নিউজ ডেস্ক
অভ্যন্তরীণ নৌ অধ্যাদেশের ৫৫ ধারা বলছে, ঝড়ের সংকেত থাকাবস্থায় নৌযাত্রা নিষিদ্ধ। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ধারার শর্ত ভঙ্গ হলে অভ্যন্তরীণ নৌযান মাস্টারের তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
অধ্যাদেশের ৭০ ধারায় অসদাচরণ ইত্যাদির কারণে জাহাজ বিপদাপন্ন করার শাস্তি বিষয়ে বর্ণনা রয়েছে। ধারাটির (২) অনুসারে যেখানে কোনো অভ্যন্তরীণ নৌযান দুর্ঘটনার ফলে প্রাণহানি বা কোনো ব্যক্তি আহত বা নৌযানের বা অন্য কোনো নৌযানের সম্পদ নষ্ট হয়ে থাকে এবং এ ধরনের কোনো নৌযানের ত্রুটি বা অভ্যন্তরীণ নৌযানের মালিক, মাস্টার বা কোনো কর্মকর্তা বা ক্রু সদস্যের অযোগ্যতা বা অসদাচরণ বা কোনো আইন ভঙ্গের দরুন ঘটে থাকে, তবে ওই নৌযানের মালিক বা অন্য কোনো কর্মকর্তা বা ক্রু সদস্য বা তাঁদের প্রত্যেকেই পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডেই দণ্ডিত হতে পারেন।
তবে নৌযানের ক্ষেত্রে নকশা, কাঠামো ও পরিচালনায় অনিয়ম এবং অবহেলা থাকার পর তা ডুবলে তাকে দুর্ঘটনা বলতে চান না বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নৌযান ও নৌযন্ত্র কৌশল বিভাগের অধ্যাপক খবিরুল হক চৌধুরী। তাঁর মতে, এসব ক্ষেত্রে আইন ও বিধি যথাযথ অনুসরণ এবং সতর্কতা সত্ত্বেও যদি ঘটনা ঘটে, তবে তা দুর্ঘটনা হতে পারে। তিনি বলেন, এমবি নাসরিন-১-এর নির্মাণে ত্রুটি ছিল। একে নৌ দুর্ঘটনা বলা যায় না। আইনে নৌ দুর্ঘটনা হিসেবে যে শাস্তির বিধান রয়েছে, তা অপর্যাপ্ত। অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট ধারাগুলোর সংশোধন প্রয়োজন।
যাত্রীবাহী নৌযানের ওপরের ডেকে মালামাল বহন না করার বিষয়ে ৫৮ ধারায় বলা হয়েছে। ধারাটি ভঙ্গ করলে নৌযানটির মালিক তিন হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং মাস্টার তিন মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড বা তিন হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডেই দণ্ডিত হবেন।
অতিরিক্ত যাত্রী বহনে শাস্তির বিধান রয়েছে ৬৭ ধারায়। এ ধারা অনুসারে কোনো অভ্যন্তরীণ নৌযান বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কোনো নৌযাত্রায় নির্ধারিত সংখ্যার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করলে মালিক বা তাঁর প্রতিনিধি বা মাস্টারকে (যাঁরা যাত্রার সময় মালামাল ওঠানো-নামানোর সময় উপস্থিত থাকবেন) প্রত্যেক যাত্রীর জন্য ৩০০ টাকা, তবে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে।
অধ্যাদেশের শাস্তিসংক্রান্ত কয়েকটি ধারা সংশোধন করা প্রয়োজন ,অধ্যাদেশে নৌযান দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে যে শাস্তির বিধান রয়েছে, তা অপর্যাপ্ত। এ ছাড়া পরিদর্শন ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য পরিদর্শকের সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন।
তবে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে আরও নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি, ফৌজদারি মামলা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে হয়। ক্ষতিপূরণের মামলায় এর দরকার পড়ে না। উদাহরণ যেকোনো দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে ১৮৮৫ সালের ফ্যাটাল অ্যাক্সিডেন্ট অ্যাক্টের আওতায় আর্থিক ক্ষতিপূরণ চেয়ে প্রতিকার চাইতে পারেন।
রাজধানীর মতিঝিল সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের কার্যালয় ভবনে ওই আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। একজন যুগ্ম জেলা জজ বিচারকাজ পরিচালনা করছেন।
অ্যাডভোকেট সঞ্জয় কুমার দে দুর্জয়
সাধারণ সম্পাদক
ভয়েস অব ল'ইয়ারস
কেন্দ্রীয় কমিটি
ও
যুগ্ম সম্পাদক
সাউথ এশিয়ান ল'ইয়ার্স ফোরাম
ইন্টারন্যাশনাল,চ্যাপ্টার
০১৭১৬২৪৩৩৬৭