মোঃ সুমন ইসলাম প্রামানিক , ডোমার নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর ডোমার উপজেলার গোমনাতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ২০২১-২২ অর্থ বছরের গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ভি,জি,ডি কার্ডের চাল আত্নসাতের অভিযোগ তুলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভি,জি,ডি কার্ডধারী ৭ জন ভুক্তভোগী পরিবার।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে জানাযায়, দক্ষিণ গোমনাতী ৫ নং ওয়ার্ডের সানোয়ার রহমানের স্ত্রী নাজেমা বেগম, কার্ড নং ৩৮ একই ওয়ার্ডের মফিজার রহমানের স্ত্রী মর্জিনা বেগম কার্ড নং ৩১ জহুরুল ইসলামের স্ত্রী সুমনা আক্তার কার্ড নং ৩৭ এবং দক্ষিণ গোমনাতী ৬ নং ওয়ার্ডের বুলু মিয়া রঞ্জুর কন্যা গোলাপি বেগম, কার্ড নং ১০ একই ওয়ার্ডের আবু বক্কর সিদ্দিকের স্ত্রী বিউটি বেগম, কার্ড নং ০৯ তৈইবুল ইসলামের কন্যা বিলকিছ বেগম, কার্ড নং ০৪ ইয়াছিন আলীর স্ত্রী মারজাহানা বেগম কার্ড নং ২৮।
অভিযোগকারী ০৭ জন ভুক্তভোগী পরিবারের সকলেই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, ২০২১-২২ অর্থ বছরের গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ভি,জি,ডি কার্ডের বরাদ্দ পাওয়ার জন্য সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করি। সেই অনলাইনে আবেদনের কাগজ সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ইউপি সদস্য মারফত ইউনিয়ন পরিষদে জমা দেই। তারপর সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক আমাদের সকলের নামে বরাদ্দ মঞ্জুর হয়। তারপর একাধিকবার চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদের কাছে গিয়ে কার্ডের বিষয়ে বললে তিনি আমাদেরকে বলেন ২০২১-২২ অর্থ বছরে তোমাদের নামে ভি,জি,ডি কার্ড বরাদ্দ মঞ্জুর হয় নাই। তার কথা শুনার পরে আমরা উপজেলা মহিলা বিষয়ক দপ্তরে খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারি আমাদের সকলের নামে ২০২১-২২ অর্থবছরের ভি,জি,ডি কার্ড বরাদ্দ মঞ্জুর হয়েছে। দীর্ঘ ৭ মাস ধরে ভি,জি,ডি কার্ডের চাল বিতরণ করা হলেও আমরা ৭ জন ভুক্তভোগী পরিবার আমাদের নামে কার্ড থাকা সত্ত্বেও সরকারের দেয়া বরাদ্দকৃত প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাওয়া থেকে আমরা বঞ্চিত রয়েছি। এব্যপারে চেয়ারম্যান হামিদের সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করলেও তিনি আমাদেরকে চাল না দিয়ে আমাদের নামে বরাদ্দকৃত কার্ডের কথা অস্বীকার করে বলেন তোমাদের নামে ভি,জিডির কোন কার্ড বরাদ্দ হয়নি। তাই আমরা ভুক্তভোগী পরিবার সকলেই নিজ নিজ নামে লিখিতভাবে ইউএনও মহোদয়ের বরাবরে অভিযোগ করি। আমরা ২০২১-২২অর্থ বছরের জানুয়ারি থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ভি,জি,ডি চালের একটি দানাও পাইনি। তাই হামরা ভুক্তভোগী পরিবার বলতে চাই আমাদের মতো গরীব দুঃখী অসহায় মানুষের হক বঞ্চিত করে হামিদ চেয়ারম্যান ভি,জি,ডি কার্ডের চাউল আত্মসাৎ করেছে আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
৫ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলাম বলেন, গোমনাতী ইউনিয়নে মোট ৩ শত ৮২টি ভি,জি,ডি কার্ডের মধ্যে আমার ৫ নং ওয়ার্ডে মোট ৫৩ টি কার্ডের মধ্যে আমার রেশিও অনুযায়ী ১৪ জনের নাম চুড়ান্ত তালিকায় আসে। এরমধ্যে ১১ জনকে কার্ড প্রদান করা হয়েছে এবং বাকি ৩ জন কার্ডধারীর কার্ড আমি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদের কাছে চাইলে তিনি রাগান্বিত হয়ে আমাকে পরিষদের কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত করে।
এবিষয়ে গোমানাতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হামিদ জানায়, ২০২১-২২ অর্থ বছরের ভি,জি,ডির ওই কার্ডধারীদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ থাকায় পরিষদের সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে রেজুলেশন করে তাদের ৭ জনের কার্ড বাতিল করে অনলাইনে আবেদনকৃত অপেক্ষমান তালিকাভূক্তদের নামে কার্ডটি করে তাদেরকে চাল দিয়েছি।
এবিষয়ে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নুরুন নাহার শাহাজাদী জানায়, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত চলছে, সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত কোন ভি,জি,ডি কার্ড বাতিল করা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা শবনম বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে ৩ সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply