মো:নাসির:
বাস্তবের একজন স্বপ্নদ্রষ্টা, সফল উদ্যোক্তা, একজন পথপ্রদর্শক, অফুরন্ত এক অনুপ্রেরণা, সত্যিকারের একজন সাহসী মানুষ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা-তিনি আমাদের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান ভাই। নীল কষ্টের শব্দ আছড়ে পড়ছে চারদিক। তবু অকৃত্রিম ভালোবাসার সেই আহ্বান এখনো বহমান আমার প্রতি মীজান ভাইয়ের।
ছাত্রজীবন থেকেই আমি ওনার কাজের ভক্ত ছিলাম। কখন যেন আমিও হয়ে উঠেছিলাম তার কাজের প্রেরণার বড় উৎসাহ…। আমার মা ছিলেন সদালাপী। উদারতা ছিল অতুলনীয়। আমার মা (সারিয়া বেগম )আজিমপুর গার্লস স্কুলের শিক্ষিক ছিলেন । আজ উনি বেচে নেই । কিন্তু উনি ( মা )আমাকে ত্রবং মীজান ভাইকে অনেক দোয়া দিয়ে গেছেন। আজতো আমরা ভালো আছি। মানুষের দোয়া ও আশির্বাদ পথ চলার জন্য অনেক দরকার। আমার মায়ের একটা কথা আমার এখনো মনে পরে -‘তুই মীজানের সঙ্গে সব সময় সম্পর্ক রাখবি’। আজ অবধি মীজান ভাই বাংলাদেশে থাকলেও আমার সম্পর্কের কোনো অবনতি হয়নি। আমার কোনো সমস্যা হলে তার পরামর্শ আমার অনেক কাজে লাগে। ওনার কাছে শিখেছি কীভাবে পরিশ্রম করে উপরে উঠতে হয়। আমি মীজান ভাইয়ের কাছ থেকে আরও শিখেছি – শুধু স্বপ্ন দেখলে হবে না, স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য সেভাবে কাজও করতে হবে। জীবনকে স্বপ্নের চেয়ে বড় করে দেখতে হবে। এভাবে নিজের স্বপ্নকে গড়তে হবে।
তিনি আরও বেশি জোর দেন কমিটমেন্টের ওপর। সব সময় কমিটমেন্টের মর্যাদা দিতে শেখো। একজন সফল মানুষ এবং সার্থক উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য এটা খুবই জরুরি। তিনি সব সময় বর্তমান-ভবিষ্যতের সমন্বয় ঘটিয়ে চিন্তা করেন। মীজান ভাই হলেন বড় ইন্টিলিজেন্স। দূরদর্শী। সবকিছুতে অনেক দূর দেখতে পান। কোনো কিছুর ভালোটা ভাবার আগে তার নেগেটিভ দিক পর্যালোচনা করে নেন। পুরোদস্তুর গোছানো মানুষ। আমার বাবা ( শরীফ উদিদন ) Government Laboratory High School, Dhaka শিক্ষক ছিলেন। আব্বা এবং মায়ের কাছ থেকে শিক্ষা -আমরা যেন কোথাও কোনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস না করি। তা সে যেই হাক। সত্য-মিথ্যা যেন আলাদা করতে শিখি। আল্লাহর ওপর ভরসা করে সব সময় সবকিছু সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করতে শিখিয়েছেন আমার আববা ও মা।
আমি সবকিছুর সমাধানের উত্তর তার কাছে পেয়ছি। মীজান ভাইয়ের আরেকটি কথা আমায় মনে করে দেয় ‘তুমি যদি কাউকে (Help )সহায়তা কর এবং বিনিময়ে কিছু প্রত্যাশা কর এবং তুমি তাকে দয়া করছো না -এটা ব্যবসা করছো। মীজান ভাইয়ের করা উক্তি-আমি তা শিখেছি এবং ধারণ করেছি। প্রত্যেক সংকটের পেছনে সুযোগ লুকিয়ে থাকে-মনে রাখতে হবে আমাদের সমস্যাগুলো সমাধানের পথ আমাদেরকেই বের করতে হবে। অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান মার্কেটিং বিভাগ , ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ কথাটি মনে করিয়ে দেন।
আমি এটা বিশ্বাস করি। সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ আর তার শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার জন্য আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন গাছ, পাখি, পাহাড়, নদী, সাগর, মহাসাগর। সূর্য পৃথিবীকে আলো দেয়, চাঁদ রাতকে মহিমান্বিত করে, সমুদ্রের উত্তাল স্রোত খেলা করে, নদী বয়ে চলে, সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত, পৃথিবীর সমস্ত সৌন্দর্য ও চমক, মানুষের সুখ-শান্তির জন্যই। মানুষের বেঁচে থাকার জন্যই। কিন্তু মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ, তারা পালনকর্তার শুকরিয়া আদায় করে না। মানুষ আজ ভুলেই গেছে যে তার পালনকর্তা সবই দেখেন। দয়াময় মাবুদকে ভুলে যাওয়া মানুষটিও যেন সুখে থাকে এপার এবং ওপারের জীবনে তা-ই তাঁর ইচ্ছা।
অভাব-অনটনে আল্লাহকে ডাকা : কথায় আছে অভাবে স্বভাব নষ্ট। অভাব হলেই যে স্বভাব নষ্ট করতে হবে তা ইসলাম আমাদের শেখায়নি বরং রিজিক বাড়াতে চাইলে সুখে-দুঃখে সব সময় আল্লাহকে মনে রাখতে হবে। আল্লাহ বলছেন, ‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। জীবন কখনো থেমে থাকে না। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে আপনার মন ইতিবাচক ভাবনায় ব্যস্ত থাকে। বর্তমান পরিস্থিতিতে স্থির হয়। কাজেই ধ্যানধারণা বর্তমান পরিস্থিতিতে রেখে ইতিবাচক ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে হবে। আল্লাহর উপর ভরসা করে ও মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এগোলে আল্লাহই সাহায্য করেন, সফলতা আসে মানুষ প্রতিষ্ঠিত হয়।
আমি বিশ্বাস করি-আমি যদি বিশ্বাস করি যে আমি ঠিকই আছি তবে লোকেরা আমার সমালোচনা করবে – আমাকে আহত করবে এবং আমাকে নিয়ে চিৎকার করবে-তাতে বিরক্ত হবেন না। কেবল মনে রাখবেন যে প্রতিটি খেলায় কেবল শ্রোতারা গোলমাল করে-খেলোয়াড়রা গোলমাল করে নাI আমি এখন নিজেকে খেলোয়াড় মনে করি-বিশ্বাস করি নিজেকে এবং আমার সেরাটা আমি করতে চাই। মনুষ্যত্ব বোধের জায়গাটাকে বড় করে দেখাই হচ্ছে জীবন।
লেখক: নিউজার্সি-আমেরিকা প্রবাসী ,এডিটর ,এনজেবিডিনিউজ ।