কাকন সরকার (শেরপুর) : শেরপুর জেলা প্রশাসনের আবেদনক্রমে শিল্প মন্ত্রণালয় তুলসীমালা ধানকে ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অধীন পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (জিআই) মো. জিল্লুর রহমান স্বাক্ষরিত গত বৃহস্পতিবারের চিঠিতে তুলসীমালা ধানকে জিআই পণ্য হিসেবে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শেরপুর জেলার অন্যতম ঐতিহ্য তুলসীমালা সুগন্ধি চাল। এ চালের পিঠা-পায়েস, খই-মুড়ি, ভাতের সুগন্ধ ও স্বাদ অসাধারণ। ‘পর্যটনের আনন্দে, তুলসীমালার সুগন্ধে’ স্লোগান সামনে রেখে শেরপুর জেলা প্রশাসন এটিকে জেলার ব্র্যান্ডিং পণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে। তুলসীমালা ধান থেকে এই চাল উৎপাদন হয়।
তুলসীমালা চাল চিকন ও সুগন্ধি; যেটি শেরপুর জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে চাষ করা হয়। উচ্চ গুণসম্পন্ন তুলসীমালা চাল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজসমৃদ্ধ। ঈদ, পূজা–পার্বণ, বিয়ে, বউভাতসহ বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠানে পোলাও, বিরিয়ানি ও মিষ্টান্ন তৈরিতে এ চালের জুড়ি নেই।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, তুলসীমালা ধান আমন মৌসুমে উৎপাদিত হয়ে থাকে। জেলার সদর, নালিতাবাড়ী, নকলা, শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে এ ধানের আবাদ করা হয়। জেলার অর্ধশত স্বয়ংক্রিয় চালকলে তুলসীমালা চাল উৎপাদন করা হয়। প্রতিবছর প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন চাল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ এবং বিদেশে রপ্তানি করা হয়।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর শেরপুরের উপপরিচালক সুকল্প দাস বলেন, জেলা প্রশাসকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং কৃষি বিভাগের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে তুলসীমালা ধান জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ভবিষ্যতে এই চাল বিদেশে রপ্তানির লক্ষ্য নিয়ে কৃষি বিভাগ কাজ করছে।
জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার বলেন, তুলসীমালা ধান থেকে উৎপাদিত তুলসীমালা চাল শেরপুরের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। দেশের সব জেলাসহ সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে এই চাল বিদেশে রপ্তানি করা সহজ হবে। এর মাধ্যমে অর্জিত হবে বৈদেশিক মুদ্রা।