জরিমানা করেও কমানো যাচ্ছেনা রাঙামাটিতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন।
মাহাদী বিন সুলতান।।
নিয়ারচরে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের হিড়িক। জরিমানা করেও কমানো যাচ্ছেনা অবৈধভাবে এই বালু উত্তোলন।
উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের একাধিক স্থানে মাসের পর মাস এমনকি বছর ধরেই পাম্প মেশিন ও ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে কয়েকটি মহল। মোবাইল কোর্ট অভিযান থেকে বাঁচতে রাতের আধারে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাপ্তাই লেক নিকটবর্তী পাহাড়ের পাদদেশে ঘন বনের মধ্যে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ড্রেজার মেশিন ও পাম্প মেশিন বসিয়ে লাখ লাখ টাকা আয় করে চলেছে অবৈধ মহলগুলো এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের।
সরেজমিনে দেখা যায়, বুড়িঘাট ইউনিয়নের পলিপাড়া, ২নং ওয়ার্ড ইসলামপুরের হাসেম গ্রুপ, খাইল্যাবাড়ি পুলিশ ক্যাম্প এলাকায় জমি লিজ নিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে শক্তিশালী কয়েকটি মহল। উপজেলা প্রশাসন থেকে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা এবং জরিমানা করেও থামানো যায়নি প্রভাবশালী এসব মহলকে।
গত নভেম্বর মাসে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে পলিপাড়া থেকে তিনজনকে আটক করে উপজেলা প্রশাসন। এসময় তাদেরকে ১লক্ষ ৫০হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে তিন মাস জেলের আদেশ দেন নির্বাহী অফিসার শিউলি রহমান। এঘটনায় জরিমানার টাকা আদায় পূর্বক ৩জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এরপরেও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন থেমে নেই বরং বেড়েই চলেছে তাদের দৌরাত্ম্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, এসব এলাকায় দিন ও রাতে হাজার হাজার ঘনফুট বালু উত্তোলন পূর্বক ইঞ্জিনচালিত বোর্ট ও মিনিট্রাকে করে পৌঁছে যাচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। জানতে চাইলে সূত্রটি জানায় একটি বোটে প্রায় ২৫০০ ফুট বালু পরিবহণ সম্ভব।
সূত্রটি আরো জানায়, রাঙামাটি শহর থেকে প্রভাবশালী একটি মহল স্থানীয় অবৈধ ব্যবসায়ীকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করিয়ে নেয়। উত্তোলন হলে তা দিনে ও রাতের আঁধারে বিক্রির উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয় জেলা শহর রাঙামাটিতে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক যুবক জানায়, বেশকিছুদিন লক্ষ্য করছি এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হচ্ছে। যা পরিবেশের জন্য মারাত্বক হুমকিস্বরূপ। এভাবে চলতে থাকলে পাহাড় ধ্বসসহ পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। প্রশাসনের নিকট আবেদন তাঁরা বিষয়টি জোরালোভাবে দেখবে। গুটি কয়েক অবৈধ ব্যবসায়ীর জন্য এলাকাবাসী যেন ভোগান্তির শিকার না হয়।
অভিযুক্ত এক ব্যবসায়ী পাইজাপ্রু মারমার নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, গত কয়েকদিন আগে পুলিশ এসে বালুসহ একটি বোট আটক করে। এর পর থেকে তিনি বালু উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন তিনি পূর্বের উত্তোলনকৃত বালু বিক্রি করছেন।
রাঙামাটি শহরের অভিযুক্ত অপর ব্যবসায়ী বিমল জানায়, তিনি আর বালু ব্যাবসা করেন না। যদিও স্থানীয়রা জানিয়েছে সে এখনও ব্যবসা করছে।
রাঙামাটি প্রভাবশালী মহলের স্থানীয় শ্রমিক রুহুল আমিন জানান, উপজেলা প্রশাসনের অভিযানে আটক হওয়ার পর তিনি আর কাজ করছেন না।
অনুমতি নিয়ে বালু উত্তোলন করছেন কিনা জানতে চাইলে স্থানীয় অবৈধ বালু ব্যবসায়ী সুলতান প্রতিবেদকের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ব্যবহার করে।
এবিষয়ে নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিউলি রহমান তিন্নী বলেন, "উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা কিছু অসাধু ব্যবসায়ীকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছি। আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।"