মোঃ মিজানুর রহমান
মফস্বল সম্পাদক
ব্যাক্তিজীবনে বেপরোয়া জীবন-যাপনে অভ্যস্ত ছিলেন পরী। প্রমোদ ভ্রমণে প্রায়ই বিদেশ যেতেন তিনি। এসব প্রমোদ ভ্রমণে নায়িকার সফরসঙ্গী হতেন দেশের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা কিংবা ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতা। সর্বশেষ গত এপ্রিলে দেশের এক শীর্ষ ব্যবসায়ী ও একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দুবাই ট্যুরে যান পরী। সেখানে টানা সাত দিন ‘বুর্জ আল খলিফা’ টাওয়ারের হোটেল আরমানির ‘অ্যাম্বাসেডর স্যুটে’ অবস্থান করেন তারা। অভিজাত এই হোটেলের একেকটা স্যুটের জন্য প্রতিরাতের ভাড়া এক লাখ ৫৮ হাজার টাকা।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, যারা চিত্রনায়িকা পরী এবং মডেল মাহবুব ফারিয়া পিয়াসাকে নিয়ে বিভিন্ন সময় প্রমোদ ট্যুরে গিয়েছেন, তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১০ জনের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন গোয়েন্দারা। তাদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা।
জানা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পার্টির নামে সেক্স ও মাদকের আসর বসাতেন পরী সিন্ডিকেট। সেখানে টার্গেট করা ব্যক্তিদের সঙ্গে সুন্দরীদের একান্তে সময় কাটানোর ব্যবস্থা থাকতো। সেই মুহূর্তকে গোপন ক্যামেরায় ধারণ করে সেটিকে পুঁজি করে চলতো ব্ল্যাকমেইলিং। এসব বেশিরভাগ পার্টির আয়োজনের দায়িত্বে থাকতেন নজরুল ইসলাম রাজ এবং পরীর কথিত মামা দিপু। এছাড়াও বিভিন্ন প্রভাবশালীর সঙ্গে পরীর ট্যুরের আয়োজন করতেন নাট্যনির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী।
এদিকে গতকাল (৬ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, ‘পরীমণির মামলাটি আমরা তদন্ত করছি। পাশাপাশি আমরা তাকে আরও কয়েকটি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, পরীমণি অন্ধকার জগতে পা দিয়েছেন। এ পথে আসতে এক নারী তাকে সহযোগিতা করেছেন। সেই নারীকে আমরা খুঁজছি। তার বিষয়ে নজরদারিও করছি।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (৪ আগস্ট) দিনগত রাতে বনানীর বাসা থেকে পরীমণিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গত বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় বনানী থানায় তাকে হস্তান্তর করে র্যাব। এরপর র্যাব বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে। মামলায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ২০১৮-এর ৩৬ (১) এর সারণি ২৪ (খ)/৩৬(১) এর সারণি ২৯(ক)/৩৬ (১) এর সারণি ১০ (ক)/৪২(১)/৪১ ধারা দেয়া হয়। বর্তমানে ৪ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত এই নায়িকা। মামলার সাক্ষ্য প্রমাণে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড হতে পারে,একইসঙ্গে হতে পারে অর্থদণ্ডও।