ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পেলে দেশের আইনশৃঙ্খলার রক্ষা সহজতর হবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন যুগ্ম কমিশনার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আনসার বাহিনীর ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পুলিশের প্যারালাল বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা পুলিশের জন্য বড় উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার বিষয়। ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি ডিভিশন নামে পুলিশের আলাদা একটি ডিভিশন ও লোকবল থাকার পরও সরকার বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তায় আনসার নিয়োগ দিয়েছে। এখন তাদেরকে ফৌজদারি অপরাধের তদন্ত ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়ারও প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশ বাহিনীর জন্য এটি সুখকর সিদ্ধান্ত হবে না। মাঠপর্যায়ে দায়িত্ব পালনে ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. হাবিবুর রহমান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘প্রচলিত আইনে আনসার ও ভিডিপি বাহিনী কাউকে গ্রেপ্তার বা মামলার তদন্ত করার এখতিয়ার রাখে না। তারা পুলিশের সহযোগী হিসেবে কাজ করে। পুলিশের চাহিদার আলোকে বিভিন্ন ইউনিটের সঙ্গে সহযোগী ফোর্স হিসেবে মোতায়েন থাকে। তিনি আরও বলেন, ‘আনসার বাহিনী কোনো প্রস্তাব দিয়ে থাকলে সেটা পাস করা না করা সরকারের এখতিয়ার। আমার কাছে অফিসিয়ালি এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই।’
আনসার বাহিনীর প্রস্তাব ও সেটা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে কঠোর সমালোচনা করে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, এটি একটি অবাস্তব প্রস্তাব। আমি মনে করি সরকারকে ‘ডোবানোর জন্য’ কতিপয় ‘আঁতেল’ এসব প্রস্তাব দিচ্ছে। শুধু বাংলাদেশেই নয়; সারা বিশ্বেই ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার অপরিহার্য অংশ পুলিশ (ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমের মেজর কম্পোনেন্ট)। আদালত আর পুলিশের মাঝে থাকে প্রসিকিউশন। সিআরপিসি অনুযায়ী ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় একাধিক কর্তৃপক্ষ থাকে না। যারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাইড লাইনে তারা থাকে সহযোগী শক্তি হিসেবে।
তদন্ত, উদ্ধার, গ্রেপ্তার এগুলো পুলিশেরই কাজ। আনসার এখন আর আনসার থাকতে চায় না, পুলিশ হতে চায়। তাদেরকে পুলিশের সঙ্গে মার্জ করে দিলেই হয়। অতীতে ‘সেক্রেটারিয়েট ক্যাডার ও ইকোনমিক ক্যাডার’ অ্যাডমিন ক্যাডারের সঙ্গে মার্জ হয়ে গেছে। আনসার বাহিনী ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমে পুলিশের প্যারালাল বাহিনী হবে এটার কোনো সুযোগ নেই। কিছু ব্যক্তি মাঝেমধ্যে উদ্ভট প্রস্তাব দিয়ে সরকারকে বিভ্রান্ত করছে। এখন আনসার তদন্ত ও গ্রেপ্তার ক্ষমতা চাচ্ছে; কিছুদিন পর বিজিবি চাইবে, অন্য সংস্থাও চাইবে; এটা হয় না। আনসার সহযোগী বাহিনী, তারা সহযোগী হিসেবেই থাকুক।
বিষয়টি নিয়ে পুলিশের ভেতর ক্ষোভ ও উদ্বেগ আছে উল্লেখ করে সাবেক এই পুলিশ প্রধান বলেন, ‘ভিভিআইপি প্রটেকশনে সব সময় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) থাকত; তাদের সঙ্গে থাকে পিজিআর ও এসএসএফ। এখন আনসার দেওয়া শুরু হয়েছে। বিষয়টি আমার বুঝে আসে না। আমি পুলিশের সাবেক প্রধান হিসেবে বলছি না; বাস্তবতা হচ্ছে- আনসার যদি পুলিশ হতে চায়; তাহলে আনসার বাহিনীকে বিলোপ করে পুলিশের সঙ্গে মার্জ করে দেওয়া হোক।’
সূত্র: প্রতিদিনের বাংলাদেশ
Leave a Reply