চুনারুঘাটে সীমান্ত অরক্ষিত, ভারতীয় করোনার শঙ্কা
বিজিবি’র কঠিন নজরদারী।
সিলেট ব্যুরো:
হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার বাল্লা, কালেঙ্গা, রেমা, গুইবিল ও চিমটিবিল সীমান্তের ৪টি গোপন পথ অনেকটা অরক্ষিত। যেকোনো মুহূর্তে চোরাচালানিরা ভারত থেকে বয়ে আনতে পারে মহামারি করোনাভাইরাস। যাতে চুনারুঘাট উপজেলাসহ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে ভারতের অদমনীয় করোনাভাইরাস।
ভারতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার পর সরকার সীমান্ত পথ ১৪দিনের জন্য বন্ধ করে দেয়ার পরও চুনারুঘাটের সীমান্ত অঞ্চলে সীমান্ত রক্ষী বিজিবি’র নজরদারী তেমন একটা চোখে পড়ছে না।
তবে বিজিবি’র দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, করোনা পরিস্থিতিতে সীমান্তে তাদের কড়া নজরদারী রয়েছে।
জানা গেছে, বাল্লা সীমান্তের রেমা, কালেঙ্গা, গুইবিল এবং সাতছড়ি সীমান্তের চিমটিবিল ও সাতছড়ি সীমান্তের পুরোটাই চা বাগান এবং পাহাড়ঘেরা। সীমান্ত অতিক্রম করে মানুষজন অনায়াসে ভারতের ত্রিপুরার সাথে চলাচল করতে পারে।
সাতছড়ি সীমান্তের ২০ নং, চিমটিবিল সীমান্তের টেংরাবাড়ি, গুইবিল সীমান্তের মজুমদারবাড়ি ও দুধপাতিল, বাল্লা সীমান্তের কলাবাগান ও কুলিবাড়ি, রেমা সীমান্তের বড়ই তলা এবং কালেঙ্গা সীমান্তের ডেবরাবাড়ি সীমান্ত দিয়ে অবাধে চোরাচালান পণ্য এপার-ওপার হয়। এর সাথে অবৈধপথে মানুষজনও পারাপার করা হয় অর্থের বিনিময়ে।
সীমান্ত সূত্র জানায়, বাল্লা সীমান্তে ১৯৬৫ নং পিলারে কাছে কলাবাগান দিয়ে মানুষ পারাপার করে ‘জ’ আদ্যাক্ষরযুক্ত এক ব্যক্তি।
এমনিভাবে চিমটিবিল সীমান্তের টেংরাবাড়ির দায়িত্বে আছে ‘শ’ আদ্যাক্ষর নামের এক প্রভাবশালি ব্যক্তি যিনি খুদ বিজিবির পোষাক পরেই এই অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।
অপরদিকে কেদারাকোর্ট এলাকায় ‘ক’, টিলাবাড়ি সীমান্তে ‘স’ এবং দুধপাতিল সীমান্তে ‘হ’ আদ্যাক্ষর নামের ব্যক্তিরা চোরাচালানি পণ্য পারাপারসহ মাদকদ্রব্য ও ভারতীয় গরু চোরাচালানি করছে। এদের সাথে বিজিবির অসাধু জোয়ানদের সখ্যতা থাকায় এরা বরাবরই থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
২০০৫ সালে ত্রিপুরা সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার কাজ সম্পন্ন করে ভারত কিন্তু পাহাড়ী ছড়া বা ছোট ছোট নদীর তলদেশ থেকে যায় বেড়ার বাইরে। আর এ সুযোগটাই কাজে লাগায় চোরাকারবারীরা।
স্থানীয়রা বলছেন, সীমান্তের গোপন পথ দিয়ে হরহামেশাই লোকজন এপার-ওপার হয়।
এ ব্যাপারে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা সত্যজিৎ রায় দাশ এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় বিজিবি ৫৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সামিউন্নবী চৌধুরীর সাথে।
তিনি জানান- সাধারণত একটা বিওপির সাথে আরেকটা বিওপির দূরত্ব থাকে ৫ কিলোমিটার। কিন্তু ওই দুর্গম এলাকায় একেকটা বিওপির দূরত্ব অন্তত ১৫ কিলোমিটারের। সেক্ষেত্রে স্বাভাবিক দায়িত্ব পালনে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে, তবে কারো অবহেলা নেই।
তিনি বলেন- ভারতের ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতি ও বাংলাদেশ সরকারের নতুন নির্দেশনার আলোকে ওই সীমান্ত এলাকাগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এখানে বিজিবির অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। এসব সীমাবদ্ধতার মাঝেও বিজিবি তাদের সর্বোচ্চ দায়িত্ব পালন করছে।
তিনি, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে স্থানীয় জনসাধারণের প্রতি বিজিবিকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
Leave a Reply