স্বপন কুমার ঢালী,দেশের সর্ববৃহৎ দীপাবলি উৎসব আজ শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) বরিশালে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সংক্ষিপ্ত পরিসরে। করোনার কারণে কোন তোরণ নির্মান করা হয়নি। আলোক সজ্জাও করা হয়েছে সীমিত পরিসের এবং করোনা থেকে মুক্তির জন্য করা হয়েছে বিশেষ প্রাথর্ণা।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যার পরপরই দীপাবলি উৎসবের জন্য মহাশ্মশানের মঠসহ সমাধিস্থলগুলো সাজানো হয়েছে বর্নিল নতুন রূপে। এবারের দীপাবলি উৎসব অন্যান্য বছরগুলোর তুলনায় ব্যাপক সমারোহে দীপাবলি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি। কোন তোরণ নির্মাণ, আলোকসজ্জা এবং মেলার আয়োজন করেনি কর্তৃপক্ষ।
মহাশ্মশানে উৎসবে প্রয়াতদের সমাধির কাছে প্রার্থনাসহ তাদের পছন্দের খাবার সাজিয়ে রেখেছেন তাদের স্বজনরা। করোনা থেকে মুক্তির জন্য ভক্তদের বিশেষ প্রাথর্ণা করতে দেখা গেছে। সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং মাস্ক পড়ে প্রবেশ করতে দেখা গেছে।
সুষ্ঠু-সুন্দরভাবে দীপাবলি উৎসব সম্পন্ন করার জন্য নানা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে মহাশ্মশান রক্ষা কমিটি। উৎসব নির্বিঘ্ন এবং শান্তিপূর্ণ করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা পুলিশ।
সনাতন ( হিন্দু) ধর্মাবলম্বীরা প্রতি বছর কালীপূজার আগের দিন ভূত-চতুর্দশীর পুণ্যতিথিতে তাঁদের প্রয়াত স্বজনদের সমাধিতে দীপ জ্বেলে, চণ্ডীপাঠ করে এবং তাদের পছন্দের খাবার প্রদর্শন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রয়াত স্বজনদের উদ্দেশে প্রার্থনার অনুষ্ঠান পরিণত হয় উৎসবে।
প্রতি বছর এ দিনটির অপেক্ষায় থাকেন প্রয়াতদের স্বজনরা। দেশ-বিদেশ থেকে হাজারও পুণ্যার্থী আসেন মহাশ্মশানে। সনাতনীদের ডায়েক্টরি পঞ্জিকা মতে আজ শুক্রবার বিকাল ৪ টা ৩১ মিনিট পর থেকে চতুর্দশী সময়ক্ষন শুরু হয় এবং এই তিথির পর থেকেই শুরু হয় দীপাবলির আনুষ্ঠানিকতা।
জানা গেছে, বরিশাল নগরীর কাউনিয়ায় প্রায় ছয় একর জমির উপর গড়ে ওঠা মহাশ্মশানে প্রায় ৬১ হাজার সমাধি রয়েছে। ভারত উপমহাদেশে এতবড় সমাধিস্থল আর নেই।
বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তমাল মালাকার বলেন, করোনার প্রকোপ ঠেকাতে এবার সংক্ষিপ্ত পরিসরে আয়োজন করা হয়েছে শ্মশান দীপাবলির। নির্মাণ করা হয়নি তোরণ। করা হয়নি আলোকসজ্জা। মেলাও আয়োজন করা হয়নি। এবার মাস্ক ব্যতীত কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি মহাশ্মশানে। জীবাণুনাশক দুটি টানেল বসানো হয়েছে শ্মশানের প্রবেশ গেটে। সামাজিক দূরত্ব রাখার জন্য সার্বক্ষণিক করা হচ্ছে মাইকিং। নিরাপত্তার জন্য স্থাপন করা হয়েছে ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা।’
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মো. খাইরুল আলম বলেন,’ সংক্ষিপ্ত পরিসরে হলেও দীপাবলি উৎসব নির্বিঘ্ন এবং শান্তিপূর্ণ করতে সব বাহিনীর সমন্বয়ে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকধারী পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা এবং যারা উৎসবকালীন সার্বক্ষণিক মহাশ্মশানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে। ‘
Leave a Reply