শেখ খায়রুল ইসলাম, পাইকগাছা(খুলনা) প্রতিনিধি:
ফেসবুকে ফেইক আইডির মাধ্যমে ভয়ঙ্কর প্রতারনার ফাঁদ পেতে বিভিন্নজনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে পাইকগাছার কপিলমুনির চা বিক্রেতা প্রদীপ ঘোষকে তার তালার ঘোষনগর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে। এসময় তার কাছ থেকে আত্মসাৎকৃত নগদ ১০ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ও বিভিন্ন ডকুমেন্টস উদ্ধার করা হয়েছে। যশোর জেলা পুলিশের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রদীপ ঘোষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজেকে Soumodip Ghosh (susanto ghosh)নামে পরিচয় দিয়ে একটি ফেইক আইডি খুলে। এসময় সে নিজেকে জার্মান প্রবাসী পরিচয় দিয়ে জমি ক্রয়ের কথা বলে প্রতারনার মাধ্যমে প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রীতা রাণী দাস এর নিকট থেকে গত জুন মাসে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে নগদ,বিকাশ ও চেকের মাধ্যমে মোট ২০ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা গ্রহন করে। এসময় প্রদীপ ঐ শিক্ষিকার কাছ থেকে জমির দলিল তৈরীর নামে এনআইডি কার্ডের ফটোকপি, পাসপোর্ট সাইেজের ৩ কপি ছবি, স্বাক্ষরযুক্ত নন জুডিশিয়াল ব্লাঙ্ক স্ট্যাম্প, স্বাক্ষরযুক্ত ৩টি চেক গ্রহন করে। এরপর ঐ শিক্ষিকা প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে আত্মসাৎকৃতটাকাসহ অন্যান্য উপকরণগুলি উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে যশোর কোতয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা করেন। যার নং-৮। তারিখ-০৩/০৭/২০২১। ধারা: ৪০৬/৪১৭/৪২০/৪৬৮/৫০৬ দ:বি:। এরপর যশোর পুলিশ সুপার মামলাটির তদন্তভার জেলা গোয়েন্দা শাখায় অর্পন করলে গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মামলাটির তদন্তভার এসআই(নি:) শামীম হোসেনের উপর অর্পন করেন। এরপর পুলিশ সুপারের সার্বিক দিক-নির্দেশনায় ও জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ সোমেন দাস এর তত্ত্বাবধানে পুলিশ পরিদর্শক (নি:) রুপম কুমার সরকারের (পিপিএম) নেতৃত্বে এসআই মোঃ মফিজুল ইসলাম, (পিপিএম), এসআই চন্দ্র কান্ত গাইন, এসআই মোঃ শামীম হোসেন সঙ্গীয় ফোর্সসহ গোয়েন্দা শাখার একটি চৌকস টিম প্রদীপের অবস্থান শানাক্ত করে গত রবিবার খুলনার কপিলমুনি ও সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ঘোষ নগরে অভিযান চালিয়ে ঘটনার মূল নায়ক প্রদীপ কুমার ঘোষ ওরফে সঞ্জিত ওরফে সৌম্মদীপ ঘোষ ওরফে সুশান্ত ঘোষ (৫১) কে গত সোমবার তালার ঘোষনগরস্থ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেন। তিনি ঘোষনগরের সুবোধ ঘোষের ছেলে। এসময় পুলিশ তার কাছ থেকে নগদ ১০ লাখ ৯৭ হাজার টাকা, বাদীর স্বাক্ষর সম্বলিত ব্লাঙ্ক চেক, বাদীর স্বাক্ষরিত ব্লাঙ্ক নন-জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্প-৩টি, বাদীর এনআইডি কার্ডের ছায়ালিপি ২টি, ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, বিভিন্ন দলিলের ছায়ালিপি, ৩টি মোবাইল সেট (ফেসবুক আইডি ব্যবহৃত ও বিকাশ নাম্বার) সম্বলিত, প্রদীপের ১টি পাসপোর্ট, সাড়ে ৩ ভরি স্বর্ণালংকার যার আনুমানিক মূল্য ২ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা। প্রসঙ্গত, প্রদীপ ঘোষ দীর্ঘ দিন যাবৎ পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনিতে প্রথমত চায়ের দোকান ও পরে ফার্স্ট ফুডের ব্যবসা করতো। এসময় সে কপিলমুনি সদরের পালপাড়ার জনৈক অনিমেশ মন্ডলের বাড়িতে ভাড়াটিয়া ছিল। সম্প্রতি সে কপিলমুনির এক ওষুধ ব্যবসায়ীর ঘোষনগরস্থ প্রায় ৮ শতক জমি ক্রয় করে সেখানে বাড়ি তৈরি করে বসবাস শুরু করেছে। স্থানীয়রা জানান, তার প্রকৃত বাড়ী ভারতে। দীর্ঘ দিন আগে কপিলমুনিতে এসে পার্শ্ববর্তী তালার জেঠুয়া এলাকায় বিয়ে করে।