1. [email protected] : দৈনিক বিজয়ের বানী : দৈনিক বিজয়ের বানী
  2. [email protected] : Hasan :
  3. [email protected] : dev : dev
নাটোরে গরম ভাতে শিশুকে ফেলে চারদিন তালাবদ্ধ রাখলো মাদ্রাসা শিক্ষকরা - dainikbijoyerbani.com
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৮ পূর্বাহ্ন
ad

নাটোরে গরম ভাতে শিশুকে ফেলে চারদিন তালাবদ্ধ রাখলো মাদ্রাসা শিক্ষকরা

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ১ অক্টোবর, ২০২১
  • ৫০ Time View

সাজিদুল করিম,নাটোর জেলা প্রতিনিধিঃ

হাত থেকে ভাত ভর্তি পাতিল পড়ে যাওয়ায় নাটোরে ইয়াসমিন খাতুন(১১) নামের এক মাদ্রাসার শিশু শিক্ষার্থীকে শারীরিক নির্যাতনের পর পড়ে যাওয়া গরম ভাতে ফেলে দিয়েছেন মাদ্রাসার দুই শিক্ষক। ঘটনার পর চিকিৎসার ব্যবস্থা তো দূরের কথা, চার দিন ওই শিশুকে মাদ্রাসার একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। অসহ্য যন্ত্রণায় শিশুটি মাদ্রাসার ভেতর চিৎকার করতে থাকলে বাইরে থেকে টের পায় আশেপাশের মানুষ। পরে পরিবারের লোকজন ঘটনাটি জানতে পেরে শিশু ইয়াসমিনকে উদ্ধার করে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

বৃহস্পতিবার(৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে অভিযুক্ত মাদ্রাসার তিন শিক্ষক সোহরাব হোসেন(২৭), সালমা বেগম (২৫) ও বাবুল হোসেনের (৬০) বিরুদ্ধে নাটোর সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন শিশুটির পিতা ইমরান আলী।

জানা যায়, গত তিন বছর ধরে ওই মাদ্রাসায় স্থানীয় দিনমজুর ইমরান হোসেনের মেয়ে ইয়াসমিন পড়াশোনা করে আসছিলো। মাদ্রাসার ভেতরে ওই তিন শিক্ষক বসবাস করেন এবং সেখানে আবাসিকভাবে কয়েকজন শিশুও থাকে। ঠিকমতো পাঠদান না করালেও শিশুদের দ্বারা রান্নাবান্না থেকে শুরু করে গৃহস্থালির সমস্ত কাজ করানো হতো।

কাজে ত্রুটি থাকলে শিশুদের শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হতো। গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে তিন শিক্ষক নিজেদের জন্য শিশু ইয়াসমিনকে ভাত রান্না করতে বলেন। ভাত রান্না করে ঘরে নেবার সময় অসাবধানবশত ইয়াসমিনের হাত থেকে ভাতের পাতিল পড়ে যায়। এই ক্ষোভে শিক্ষক সোহরাব হোসেন ও সালমা বেগম ইয়াসমিনের চুলের মুঠি ধরে বেদম প্রহার করে এবং তাকে ধাক্কা দিয়ে মেঝেতে পড়ে থাকা গরম ভাতের উপর ফেলে দেয়। এতে সাথে সাথেই ইয়াসমিনের পিঠ ও দুই পায়ের হাটু ঝলসে যায়।

এসময় চিকিৎসার পরিবর্তে ইয়াসমিনকে একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। চারদিন তালাবদ্ধ থাকা অবস্থায় অসহ্য যন্ত্রণায় চিৎকার করলে স্থানীয় বিষয়টি টের পায় ও ইয়াসমিনের পরিবারকে খবর দেয়। খবর পেয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর ইয়াসমিনকে মাদ্রাসা থেকে উদ্ধার করে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

ইয়াসমিনের বাবা ইমরান বলেন, আমার এগারো বছরের শিশুটিকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে আটকে রাখা হয়। তাকে ঠিকমতো খেতেও দেয়া হয়নি। আমি নির্যাতনকারী শিক্ষকদের গ্রেপ্তার ও কঠিন শাস্তি চাই।

নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মুঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, শিশুটিকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। তার শরীরের ঝলসে যাওয়া স্থানে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনার পরপরই চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলে ভালো হতো। তাকে নিবিড় তত্বাবধানে হাসপাতালে রাখা হয়েছে।

নাটোর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মুনসুর রহমান জানান, ঘটনাটি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। থানায় অভিযোগ দায়েরের পরপরই মাদ্রাসায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে। শিশু নির্যাতনকারীদের কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।

স্থানীয় বাসিন্দা করিম ব্যাপারী ও উজ্জ্বল গাজীসহ কয়েকজন জানান, কয়েক বছর আগে বিভিন্ন ব্যক্তির থেকে অনুদান নিয়ে ওই এলাকায় অভিযুক্ত তিন শিক্ষক জামিয়া তালিমুননেছা হাফিজিয়া মহিলা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। তারা যতটা না পাঠদান করেন তারচেয়ে বেশি কাজ করান শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে। তাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ থাকলেও তারা তা তোয়াক্কা করেন না।

ad

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
ad
ad
© All rights reserved 2022
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: সীমান্ত আইটি