ধলাই নদীর এক বালুতে দুই রয়েলিটি
কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি:- সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদীর এক বালু থেকে দুই রয়েলিটি আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বৎসর (১৪২৭ বাংলা সন) যে বালুতে রয়েলিটি দেয়া হয়েছে সেই বালুতে আবার এ বছর দিতে হচ্ছে রয়েলিটি। গত বছরের লিজকৃত অংশ এ বছর লিজ দেয়া না হলেও গত বছরের লিজকৃত জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করে স্টক রাখা বালু নিতে হলে দিতে হচ্ছে রয়েলিটি। ধলাই ব্রিজের পশ্চিম পাড়ে তাবু টানিয়ে আদায় করা হচ্ছে বালুর রয়েলিটি। খাতায় পত্রে ৩শ থেকে ৫শ টাকা লিখলেও বাস্তবে ৫ ফুটের প্রতি গাড়ি থেকে ৮শ থেকে ১২শ টাকা রয়েলিটি আদায় করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ প্রশাসককে জানিয়েও কোন সুরাহা হচ্ছে না। তবে প্রশাসন বলছে লিজের বাইরে থেকে কোন রয়েলিটি আদায় করা যাবে না, তা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
১৪২৭ বাংলা সনে কালা সাদেক-১ মৌজার নদীর অংশ লিজ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ বছর লিজ দেওয়া হয়েছে কালা সাদেক-২ ও তৈমুর নগর মৌজার নদীর অংশ। কালা সাদেক-২ মৌজা ধলাই ব্রিজের দক্ষিণ অংশ যা লিজ গ্রহীতাদেরকে চিহ্নিত করে দিয়েছেন উপজেলা সহকারী কমিশন (ভূমি)। বর্তমানে নদীতে পানি কম থাকায় লিজকৃত অংশ থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে না। এমতাবস্থায় গত বছরের লিজকৃত জায়গা থেকে রয়েলিটি দিয়ে বালু মজুত করে রাখা ধলাই ব্রিজের উত্তর পাশের বালু বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু বর্তমান লিজ গ্রহীতারা রয়েলিটির টাকা ছাড়া কোন গাড়ি যাতায়াত করতে দিচ্ছেন না। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ এক বালুতে দুই রয়েলিটি দিয়ে তাদের বালু বিক্রি করতে হচ্ছে। বর্তমান লিজের বাইরের এই বালু হলেও তাদের দিতে হচ্ছে রয়েলিটি।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন বলেন, আমি গত বছর রয়েলিটি দিয়ে বালু স্টক করেছিলাম। এ বছর বালু বিক্রি করতে হলে তাদের আবার রয়েলিটি দিতে হবে। রয়েলিটির টাকা না দিলে তারা গাড়ি যেতে দিবে না। এক বালুতে দুইবার রয়েলিটি দিয়ে আমি বালু বিক্রি করবো না। তাই এখন বালু বিক্রি বন্ধ রেখেছি। প্রশাসনকে জানিয়েও কোন সুরাহা হয়নি। আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি অবগত করেছিলাম, তিনি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন।
লিজ গ্রহীতা প্রদীপ বাবুর সাথে মুঠোফোনে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি জানান, আমরা লিজের বাইরের কোন বালুর গাড়ি থেকে রয়েলিটি আদায় করছি না। সরকারের নির্ধারিত রেট থেকেও আমরা কম নিচ্ছি। তিনি বলেন কালা সাদেক মৌজা ও তৈমুর নগর মৌজা আমরা লিজ নিয়েছি। লিজের কাগজে লেখা নেই যে ধলাই ব্রিজের নিচ বা উপর (দক্ষিণ বা উত্তর) থেকে বালু উত্তোলন করতে হবে। লিজকৃত মৌজায় যে অংশ পড়বে তা থেকে আমরা রয়েলিটি উত্তোলন করবো। তবে তাদের আরেক পার্টনার আলকাছ মিয়া বলেন, যেহেতু ধলাই নদীতে আমাদের লিজ ব্যতীত আর কোন লিজ নাই তাই নদীর যে কোন অংশ থেকে কেউ বালু উত্তোলন করলে আমাদের রয়েলিটি দিয়ে হবে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ এরশাদ মিয়া বলেন, ধলাই ব্রিজের ৫শত গজ দক্ষিণ থেকে এবছর লিজ দেওয়া হয়েছে। এর বাহির থেকে কেউ রয়েলিটি আদায় করতে পারবে না। স্টক করা বালু থেকে রয়েলিটি আদায় করা হচ্ছে এমন অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিনে সেখানে গিয়ে আমি লিজ গ্রহীতাদের সাথে কথা বলেছি। তারা বলেছে স্টকের বালু থেকে রয়েলিটি আদায় করা হবে না।
এ বিষয়ে কথা বলতে সিলেটের জেলা প্রশাসকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল ও এসএমএস দিয়ে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া মিলেনি।