ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় গ্রেফতার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাওন
কাকন সরকার , শেরপুর প্রতিনিধি:
শেরপুরের ঝিনাইগাতিতে এক আদিবাসী (গারো) কলেজ পড়ুয়া তরুণীকে ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার খান শাওন (৩০)-কে গ্রেপ্তার করেছে ঝিনাইগাতী থানা পুলিশ। ভিকটিম (১৯) উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের বড়গজনী গ্রামের বজেন খুবির মেয়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার ২৪ এপ্রিল বিকেলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনাটি ঘটেছে ঈদের দিন শনিবার রাতে ভিকটিমের বসত বাড়ির পাশে। ভিকটিম শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। ভিকটিম ওই ছাত্রী জানায়, ঈদের দিন শনিবার রাতে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শাহরিয়ার খান শাওন তাদের বাড়িতে এসে তার মায়ের কাছে পান খেতে চায়। এরপর সে তার বাবা মায়ের সাথে ঘরে বসে কথা বলে। ভিকটিম তখন বাড়ির উঠানে বসে ফেসবুক চালাচ্ছিল। এসময় শাউন ঘর থেকে বের হয়ে উঠানে এসে ভিকটিমকে জোর করে টেনে হীচড়ে বাড়ীর উত্তর পাশে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যায়। এরপর তাকে জাপটে ধরে ধ্বস্তাধস্তি শুরু করে এবং মুখ চেপে ধরে পরনের কাপড় খুলে ফেলতে চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে ভিকটিমের ডাকচিৎকারে তার বাবা-মা ঘর থেকে বের হয়ে ওই ছাত্রলীগ নেতার কবল থেকে মেয়েকে উদ্ধার করেন।
ওই কলেজ ছাত্রী আরও জানায়, ঘটনার পর থেকেই তাকে ও তার পরিবারকে ঘটনা জানাজানি না করতে অব্যাহতভাবে হুমকি দিতে থাকে শাওন ও তার পরিবারের লোকজন। পরে সে নিজে এবং তার পরিবারের পক্ষ থেকে উপজেলা ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান নবেশ খকশিকে ঘটনা জানানো হয়।
এদিকে নিরাপত্তার অভাবে ভিকটিম ওই কলেজ ছাত্রী রবিবারই ঝিনাইগাতী উপজেলা ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও আদিবাসী নেত্রী, উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, ময়মনসিংহ বিভাগীয় এসডিজির সদস্য, অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক মিস রবেতা ম্রং এর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এদিকে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল ঘটনা ধামাচাপা দিতে নানাভাবে পাঁয়তারা শুরু করে এবং ওই কলেজ ছাত্রী ও তার পরিবারকে ঘটনা আপোষ মিমাংসার জন্য চাপ দিতে থাকে বলে জানান তারা। ভিকটিমের পরিবার তাদের নিরাপত্তা দিয়ে চিন্তিত বলে জানান। ওই কলেজ ছাত্রী এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
শেষ পর্যন্ত ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে ঝিনাইগাতী থানায় সোমবার ২৪ এপ্রিল লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ পেয়ে ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়ার নেতৃত্বে সঙ্গীয় অফিসারসহ পুলিশের একটি টিম সোমবার বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান নবেস খকসী বলেন, "ভিকটিম ও তার পরিবারের কাছে তিনি ঘটনা শুনেছেন। ভিকটিম অভিযোগ করায় পুলিশ শাওনকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।"
আদিবাসী নেত্রী মিস রবেতা ম্রং বলেন, "ঘটনার পর নানামুখী চাপে ভিকটিম আমার কাছে এসে আশ্রয় চায়। আমি বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় মহলের সাথে যোগাযোগ করি। শেরপুরের পুলিশ সুপার মহোদয়কে ঘটনার বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি আস্বস্ত করেছেন ঘটনার বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিবেন বলে। থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মেয়েটি সাহসি বলে আজ বেঁচে গেছে এবং প্রতিবাদ করতে পেরেছে। টাকা গেলে টাকা আসে কিন্তু সম্মান গেলে তা আর ফিরে আসেনা। মেয়েটি সবেমাত্র প্রস্ফুটিত হচ্ছে। এমন ঘটনা যেন কারো জীবনে না ঘটে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।"
ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম বলেন, "বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন সংগঠন। এই ধরনের কর্মকান্ড দলের জন্য এবং সমাজের জন্য কলঙ্কের। আমরা কোন অনিয়মকে প্রশ্রয় দেইনা। ঘটনা তদন্তপূর্বক বিচার হওয়া দরকার।"
এ বিষয়ে শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাইদুর রহমান বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ধারা ৯(৪) এর(খ) ধারায় শাওনের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি। বর্তমানে সে পুলিশের হেফাজতে আছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা চলমান আছে।
ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় গ্রেফতার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাওন
কাকন সরকার , শেরপুর প্রতিনিধি:
শেরপুরের ঝিনাইগাতিতে এক আদিবাসী (গারো) কলেজ পড়ুয়া তরুণীকে ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার খান শাওন (৩০)-কে গ্রেপ্তার করেছে ঝিনাইগাতী থানা পুলিশ। ভিকটিম (১৯) উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের বড়গজনী গ্রামের বজেন খুবির মেয়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার ২৪ এপ্রিল বিকেলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনাটি ঘটেছে ঈদের দিন শনিবার রাতে ভিকটিমের বসত বাড়ির পাশে। ভিকটিম শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। ভিকটিম ওই ছাত্রী জানায়, ঈদের দিন শনিবার রাতে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শাহরিয়ার খান শাওন তাদের বাড়িতে এসে তার মায়ের কাছে পান খেতে চায়। এরপর সে তার বাবা মায়ের সাথে ঘরে বসে কথা বলে। ভিকটিম তখন বাড়ির উঠানে বসে ফেসবুক চালাচ্ছিল। এসময় শাউন ঘর থেকে বের হয়ে উঠানে এসে ভিকটিমকে জোর করে টেনে হীচড়ে বাড়ীর উত্তর পাশে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যায়। এরপর তাকে জাপটে ধরে ধ্বস্তাধস্তি শুরু করে এবং মুখ চেপে ধরে পরনের কাপড় খুলে ফেলতে চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে ভিকটিমের ডাকচিৎকারে তার বাবা-মা ঘর থেকে বের হয়ে ওই ছাত্রলীগ নেতার কবল থেকে মেয়েকে উদ্ধার করেন।
ওই কলেজ ছাত্রী আরও জানায়, ঘটনার পর থেকেই তাকে ও তার পরিবারকে ঘটনা জানাজানি না করতে অব্যাহতভাবে হুমকি দিতে থাকে শাওন ও তার পরিবারের লোকজন। পরে সে নিজে এবং তার পরিবারের পক্ষ থেকে উপজেলা ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান নবেশ খকশিকে ঘটনা জানানো হয়।
এদিকে নিরাপত্তার অভাবে ভিকটিম ওই কলেজ ছাত্রী রবিবারই ঝিনাইগাতী উপজেলা ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও আদিবাসী নেত্রী, উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, ময়মনসিংহ বিভাগীয় এসডিজির সদস্য, অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক মিস রবেতা ম্রং এর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এদিকে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল ঘটনা ধামাচাপা দিতে নানাভাবে পাঁয়তারা শুরু করে এবং ওই কলেজ ছাত্রী ও তার পরিবারকে ঘটনা আপোষ মিমাংসার জন্য চাপ দিতে থাকে বলে জানান তারা। ভিকটিমের পরিবার তাদের নিরাপত্তা দিয়ে চিন্তিত বলে জানান। ওই কলেজ ছাত্রী এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
শেষ পর্যন্ত ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে ঝিনাইগাতী থানায় সোমবার ২৪ এপ্রিল লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ পেয়ে ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়ার নেতৃত্বে সঙ্গীয় অফিসারসহ পুলিশের একটি টিম সোমবার বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান নবেস খকসী বলেন, "ভিকটিম ও তার পরিবারের কাছে তিনি ঘটনা শুনেছেন। ভিকটিম অভিযোগ করায় পুলিশ শাওনকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।"
আদিবাসী নেত্রী মিস রবেতা ম্রং বলেন, "ঘটনার পর নানামুখী চাপে ভিকটিম আমার কাছে এসে আশ্রয় চায়। আমি বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় মহলের সাথে যোগাযোগ করি। শেরপুরের পুলিশ সুপার মহোদয়কে ঘটনার বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি আস্বস্ত করেছেন ঘটনার বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিবেন বলে। থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মেয়েটি সাহসি বলে আজ বেঁচে গেছে এবং প্রতিবাদ করতে পেরেছে। টাকা গেলে টাকা আসে কিন্তু সম্মান গেলে তা আর ফিরে আসেনা। মেয়েটি সবেমাত্র প্রস্ফুটিত হচ্ছে। এমন ঘটনা যেন কারো জীবনে না ঘটে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।"
ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম বলেন, "বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন সংগঠন। এই ধরনের কর্মকান্ড দলের জন্য এবং সমাজের জন্য কলঙ্কের। আমরা কোন অনিয়মকে প্রশ্রয় দেইনা। ঘটনা তদন্তপূর্বক বিচার হওয়া দরকার।"
এ বিষয়ে শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাইদুর রহমান বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ধারা ৯(৪) এর(খ) ধারায় শাওনের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি। বর্তমানে সে পুলিশের হেফাজতে আছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা চলমান আছে।