নরসিংদীতে যুবদল নেতা শানু জেল হাজতে, এলাকাবাসী মিশ্র প্রতিক্রিয়া ঃ
সোফায় বসে বন্ধুপত্নীর সাথে কথা বলছি, এমন সময় ‘মাগো বাড়ীর আছো নাকি। আমগো শানু বাবার কি খবর। কুনদিন বাইর অইব কিছু জানন গেছেকি?’ চিন্তা কইরনা মা আল্লাহ মানুষকে বিপদে ফালায় পরিক্ষা করনের লাইগ্যা। তবে তিনি তার প্রিয় বান্দারে বেশিদিন বিপদে রাখে না।’ ষাটোর্ধ্ব নেহায়েত গরীব শ্রেণির এক মহিলা (দেখলেই বুঝা যায়) দরজার সামনে থেকে অনর্গল কথা গুল বলে গেলেন।
কথা হচ্ছিল নরসিংদী জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি শাহেন শাহ মোহাম্মদ শানু। যিনি বর্তমানে সরকারী দলের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে হেফাজতে ইসলামীর বিরুদ্ধে করা মামলায় প্রায় ৪ মাস যাবৎ জেল হাজতে আছে।
দিনটি শুক্রবার সাপ্তহিক ছুটির দিন শানু আমার বাল্যবন্ধু হওয়ার সুবাদে জুম্মার নামাজের পর খোঁজখবর নিতে তার বাসা গিয়ে তা্রই স্ত্রী সাহেদা শানুর সাথে কথা বলার সময় ওই বৃদ্ধা মহিলার অনুপ্রবেশ।
এসময় আমি আর চুপ থাকতে পারলাম ওই বৃদ্ধার দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিলাম ‘কিগো খালা কারে আল্লাহর প্রিয় বান্দা কইলা।’
বৃদ্ধা মহিলা জিজ্ঞাসু দৃষ্টি নিয়ে উত্তরে বলনেন, ‘কেন আমাগো শানু বাবার কথা কইছি। যার দয়ার শরীর। এই বাড়ীতে আইস্যা কেউ কোনদিন খালি হাতে ফিরা যায়নাই। এইডা কে আমাগো এই এলাকার কেউ কইতে পারতনা যে তাগো বিপদের সময় শানু ছুইট্টা যায় নাই।যে মানুষটা রাইত নাই দিন নাই গরীব ও অসহায় মাইস্যের বিপদে আগাইয়া যায় সে আল্লাহর প্রিয় বান্দা না হইয়্যা পারেই না। বলে অঝড়ে কাদতে লাগল ওই বৃদ্ধা মহিলা।’
অত্যন্ত উদার মানসিকতা সম্পন্ন জেলার তরুন এই যুবদল নেতা যাকে বিএনপি’র আন্দোলনের ক্ষুরদার বলে নেতাকর্মীদের কাছে পরিচিত। শুধু ওই বৃদ্ধা মহিলাই নয় শানুর জন্য আজ কাদছে পুরো এলাকাবাসী। দু’হাত তুলে আল্লাহর দরবারে তার জন্য দোয়া করছেন।অবশ্য দোয়া তার প্রাপ্য। প্রতিটি ঈদ বা অন্যান্য উৎসবে এলাকার প্রতিটি দরিদ্র পরিবারগুলোর ঘরে ঘরে গিয়ে নিজের সামর্থ অনুযায়ী নগদ অর্থসহ খাদ্যসামগ্রী দিয়ে আসতেন।তাছাড়া যে কোন মানুষের বিপদের খবরে নিজ উদ্যোগে ছুটে যেতেন তিনি বাড়িয়ে দিতেন তার সাহায্যের হাত।মানুষকে কাছে টানার অসম্ভব একটা শক্তি ছিল তার যার ফলে তার সাথে পরিচিত হওয়ার পর প্রিয় একজন হয়ে উঠেন।
হঠাৎ আমার সম্বিত ফিরলে দেখি বন্ধুপত্নী সাহেদা শানু ওই মহিলাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে খাবার টেবিলে বসিয়ে নিজ হাতে খাবার পরিবেশন করলে। বৃদ্ধা মহিলায় পরম তৃপ্তিতে দুপুরের খাবার খেলেন।
আমার সেই ছোট বেলা থেকে তাদের বাড়ীতে আসা যাওয়া। কোনদিন তাদের বাড়ীতে ধনী-গরীবের ভেদাভেদ দেখিনি। বাড়ীর কর্তা ব্যক্তি থেকে শুরু করে ছোট শিশুটি মাঝে এই বিষয়টি বিারজমান।তাই এই পরিবারে লোকদেরকে এলাকার সবাই সমীহ করে।
শানুর বাসা থেকে বের হয়ে ওই নরসিংদী শহরের সাটিরপাড়া এলাকার পরিচিত যত জনের সাথে দেখা হয়েছে সবাই তার জন্য আপসোষ করেছে। অনেকে জানায় শানু গ্রেফতার হবার পর এলাকার প্রায় প্রতিটি মসজিদে প্রতি জুম্মায় তার মুক্তি কামনা করে দোয়া করা হয়।
এসময় অনেকে বলেন মিথ্যা হয়রানী মূলক মামলায় আজ শানু জেল খাটছে।এমন একজন সমাজ দরদী মানুষ অন্যায়ভাবে জেল খাটায় সবাই মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তারা অনতি বিলম্বে শানু’র মুতি দাবী করেন।