি এর আগে কখনও কোন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেননি।
অভিযোগকারী বলেন, গত বছরের ৪অক্টোবর বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দের সম্মতিক্রমে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও গ্রন্তাগাকারীক নিয়োগের জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের রেজুলেশন পাশ হয়।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী (০৩ ফেব্রয়ারী ২১) দুটি পদের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য দিন তারিখ ঠিক থাকলেও নেয়া হয়নি পরিক্ষা। পরবর্তীতে ১৪মার্চ ২১ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দকে বাদ দিয়ে নিয়োগ পরিক্ষা নিয়ে প্রধান শিক্ষক জামাল আহমদ বড় অংকের উৎকোচের বিনিময়ে নিজের পছন্দ মতো প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য পরিক্ষা নামের একটি নাটক মঞ্চায়ন করে উৎকোচ চুক্তির মাধ্যমে তার পছন্দসই প্রার্থীদের নির্বাচন করেন। এই নিয়োগ নিয়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ জামাল আহমদের উপর বিস্থর অনিয়মের অভিযোগ উঠে এবং এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক জামাল আহমদ বলেন,
১৯৯০সালে ২য় বিভাগে এস এসসি এবং ১৯৯২সালে ৩য় বিভাগে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কুমিল্লার অধীনে (বানিজ্য বিভাগে) এইচ.এস.সি. ও ১৯৯৬সালে ৩য় বিভাগে বিএ পাস করি। আমি ২০০৮সালে হাকুবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পাই। আমার সার্টিফিকেট সটিক রয়েছে। নিয়োগে আমি জালিয়াতি করিনি।
সেখানে নমিতা রানী দাস ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কখনও ছিলেন না সেটি সত্য। কিন্তু প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিশেষ কারনে আমি নমিতা রানিকে প্রধান শিক্ষকের ভূমিকায় রেখে সিল সাক্ষর ব্যবহার করেছি। এবং আমি এর আগে দীর্ঘদিন কোওর বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে সিডি হিসাবে কর্মরত ছিলাম। আমার উপরে নিয়োগ সক্রান্ত যে অভিযোগুলো এলাকাবাসী করেছেন সব বিত্তহীন।
জাল সনদে চাকরি অভিযুক্ত জামাল আহমদের বিরুদ্ধে প্রোয়জনীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন এলাকার সচেতনমহল