সোহেল মিয়া (সুনামগঞ্জ)
রিমঝিম করে অঝোরে ঝরছে বৃষ্টি।বৃষ্টিঝরা যেন নিত্য পরিকল্পনার অংশ।প্রতিনিয়ত নিরলস ভাবে বৃষ্টি অতিষ্ঠ জনজীবন। চারদিকে পানির হিল্লোল। নদী,নালা খাল বিল ব্রিজ কালভার্ট ড্রেন, হাওর কোথাও কমতি নেই পানি। চারদিকে পানি আর পানি টইটম্বুর করছে।নদী যেন ফিরে পেয়েছে হারানো যৌবন।এইতো সাপ্তা খানেক আগে রোপণ করা হয়েছে আমন ধানের চারা। চারা শিকড় গেঁড়ে দাড়ানোর আগেই পানির নিচে হাবুডুবু খাচ্ছে।
গত সাপ্তা দশেক ধরে অবিরাম বৃষ্টিতে আমন ধানক্ষেতে সাতার পানি জমে গেছে।সাপ্তা বয়সী ধানের চারা নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় কৃষকেরা। তার পরও যদি কিছু ধানের চারা পানি থেকে রক্ষা পায় সেই প্রত্যাশার প্রহর গুনছি।এভাবেই বলছিলেন সুনামগঞ্জের এক কৃষক জসীম উদ্দিন।
শফিকুল ইসলাম নামের এক কৃষক বলেন, প্রায় আট একর জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করেছিলাম, কিন্তু এভাবে পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলে ধানের চারা পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কৃষক শফিকুল ইসলাম ও জসীম উদ্দিন ছাড়া এরকম হাজারো কৃষক বিভিন্ন এনজিও সংস্থা থেকে ক্ষুদ্র ঋন নিয়ে ব্যায় করেন কৃষি কাজে । এভাবে ধারাবাহিক ভাবে বৃষ্টি চলতে থাকলে পথে বসা ছাড়া কোন পথ নেই এসব এলাকার কৃষকদের।
সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার, ছাতক, তাহিরপুর, দিরাই, শাল্লাসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার হাওরগুলোতে কয়েক হাজার কৃষকের আমন ধান ক্ষেত অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বিনষ্ট হওয়ার পথে।
ছাতক উপজেলার কৃষক কামাল মিয়া বলেন, টানা এক সপ্তাহের বারি বর্ষনে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে হাওরে ডুকে পরে এতে সদ্য রোপণ করা আমন ধানের চারা তলিয়ে যায়। নিজের যেটুকু সম্বল ছিল তাসহ প্রতিবেশীর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে প্রায় ৯ একর জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করেছি। কিন্তু এই ফসল নষ্ট হলে ঋণ পরিশোধ করার পথও খুঁজে পাবনা।
এদিকে টানা বর্ষনে নদীগুলোতে পানি ভর্তি থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে তাহিরপুরের জাদুকাটা নদী ও দোয়ারাবাজারের চেলা নদী থেকে উত্তলন করতে পারছেনা কোন প্রকার বালি পাথর, নদীতে অতিরিক্ত পানি থাকায় গত শনিবার থেকে সুনামগঞ্জে ভারত থেকে আমদানীকৃত চান পাথর ব্যবসা ও রয়েছে বন্ধ।
কর্মহীনতায় ভূগছেন লক্ষাধিক শ্রমিক। শ্রমীকদের সাথে শষ্কায় দিন পার করছে সংশ্লিষ্ট ব্যাবসায়ী ও বালিমহলের ইজারাদাররাগন।
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, ক,দিন বৃষ্টিতে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে দিনমজুররা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। আমি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারসহ উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।