নিউইয়র্কের পরবর্তী মেয়র কে হচ্ছেন- হাকিকুল ইসলাম খোকন ,যুক্তরাষ্ট্র সিনিয়র প্রতিনিধিঃআবারও যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের বাতাস বইছে। তবে পুরো দেশে নয়। এবার নির্বাচনের বাতাস পৃথিবীর রাজধানী বলে খ্যাত নিউইয়র্ক নগরীতে। যদিও নিউইয়র্ক নগরীতে সব দলের অংশগ্রহণে মূল মেয়র নির্বাচন নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু আগামী মাসে ডেমোক্রেটদের মধ্যে প্রাথমিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ডেমোক্রেট শাসিত এই নগরে আগামী মাসে ডেমোক্রেটদের মধ্যে প্রাথমিক নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী মেয়র পদ লাভ করবেন বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।
এই প্রাথমিক নির্বাচন বা নভেম্বরের নির্বাচনের ফলাফলের দিকে সবাই মুখিয়ে আছেন। কেননা, নিউইয়র্কের মেয়র শাসনকালে যে নীতি প্রণয়ন করেন, তা কেবল আমেরিকার বৃহত্তম এই শহরটিতেই নয়, বরং সারাদেশ এবং বিশ্বকেও প্রভাবিত করে। নিউইয়র্কের বর্তমান মেয়র ডেমোক্র্যাট বিল ডি ব্লাজিও, যিনি ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। ২০১৩ সালে নিউইয়র্কের মেয়র পদে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তার জনপ্রিয়তার রেটিং বেশ নেতিবাচক এবং কম ছিল। তার কার্যকালে তিনি একজন বিতর্কিত মেয়র। তাই এবার সবার জানার জন্য অপেক্ষা, কে হবেন তাদের পরবর্তী মেয়র, যিনি সবার জন্য কাজ করবেন।
তাহলে বর্তমান মেয়র ডেমোক্র্যাট বিল ডি ব্লাজিওর পদে কে এবার অভিষিক্ত হবেন? উল্লেখ্য যে নির্বাচনের শুরু থেকে ইতোমধ্যে ৪০ জন নিউইয়র্কবাসী এই পদে প্রচারণার জন্য কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। যদিও বর্তমানের মাত্র দশজনের মধ্যে বেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে। এর মধ্যে রয়েছেন প্রগতিশীল কর্মী ডায়ান মোরেলস, সাবেক ডি ব্লেজিওর আইনজীবী মায়া উইলি এবং নিউইয়র্ক সিটির কম্পট্রোলার স্কট স্ট্রিংগার। এর মধ্যে স্কট স্ট্রিংগারের সম্ভাবনা বেশ ভালো থাকলেও তিনি ইতোমধ্যে যৌন হেনস্থার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। যদিও তিনি এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।
তারপরে রয়েছেন স্যানিটেশন বিভাগের সাবেক কমিশনার ক্যাথরিন গার্সিয়া, যিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা নিয়ে কাজ করার আশ্বাস দিয়েছেন। এদিকে নির্বাচনের দৌড়ে বেশ এগিয়ে আছেন এরিক অ্যাডামস, যিনি সাবেক পুলিশ অফিসার এবং প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি, যিনি ব্রুকলিন বরো প্রেসিডেন্ট হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। পরিশেষে এই নির্বাচনের দৌড়ে সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন অ্যান্ড্রু ইয়াং, যিনি ডি ব্লাসিওর মতো ইউনিভার্সাল বেসিক আয়ের প্রস্তাব নিয়ে নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন। উল্লেখ্য যে ইয়াং নির্বাচনী সভায় নিউইয়র্ক শহরকে বিটকয়েন এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উচ্চাভিলাষ প্রকাশ করেছেন।
ইয়াং মেয়র নাও হতে পারেন, কেননা একটি নতুন নির্বাচনী জরিপে অ্যাডামস সামান্য এগিয়ে আছেন। অন্যদিকে স্ট্রিংগারের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্ত্বেও জরিপে তিনি তৃতীয় স্থান দখল করে আছেন। অন্যদিকে নিউইয়র্কে প্রথমবারের মতো র্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে ভোটদান বাস্তবায়ন শুরু হতে যাচ্ছে। শুধুমাত্র একজনকে ভোট না দিয়ে ভোটার পছন্দের অনুসারে প্রার্থীদের তালিকাভুক্ত করে ভোট দিতে পারবেন। কারও যদি তিনজন প্রার্থীকেই ভালো লাগে তাহলে তিনি তাদের মধ্যে যাকে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে তাকে এক নম্বরে, তারপর যাকে একটু কম ভালো লাগে তাকে দুই নম্বরে তালিকাভুক্ত করে ভোট দিতে পারবেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইয়াং যদি এই নির্বাচনে জয়লাভ করে তাহলে তা হবে দার উদ্যমী প্রচারণার কারণে। তবে অ্যাডামস এবং স্ট্রিংগারের মধ্যে মেয়র পদ লাভ করার সমান সম্ভাবনা রয়েছে।