আশরাফুল ইসলাম সবুজ
জেলা প্রতিনিধি,নরসিংদী :
নরসিংদীর রায়পুরায় সুমাইয়া (১১) নামে এক স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। আজ সোমবার সকাল ৮টায় উপজেলার চরসুুবুদ্ধি ইউনিয়নের বাটখোলা গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত সুমাইয়া ওই এলাকার মৃত আব্দুর রহমানের মেয়ে ও চরসুবুদ্ধি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্রী।
পারিবারিক ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সুমাইয়ার বাবার মৃত্যুর পর তার মা খুকি বেগম ঢাকায় বাসাবাড়িতে কাজ নেন। ছয় বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট সুমাইয়া। বড় বোনদের বিয়ে হয়ে গেছে। কাজের সুবাধে সুমাইয়ার মা থাকেন ঢাকায়। পরে দরিদ্র ঘরের মেয়েটির ঠাঁই হয় স্থানীয় একটি এতিমখানা আবাসিক হলে। সেখানে থেকে স্থানীয় একটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষা দেন সুমাইয়া।
তিন দিন আগে এতিমখানা থেকে ছুটি নিয়ে প্রবাসী চাচাতো ভাই আনোয়ারের বাড়িতে আসেন সুমাইয়া। গতকাল তার ভাবি বাবার বাড়ি চলে গেলে রাতে দুই বান্ধবীকে নিয়ে চাচাতো ভাইয়ের ঘরে ঘুমান তাঁরা। আজ সকালে তিন বান্ধবী এক সাথে কিছুক্ষণ খেলাও করেন। পরে হঠাৎ খেলা রেখে ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন সুমাইয়া। বাহির থেকে অনেক ডাকাডাকি করেও তার কোন সাড়া শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে তার দুই বান্ধবী ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলে দেখতে পান সুমাইয়ার ঝুলন্ত লাশ।
সুমাইয়ার দুই বান্ধবী তামান্না ও তাসলিমা বলে, রাতে আমরা তিনজন এক সাথে ছিলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে খেলাও করেছি। ওই সময় সুমাইয়া হঠাৎ খেলা থেকে চলে আসে এবং ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে দরজায় জোরে ধাক্কা দিয়ে ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখি সুমাইয়ার ঝুলন্ত লাশ। পরে বাড়ির আশপাশের লোকজনকে খবর দিলে তারা এসে লাশটি নিচে নামায়। তবে সুমাইয়ার মৃত্যুর কারণ জানাতে পারেনি তামান্না ও তাসলিমা।
এদিকে মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ শুনে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে বিলাপ করতে করতে বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন মা খুকি বেগম। তিনি জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর বাসাবাড়িতে কাজ করে ছেলে-মেয়েদের বড় করেছেন। মেয়ের এমন মৃত্যু কিছুতেই মানতে পারছেন বলে জানান তিনি।
রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক কবির হোসেন জানান, লাশের সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট আসার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।