1. [email protected] : দৈনিক বিজয়ের বানী : দৈনিক বিজয়ের বানী
  2. [email protected] : Hasan :
  3. [email protected] : dev : dev
চিলমারীর চরাঞ্চলে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল এবং পাঠদান কার্যক্রম - dainikbijoyerbani.com
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৮ অপরাহ্ন
ad

চিলমারীর চরাঞ্চলে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল এবং পাঠদান কার্যক্রম

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ১০২ Time View

সোহেল রানাঃ

কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ

কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার চরাঞ্চলে মাধ্যমিক,মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা বিরাজ করছে। সাম্প্রতিক বন্যায় ব্রহ্মপুত্র নদের করাল গ্রাসে অর্ধ ভেঙ্গে নেয়া স্কুলে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে চলছে পাঠদান কার্যক্রম।

গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠিত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল এন্ড কলেজ এ গিয়ে দেখা যায়, সাম্প্রতিক বন্যায় স্কুল এন্ড কলেজটির একটি ভবনের ৪ ভাগের তিন ভাগ অংশ ভেঙে নিয়েছে। অবশিষ্ট রয়েছে মাত্র দুটি ছোট ছোট শ্রেণি কক্ষ । শ্রেণি কক্ষের উপড়ের অর্ধেক চালরে টিন নেই। ধাপারের নীচের ছাঁয়াতে বসে ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাশ করছে।

স্কুল মাঠটির অর্ধেকেরও বেশি অংশ ভেঙে নিয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদ। দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি পাকা বিল্ডিং এখনও অক্ষত থাকলেও দুটি কক্ষের ভিতরেরই রাখা হয়েছে ভেঙে যাওয়া টিন শেড ভবের অ্যাঙ্গেল,টিন রড সহ নানা জিনিষ। এরই মাঝে সামান্য কয়েকটি বেঞ্চ বসিয়ে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে ক্লাশ নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

অপর কক্ষটিও আলমারি সহ স্কুল ভবনের নানা জিনিষ পত্র রাখো হয়েছে। এরই মধ্যে কোন রকমে একটু জায়গা বেড় করে সেখানে টেবিল চেয়ার বসিয়ে শিক্ষকদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভাঙন জনিত কারণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছবি ও প্রধান মন্ত্রীর একখানা করে ছবি আলমারির উপরে দাঁড় করে রাখা হয়েছে।

এই ছবি দুটি অবশ্য ভাঙা ভবনে টাঙানো ছিল। পাকা ভবনের ছবি অবশ্য ঘরটির মাজা মাঝিতেই টাঙ্গানো আছে। মাঠের যত টুকু অংশ অক্ষত আছে সেখানে খুলে রাখা হয়েছে ভাঙ্গা ভবনের আংশিক টিনের চাল।

মাঠের পাশে বাজারের মালামাল বিক্রির হাট শেডটি পাটের চট দিয়ে ঘিরে সেখানে বসানো হয়েছে বেঞ্চ।অপরিচ্ছন্ন এবং প্রচন্ড গরমে ছাত্র-ছাত্রীরা সেখানে বসে থাকতে খুব কষ্ট পাচ্ছে। স্কুলটির ভবন যেখানে জরাজীর্ণ সেখানে স্বাস্থ্য বিধি রক্ষা করা খুবই কঠিন কাজ। তবে স্কুলটির শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদেরকে মাক্্র পড়াতে ব্যর্থ হওয়ায় অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী মাক্্র বিহীন ক্লাশ করছি। হাত ধোয়ারও কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি সেখানে।

এ ব্যাপারে স্কুল এন্ড কলেজটির দশম শ্রেণির ছাত্রী রেখা আক্তার, স্বপন, নবম শ্রেণির ছাত্রী রুমানা, শিরিনা আক্তার,দশম শ্রেণির ছাত্রী শানা আক্তার শানু,নবম শ্রেণির ছাত্র শুভ, সুমন মন্ডলসহ অনেকেই জানায় ১৮ মাস পূর্বে যখন করোনা শুরুর মুহ‚র্তে স্কুলটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়, তখন স্কুল মাঠ থেকে নদী অনেকটা দূরে ছিল। স্কুল খোলার পর এসে দেখে স্কুল ভবনের অনেকটাই নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। স্কুলের এই হাল দেখে ওদের সকলের মন খারাপ হয়ে গেছে। ক্লাশ থেকে যখন নদীর পানির দিকে চোখ পড়ে তখন ওদের মন উদাস হয়ে যায়। পড়া লেখায় মন বসে না।

স্কুল এন্ড কলেজটির অধ্যক্ষ মোঃ জহুরুল ইসলাম মন্ডল বলেন , তিনি বলেন তার স্কুল এন্ড কলেজে মোট ৭৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। স্কুল টিকে নিয়ে কোন দিশা খুঁজে পাচ্ছেন না। স্কুলটি পরিস্কার করারও কোন উপায় নেই । সর্বত্র ভাঙা ঘরের আসবাবপত্র,ও অন্যান্য সামগ্রী দিয়ে ঠাসাঠাসি করে রেখে সব কিছু কোন রকম আগলে রেখেছেন।

এর মধ্যে স্বাস্থ্য বিধি মেনে ক্লাশ চালিয়ে নেয়া মোটেই সম্ভব না। অন্যত্র জায়গা কেনা হয়েছে। সেখানে সম্পূর্ণ অবকাঠামো সরিয়ে নিতে সময় এবং টাকা দুটোই লাগবে। কিন্ত কোনটাই বর্তমানে তার হাতে নেই। কারণে একদিকে যেমন প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে ক্লাশ চালিয়ে নেয়ার চাপ আছে। অন্যদিকে ভবন গুলি স্থানান্তরিত করে নিতে সময় ও টাকা লাগবে। সাথে লাগাবে স্কুল বন্ধ রাখার অনুমতি।

এ ব্যাপারে স্কুলটি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ দেলওয়ার হোসেন বলেন,খেরুয়ার চরের পূর্ব দক্ষিণ পাশে দেড় একর জমি ক্রয় করা হয়েছে কিন্ত অর্থাভাবে সেখান ভবন বা স্কুল এন্ড কলেজের অবকাঠামো তৈরি করতে পারছেন না।

চরাঞ্চলের অষ্টমীর চর ইউনিয়নেও রয়েছে মাত্র একটি মাধ্যমিক স্কুল। স্কুলটির নাম নটারকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টিও নদীর ভাঙনের শিকার হয়ে বর্তমানে নদী থেকে সামান্য দূরে পূর্ব পাশে স্কুলটির পাকা মূল ভবনটি ভাঙনের হুমকির মুখোমুখি রয়েছে। চলমান বন্যায় স্কুলটির পশ্চিম পার্শ্বের টিনের শ্রেণি কক্ষটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কক্ষের টিন খুলে পানিতে ভেসে যায়। বর্তমানে ভাঙ্গা স্কুল কক্ষেই ক্লাশ চালিয়ে নেয়া হচ্ছে। স্কুলটির নবম শ্রেণির ছাত্রী আখি,ইয়াসমিন,বিউটি আক্তার,ছালমা,আর্জিনা, লাভলী,২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী আলামিন,ইব্রাহিম,স্বপন এরা সকলে জানায় স্কুলে এসে যখন তারা দেখে স্কুল ঘর ভেঙ্গে নিচ্ছে নদীতে তখন তাদের মন ভীষণ খারাপ হয়ে গিয়েছে। তবে দীর্ঘদিন পর স্কুলে আসতে পেরে ভাল লাগছে। যখন এই সকল ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে কথা হয়,তখন দুপুর গড়িয়ে আডাইটা বাঁজে প্রায় ।ওরা খেয়া ঘাটে নৌকায় চড়েছে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য। সেই খেয়া নৌকাতেই ওদের সাথে এ প্রতিনিধির কথা হয়।

এ ব্যাপারে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলামের সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি জানান, অনেক সমস্যা তো রয়েছেই, স্কুল গৃহ বন্যায় ভেঙেছে। স্কুল স্থানান্তরের সমস্যা । অর্থের প্রয়োজন। তারপরও স্বাস্থ্য সম্মত ভাবে ভাঙা ঘরেই আপাতত ক্লাশ চালিয়ে নিচ্ছি।

চরাঞ্চলের সর্বশেষ স্কুল হলো চিলমারী ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠিত কড়াই বরিশাল নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এই স্কুলটি নদী ভাঙন মুক্ত হলেও স্কুলটির অনেক সমস্যা বিদ্যমান। স্কুলটির অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী আয়শা সিদ্দিকা,আক্তারা,জোহরা খাতুন,সুজন মিঞা,সাজু, সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ফাতেমা আক্তার,রণি আক্তার, ফাতেমা (২) মমিনুল ইসলাম জানায় স্কুলটিতে যে পরিমাণ ছাত্র-ছাত্রী সে পরিমাণে বেঞ্চ নাই,শ্রেণি কক্ষ গুলি ছোট,মাঠে ক্লাশ করতে হয় ইত্যাদি।

ad

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
ad
ad
© All rights reserved 2022
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: সীমান্ত আইটি